এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, তাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি: বিচারক

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:২৮ | আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, ‘আবরার হত্যার ঘটনা বাংলাদেশের মানুষকে ব্যথিত করেছে এবং এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, তাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া আদালত সমীচীন মনে করে।’

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রায় ঘোষণার সময় এ কথা বলেন।

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বুধবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান  এ রায় দেন।

রায় ঘোষণার আগে সকাল সোয়া নয়টার দিকে ২২ আসামিকে কারাগার থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। রায় পড়া শুরুর কয়েক মিনিট আগে তাদের তোলা হয় কাঠগড়ায়। আসামিদের উপস্থিতিতেই ১২টার কিছু আগে রায় পড়া শুরু করেন বিচারক।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার ওরফে অপু, মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মাজেদুর রহমান ওরফে মাজেদ, মুজাহিদুর রহমান ওরফে মুজাহিদ, খন্দকার তাবাকারুল ইসলাম ওরফে তানভির, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, শামীম বিল্লাহ, সাদাত ওরফে এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমী, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, এস এম মাহমুদ সেতু, সামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ ওরফে মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম, মোহাম্মদ মোর্শেদ উজ্জামান মন্ডল প্রকাশ জিসান, মুজতবা রাফিদ এবং মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম, মোহাম্মদ মোর্শেদ উজ্জামান মন্ডল প্রকাশ জিসান ও মুজতবা রাফিদ পলাতক আছেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- অমিত সাহা, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আকাশ হোসেন, মুহতাসিম ফুয়াদ ও মোয়াজ ওরফে মোয়াজ আবু হোরায়য়রা।

আলোচিত মামলাটির রায় উপলক্ষে আদালত প্রাঙ্গণে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয় আদালত চত্বরে।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন। রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার পরদিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর চকবাজার থানায় ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ পরে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২৮ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু রায় প্রস্তুত না হওয়ায় সেদিন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে ৮ ডিসেম্বর নতুন তারিখ ধার্য করেছিলেন। অবশেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো।

(ঢাকাটাইমস/৮ডিসেম্বর/এজেড)