শরীর গরম রাখে যেসব খাবার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:১৬

শীত আসতে না আসতেই বৃষ্টি শুরু। এই বৃষ্টি শীতের প্রকোপ বাড়িয়ে দেবে নিশ্চিত। এই সময়ে শরীরের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। কিন্তু কেমন হয় যদি শীতকালের ঠাণ্ডাকে একটু কমিয়ে দেয়া যায়।

শরীরে তাপ তৈরির জন্য খেতে হবে বিশেষ খাবার। এমন কিছু খাবার আছে যা ঠাণ্ডা দূর করে শরীরে এনে দেবে উষ্ণতা। আসুন জেনে নেই সেই খাবারগুলো সম্পর্কে।

গরম পানীয়

শরীরের ঠান্ডা কমানোর জন্য গরম কোন পানীয় খাওয়ার অন্য কোন বিকল্প নেই। শীতটা একটু বেশী লাগলেই চা, কফি বা পান করতে পারেন হট চকলেট কিংবা হট চকলেট মিল্ক। উপকার পাবেন সাথে সাথেই।

লাল মাংস

খাসি ও গরুর মাংস শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে তা বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।

স্যুপ জাতীয় খাবার

শীত দূর করার জন্য খেতে পারেন স্যুপ বা স্টু। শীতের সন্ধ্যায় গরম গরম স্যুপের বাটি নিয়ে মজা নিন স্যুপের। এতে শরীর গরম হবে। ঠাণ্ডা দূর হবে নিমেষেই। স্যুপে একটু ঝাল যোগ করতেও ভুলবেন না যেন। এছাড়া স্যুপ স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি ভালো।

কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার

যে সব খাবারে কার্বোহাইড্রেট বেশি পরিমাণে বিদ্যমান সেসব খাবার ঠাণ্ডা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। কার্বোহাইড্রেট শরীরের থাইরয়েড ও অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি গুলোতে পৌঁছে শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন করে। এতে করে ঠাণ্ডা অনেকাংশে কমে যায়। আটার রুটি, ভাত, চিনি, ডাল এই সবই কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার।

তেল

তেল বা চর্বি বরাবরই ঠাণ্ডা দূর করতে বেশ কাজে লাগে। শীতের খাবারে ঘি, সরিষার তেল ও অলিভ অয়েল ব্যবহার করে দেখুন। শরীরকে গরম রেখে ঠাণ্ডা দূর করবে এবং খাবারের স্বাদে নতুনত্ব আসবে। সকালের নাস্তায় ঘিয়ে ভাজা পরোটা, ভাতের সাথে সরিষার তেলের আলুভর্তা, সালাদে অলিভ অয়েলের জাদু- দেখবেন শীত কোথায় পালিয়ে গেছে!

ডিম

ডিম শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে। ডিম পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি খাবার। ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি৫, বি১২, বি৬, ডি, ই, কে, ফোলেট, ফসফরাস, সেলিনিয়াম, ক্যালিয়াম ও জিংক। প্রতিটি ডিমের মধ্যে রয়েছে পাঁচ গ্রাম প্রোটিন।

মশলাযুক্ত খাবার

যদিও বেশি মশলাযুক্ত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। কিন্তু আপনি শীতে একটু মসলা খাবারে যোগ করতে পারেন। পরিমিত পরিমাণ মশলাযুক্ত খাবার আপনার শরীরকে গরম করবে। ঠাণ্ডা দূরে রাখবে। সুতরাং এই শীতে খাবারে জিরা, ধনে, হলুদ, লবঙ্গ, পাপরিকা, গোলমরিচ, জায়ফল ও দারুচিনি যোগ করতে পারেন ঠাণ্ডা কমানোর জন্য। মশলা যুক্ত আচারও ঠাণ্ডা কমাতে সহায়ক।

