ধানের উৎপাদন ও দামে খুশি রাণীনগরের কৃষক

সুকুমল কুমার প্রামানিক, রাণীনগর (নওগাঁ)
 | প্রকাশিত : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৫৭

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় পুরোদমে শুরু হয়েছে চলতি আমন ধান কাটা-মাড়াই। এই আবাদে ধানের ভাল ফলন ও দাম পাওয়ায় গৃহস্থদের মতো অধিক লাভবান না হলেও বর্গাচাষিরা রেহায় পাচ্ছেন লোকসান থেকে। কৃষি কর্মকর্তারা দাবি করে বলছেন, গত ৫০ বছরের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ ফলন ও দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। ফলে কৃষকরা এবার লাভের মুখ দেখছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলাজুড়ে প্রায় ১৮ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যে স্বর্ণা-৫, বিআর ৪৯, বিনা-১৭, বিআর-৫১, বিআর-৮৮, বিআর-৭১, বিআর-৭৫ সহ আগাম ও মোটা জাতের ধান চাষ করা হয়েছে ৭ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে। এছাড়া ১১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে চিনি-আতপ ও চিকন জাতের ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যেই চিনি আতপ ধান কাটা-মাড়াই শুরু না হলেও মোটা জাতের ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে।

কৃষকরা বলছেন, ধান রোপনের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের গাছ খুব ভাল হয়েছিল। এ মৌসুমে হাল চাষ থেকে শুরু করে রোপণ, আগাছানাশক, সার, পানি সেচসহ কাটা মাড়াই পর্যন্ত বিঘা প্রতি প্রায় ১০/১১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

বর্গাচাষিদের মতে, গৃহস্থদের বিঘাপ্রতি ১০/১১ হাজার টাকা খরচ হলেও বর্গাচাষিদের বার্ষিক জমি ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত ৬/৭ হাজার টাকাসহ প্রায় ১৭/১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ জাতের ধান ১৮ থেকে ২৪ মণ পর্যন্ত ফলন হচ্ছে। এই জাতের ধান সোমবার উপজেলার ধানের মোকাম খ্যাত আবাদপুকুর বাজারে প্রতিমণ সর্বোচ্চ ১০২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিআর-৪৯ জাতের ধান বিঘা প্রতি ১৬-২০ মণ পর্যন্ত ফলন হচ্ছে। রকম ভেদে সর্বোচ্চ ১১৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ফলে গৃহস্থরা অধিক পরিমাণে লাভবান হলেও বর্গাচাষিরা তেমন লাভ করতে না পারলেও লোকসান থেকে রেহায় পাচ্ছেন। আবার অনেকেই ৩/৪ হাজার টাকা লাভ করছেন।

উপজেলার ভেটি গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন, নারায়ণপাড়ার বছির আলী মিঠু, জলকৈ গ্রামের পলান চন্দ্রসহ অনেক কৃষকরা জানান, দীর্ঘ বছর পর এবার যেমন ধানের ফলন বেশি হচ্ছে, তেমনি কাটা-মাড়াইয়ের শুরুতেই আশানুরূপ ধানের ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে ধানের ভাল ফলন হলেও দাম পাওয়া যায়নি, আবার দাম ভাল থাকলেও ফলন পাওয়া যায়নি। ফলে আমন আবাদ করে বিশেষ করে বর্গাচাষিদের বিঘা প্রতি ৩/৪ হাজার টাকা করে লোকসান হয়েছে। কিন্তু এবার ফলন এবং ভাল দাম পাওয়ায় বর্গাচাষিরাও লাভবান হচ্ছেন।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের তুলনায় এবার ধানের রোগ বালাই কম থাকায় এবং আবহাওয়াজনিত কারণে এবং নুতুন নতুন ধানের জাতের ফলে ফলন খুব বেশি হয়েছে।

তিনি দাবি করে বলেন, গত ৫০ বছরের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে। পাশাপাশি কাটা-মাড়াইয়ের শুরুতেই বাজারে আশানুরূপ দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

(ঢাকাটাইমস/৫ডিসেম্বর/এলএ/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :