রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার দ্বন্দ্ব চরমে

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:৩১ | আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:৩৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর থেকে। বহু দেশে ক্ষমতার পালাবদল হয়। যার ফলে বেশিরভাগ দেশ সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে।

 

সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ নিয়ে রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা সামরিক মিত্রদের বাদানুবাদ দিনকে দিন বিপজ্জনক মোড় নিচ্ছে। আর সেই বাদানুবাদের বিস্ফোরণ দেখা গেছে বৃহস্পতিবার সুইডেনে ইউরোপীয় নিরাপত্তা বিষয়ক এক বৈঠকে।

 

স্টকহোমের বৈঠকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাবরভ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের পাশে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে বলেছেন রাশিয়া তার ঘরের পাশে নেটো সামরিক জোটের নতুন কোনো তৎপরতা কোনোভাবেই সহ্য করবে না।

 

লাবরভ সতর্ক করেছেন, আমেরিকা এবং নেটো জোট রুশ এই বার্তা অগ্রাহ্য করলে ইউরোপে আবারো যুদ্ধ শুরু হতে পারে। তার মন্তব্য ছিল – ইউরোপকে আবারো "যুদ্ধের দুঃস্বপ্ন" দেখতে হতে পারে।

 

সুইডেনের বৈঠকে রাশিয়া ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে যার মূল কথা – নেটো জোটকে ইউরোপের পূর্বে নতুন কোনো বিস্তৃতির চেষ্টা বন্ধ করতে হবে।

 

ব্লিঙ্কেন রাশিয়ার সেই সেই প্রস্তাব বা দাবির ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি। বরং তিনি পাল্টা সতর্ক করেছেন ইউক্রেনে যে কোনো সামরিক অভিযান চালালে রাশিয়াকে তার "ভয়াবহ পরিণতি" ভোগ করতে হবে।

 

২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রাইমিয়া দখল এবং ইউক্রেনের জাতিগত রুশ অধ্যুষিত ডনবাস অঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে গত সাত বছর ধরে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা নেটো জোটের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন এই টানাপড়েন দিনকে দিন বিপজ্জনক চেহারা নিচ্ছে।

 

সুইডেনে বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি হয়েছে ইউক্রেন সীমান্তে ৯০ হাজারেরও বেশি রুশ সৈন্য সমাবেশ নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে। জানা গেছে, বৈঠকটি বহু-দেশীয় হলেও আলাদাভাবে মুখোমুখি কথা বলেছে মি. লাবরভ এবং মি. ব্লিঙ্কেন।

 

মার্কিন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের পরে জানিয়েছেন, দু পক্ষই ইউক্রেন নিয়ে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে একমত হয়েছে। এমনকি অদূর ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়েও কথা হয়েছে। তবে কবে তা হতে পারে তা নিয়ে কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি।

 

রাশিয়া গত বছরগুলোতে বিভিন্নভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে ইউক্রেনে আমেরিকা বা নেটো জোটের কোনো সামরিক উপস্থিতি তারা মানবে না। সপ্তাহখানেক আগে প্রেসিডেন্ট পুতিন আবারো বলেছেন আমেরিকাকে এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে হবে।

 

আর বৃহস্পতিবার স্টকহোমে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাবরভ খোলাখুলি বলেন ইউক্রেন দিয়ে বিপজ্জনক কোনো পরিস্থিতি এড়ানোর কোনো সদিচ্ছা নেটো দেখাচ্ছে না।

 

পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, ইউক্রেন সীমান্তে ট্যাংক আর সৈন্য পাঠিয়ে মস্কো আমেরিকাকে আরেকবার আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে চাইছে। পুতিন ও  বাইডেনের সাথে আরেকটি টি শীর্ষ বৈঠক চাইছে তারা।

 

(ঢাকাটাইমস/৪ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)