আদা

আদা হজমের প্রক্রিয়া উন্নত করার পাশাপাশি প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে শরীরকে গরম করে। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এতে শীতের ঠাণ্ডা দূর হয়। খাবারে সামান্য আদা যোগ করুন। চায়ে, স্যুপে কিংবা খাবারে আদা দিন। এছাড়াও এক গ্লাস গরম পানিতে আদা ফুটিয়ে পান করতে পারেন। ঠাণ্ডা টেরও পাবেন না।

মিষ্টি আলু

শীতকালের এই সবজিটিরও রয়েছে শীত দূর করার ক্ষমতা। ফাইবার, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন সমৃদ্ধ মিষ্টি আলুকে বলা হয় সুপারফুড, যার রয়েছে দেহকে নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্ত রাখার পাশাপাশি শীত তাড়ানোর বিশেষ ক্ষমতা।

মধু

সর্দি, কাশি, ফ্লু ইত্যাদির বিরুদ্ধে লড়তে অনন্য এক উপাদান মধু। মিষ্টিজাতীয় খাবার হলেও মধুতে নেই বাড়তি ক্যালরির ঝামেলা। এ ছাড়া শরীর গরম রাখতেও বেশ উপকারী।

মরিচ

মরিচের মধ্যে ক্যাপসাসিন নামে এক ধরনের উপাদান থাকে যা ত্বকে জ্বালা অনুভূতি দেয় ও শরীরকে শীতকালে গরম রাখে।

পেঁয়াজ

আপনাকে ঘামিয়ে দিতে পেঁয়াজের বড় ভূমিকা রয়েছে। পেঁয়াজ শরীরকে গরম রাখার পাশাপাশি শীতজনিত অনেক রোগ থেকে মুক্তি দেয়।

শুকনো ফল

খেজুর, অ্যাপ্রিকট ও অন্যান্য শুকনো ফল আপনার শরীরের যন্ত্রসমূহকে গরম ও স্বাভাবিক রাখে।

আপেল

আপেলে রয়েছে প্রায় ৪.৪ গ্রাম ফাইবার। আপেলের স্যলুবল এবং ইনস্যলুবল ফাইবার দুটোই আমাদের দেহের উষ্ণতা ধরে রাখতে সক্ষম। এ ছাড়াও আপেলে রয়েছে ৮৬% পানি যার ফলে আমরা শীতে কম পানি পান করলেও আমাদের দেহকে সঠিকভাবে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করবে।

বাদাম

বিভিন্ন জাতের বাদাম যেমন, চিনাবাদাম, আখরোট, কাঠবাদাম ইত্যাদি ভালো কোলেস্টেরল, ভিটামিন, ফাইবার ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের সবচেয়ে ভালো উৎস। গরমজাতীয় খাবার বলে শীতে স্যাকস হিসেবে বাদাম খেতে পারেন।

রসুন

সর্দি, কাশি ও গলা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কার্যকরী রসুন। পাশাপাশি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রতিদিন তিন, চার কোয়া রসুন সরাসরি বা রান্নায় ব্যবহার করে খেতে পারেন।

ঘি এবং আঁশ জাতীয় খাবার

শীতকালে আঁশ জাতীয় খাবার বেশি করে খেলে হজম প্রক্রিয়া বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে শরীরের ভেতরের তাপমাত্র বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাইরের ঠাণ্ডা সেভাবে শরীরকে কাবু করতে পারে না।

কিশমিশ

শীতের ব্রেকফাস্ট যেন কোনও দিনই বাদাম এবং কিশমিশ ছাড়া শেষ না হয়। কারণ এই ধরনের খাবারগুলো সারা দিন শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে।

তুলসি

আয়ুর্বেদিক গ্রন্থ থেকে জানতে পারা যায়, শীতকালে শরীরকে সুস্থ এবং কর্মক্ষম রাখতে তুলসি এবং আদার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এই দুই প্রাকৃতিক উপাদানের শরীরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিভাইরাল প্রপার্টিজ, যা শীতের কামড় থেকে বাঁচাতে সব দিক থেকে সাহায্য করে থাকে।

(ঢাকাটাইমস/৭ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :