হার্নিয়ার চিকিৎসায় অপারেশনের বিকল্প নেই

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:৩১

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

হার্নিয়ার অর্থ হল শরীরের কোনও ত্রুটি। মাংসপেশির দুর্বলতা ও গঠনগত ত্রুটির জন্য যখন শরীরের অভ্যন্তরের কোনও অঙ্গের অংশ সেই নির্দিষ্ট জায়গা থেকে বেরিয়ে আসে তখন তাকে হার্নিয়া বলে। যেমন পেটের দেওয়াল ছেদ হয়ে গেলে অন্ত্র বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। বিশেষ করে ছেলেদের ডানদিকের কুঁচকিতে গ্রয়েন হার্নিয়া হয়৷

 

জন্মগত কারণে ছেলেদের কুঁচকির জায়গায় একটি ছিদ্র থাকে। ভ্রূণ অবস্থায় অণ্ডকোষ ছেলেদের পেটের ভিতর তৈরি হয়। ভ্রূণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর কুঁচকিতে জায়গা করে নির্দিষ্ট স্থানে আসে। আর এই প্রক্রিয়া চলাকালীন জন্মগত কারণে ছেলেদের হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

 

অনেক সময় জন্মের সময়ই ছেলেদের হার্নিয়া দেখা যায়। সেক্ষেত্রে জন্মের ১০ মাস পরে বাচ্চার ওজন ১০ কেজি এবং হিমোগ্লোবিন ১০ হলে অপারেশন করা হয়। আবার পেটের উপর আগে অপারেশন হওয়া যেকোনও স্থানে কোনও ত্রুটি তৈরি হলে তাকে ভেনট্রাল হার্নিয়া বলা হয়। বুক ও পেটের মধ্যে থাকা ডায়াফ্রাম নামক পর্দার মাংসপেশির দুর্বলতায় পাকস্থলীর অংশবিশেষ উপরের দিকে উঠে এলে তাকে হায়াটাস হার্নিয়া বলে। মাংসপেশীর উপরের দিকের আবরণ ফুলে বাইরে এলে মাংসপেশীর হার্নিয়া হতে পারে।

 

চিকিৎসকের মতে, হার্নিয়া তেমন কোনও অসুখ নয়, তবে অপারেশনে দেরি হলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। হার্নিয়া অপারেশনে অনেকে আঁতকে উঠেন ঠিকই।

 

সত্যি বলতে কী, এই অপারেশন তেমন ভয় পাওয়ার মতো নয়, ঠিকই। তবে কষ্টদায়ক। খুব পরিচিত হলেও কিন্তু এই অসুখ নিয়ে মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। অনেকেই যেমন এটি পুরুষদের অসুখ বলে মনে করেন। আবার অনেকে হার্নিয়া হলেও খুব একটা তোয়াক্কা করেন না। ফলে সে অসুখ সহজে সেরে যেতে পারত, সেই অসুখই প্রাণসংশয় ডেকে আনে। তাই হার্নিয়া হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিন।

 

হার্নিয়ার একমাত্র সমাধান অপারেশন। অপারেশনের প্রকারভেদ রয়েছে কিন্তু অপারেশন ছাড়া হার্নিয়ার চিকিৎসার আর কোনও বিকল্প নেই। অপারেশনে শরীরের স্বস্থান থেকে বিচ্যুত অঙ্গ বা অঙ্গের কোনও অংশকে পুনরায় যথাস্থানে ফিরিয়ে দিয়ে দুর্বল পারিপার্শ্বিক মাংসপেশি ও কোষকলাগুলোকে শক্ত ও টান টান করে দেওয়া হয়।

 

হার্নিয়ায় শরীরের যে অংশে ত্রুটি থাকে সেখানে একটি রিংয়ের মতো ফোলাভাব আকারে প্রকাশ পায়। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা না করলে ওই রিং-এর মধ্যে ফোলা অংশটি আটকে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে রোগীর কষ্ট হয় মারাত্মক এবং জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করার প্রয়োজন পড়ে। একই সঙ্গে হার্নিয়ায় জটিলতা হওয়া সত্ত্বেও অপারেশন না করলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

 

বর্তমানে হার্নিয়া অপারেশন ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমেই করা যায়। এই পদ্ধতিতে রক্তপাত, ব্যথা কম হয়, তেমনই রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। যাতে পুনরায় হার্নিয়া ফিরে না আসে তাই অপারেশনের পর সেই স্থানে জালের মতো আবরণ দিয়ে দেওয়া হয়। তবে হার্টে বা ফুসফুসে কোনও বড় সমস্যা না থাকলে তবেই ল্যাপারোস্কোপি করা সম্ভব।

 

(ঢাকাটাইমস/৮ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)