কনডেম সেলের বন্দীদের তথ্য না পেয়ে হাইকোর্টের অসন্তোষ

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৫৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চার বার সময় দেওয়ার পরেও দেশের কারাগারগুলোতে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কনডেম সেলে থাকা সব বন্দীর তথ্য দাখিল না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি আদালতের মনোভাবের বিষয়টি জানাতে আজ রবিবার দুপুর ২টায় অ্যাটর্নি জেনারেলকে আসতে বলেছেন উচ্চ আদালত।

রবিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আজ শুনানির শুরুতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার কনডেম সেলের আসামিদের তথ্যসংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে আবারও সময় চান। এমন সময় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর দেশের কারাগারগুলোতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কনডেম সেলে থাকা সব বন্দীর তথ্য চান হাইকোর্ট। গত ৩১ অক্টোবরের মধ্যে কারা কর্তৃপক্ষকে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে এই তথ্য আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। এরপর প্রতিবেদন দাখিলে রাষ্ট্রপক্ষ আরও চার বার সময় নেয়। তারপরও প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি।

গত ৩ সেপ্টেম্বর মামলা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট দায়ের করা হয়। চট্টগ্রাম কারাগারের কনডেম সেলে থাকা জিল্লুর রহমানসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন বন্দীর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এই রিট দায়ের করেন।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), আইজি প্রিজনস, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লার সিনিয়র জেল সুপারকে বিবাদী করা হয়।

আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির জানান, বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক সাজা কার্যকর করার আইনগত কোনো বিধান নেই। মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে কয়েকটি আবশ্যকীয় আইনগত ধাপ অতিক্রম করতে হয়। প্রথমত, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন নিতে হবে। একইসঙ্গে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪১০ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়েরের বিধান রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি সাংবিধানিক অধিকার বলে আপিল বিভাগে সরাসরি আপিল দায়ের করতে পারেন। তৃতীয়ত, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০৫ অনুযায়ী আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের আইনগত সুযোগ রয়েছে। সর্বোপরি, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৯ এর অধীন রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। রাষ্ট্রপতি ওই ক্ষমার আবেদন নামঞ্জুর করলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আইনগত বৈধতা লাভ করে।

কিন্তু বাংলাদেশে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্জন কনডেম সেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বন্দী রাখা হয়। দেশের কারাগারগুলোতে দুই হাজার পাঁচজন ফাঁসির আসামি কনডেম সেলে বন্দী আছেন।

(ঢাকাটাইমস/০৫ডিসেম্বর/এআইএম/জেবি)