অর্থপাচারে দুদকের তালিকায় কাদের নাম?
প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ২৩:০৪
অর্থপাচার ও বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে হাইকোর্টে জমা দেওয়ার জন্য একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। সেই তালিকায় ২৯ ব্যক্তি ও ১৪ প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। তালিকাটি আগামীকাল রবিবার উচ্চ আদালতে জমা দেবে দুদক।
দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা সব প্রস্তুত করে রেখেছি। আগামীকাল কোর্ট খুললে সংশ্লিষ্ট শাখায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তালিকা জমা দেব।’
দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের নাম সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়ে মূলত যাদের বিরুদ্ধে দুদক এখন তদন্ত করছে, সেই তথ্য তুলে ধরা হবে।’
জানা গেছে, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই তালিকা দাখিল করা হবে।
তালিকায় যাদের নাম
তালিকায় কোন কোন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে দুদক এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। তবে বিভিন্ন সূত্র গণমাধ্যমকে এ ব্যাপারে তথ্য দিয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, তালিকায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: মাল্টিমোড লিমিটেডের আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার স্ত্রী নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, তাদের সন্তান তাবিথ আউয়াল, তাফসির আউয়াল ও তাজওয়ার মো. আউয়াল। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোগল ফরিদা ওয়াই, টেপাসের শহিদ উল্লাহ, ঢাকার বনানীর চৌধুরী ফয়সাল, বারিধারার আহমাদ সামির, ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড, ভেনাস ওভারসিজ কোং-য়ের মুসা বিন শমসের, ডাইনামিক এনার্জির ফজলে এলাহী।
ইন্ট্রিপিড গ্রুপের কেএইচ আসাদুল ইসলাম, খালেদা শিপিং কোম্পানির জুলফিকার আহমেদ, বেঙ্গল শিপিং লাইনসের তাজুল সলাম তাজুল, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের মোহাম্মদ মালেক, ওসান আইস শিপিং কোম্পানির ইমরান রহমান, শামস শিপিং লিমিটিডের মোহাম্মদ এ আউয়াল, ঢাকার উত্তরার এরিক জনসন আনড্রেস উইলসন, ইন্ট্রিডিপ গ্রুপের ফারহান ইয়াকুবুর রহমান, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের তাজুল ইসলাম, পদ্মা টেক্সটাইলের আমানুল্লাহ চাগলা, রাশিয়ার নিউটেকনোলজি ইনভেস্টমেন্টের মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান।
মাল্টার মোহাম্মদ রেজাউল হক, নারায়ণগঞ্জের জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ কামাল ভূঁইয়া, তুহিন-সুমন, সেলকন শিপিং কোম্পানির মাহতাবা রহমান, নারায়ণগঞ্জের জেমিকো ট্রেড ইন্টান্যাশনালের ফারুক পালওয়ান, আয়ারল্যান্ডের গ্লোবাল এডুকেশন সিস্টেমের মাহমুদ হোসাইন ও ঢাকা ইপিজেডের সাউদার্ন আইস শিপিং কোম্পানির শাহনাজ হুদা রাজ্জাক।
বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হওয়ার অভিযোগ অনেক পুরনো। আমদানি-রপ্তানিতে আন্ডার ভয়েস এবং ওভার ভয়েস, হুন্ডিসহ নানান পদ্ধতিতে প্রতি বছর দেশ থেকে এসব টাকা বিদেশে পাচার হয়।
গত ২৭ নভেম্বর সংসদে প্রশ্নের মুখে পড়েন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমি অর্থ পাচার করি না। আমি বিশ্বাস করি আপনারাও করেন না। আপনারা যদি একটি তালিকা না দেন তাহলে আমি কী করে জানব কারা অর্থ পাচার করছেন!’
অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের এক সপ্তাহ না পেরুতেই দুদকের তালিকা প্রস্তুতের খবর জানা গেল।
(ঢাকাটাইমস/০৪ডিসেম্বর/জেবি)