‘খালেদার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেখা হচ্ছে, শিগগির সিদ্ধান্ত’

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ২০:০৫ | আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ২০:১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা যেসব সুপারিশ করেছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেছেন, তাদের সুপারিশের পদ্ধতিতে অন্য কোনো দেশে মুক্তি দেওয়ার নজির আছে কি না সেই বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অচিরেই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

বুধবার বিকালে গুলশানে তার আবাসিক অফিসে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত আছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশ নেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী বেশ কয়েকবার বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশে যেতে হলে কারাগারে ফিরে আবেদন করতে হবে।

এরই মধ্যে গত ২৩ নভেম্বর সচিবালয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা একটি স্মারকলিপি দেন। তাতে খালেদাকে মুক্তির বিষয়ে আইনের ধারা উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

আইনমন্ত্রী বলেন, আমি যে বক্তব্য দিয়েছি যে, ৪০১ ধারায় যে দরখাস্ত একবার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে সেই দরখাস্তটি পুনরুজ্জীবিত করার কোনো স্কোপ নাই। আমি সেই আইনি যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলাম সেই আইনি ব্যাখ্যাই সঠিক।

‘কিন্তু তারপরেও আমি বলেছি যে, ১৫ জন আইনজীবী আমার সাথে দেখা করেছেন। তারা একটা বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের এই বক্তব্য কোনো দেশে কোনো সময় বিশেষ করে আমাদের উপমহাদেশের কোনো আদালতে নজির আছে কি না আমি সেটা খতিয়ে দেখছি।

তিনি বলেন, দেখা এখনো শেষ হয়নি। প্রায় শেষ প্রান্তে এসেছি। আপনারা কিছুদিনের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত পেয়ে যাবেন।’

এসময় আবরার হত্যার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন আইনমন্ত্রী। বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে প্রকৃত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এ রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে দেশে আইনের শাসন আছে।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু এটা ডেথ রেফারেন্স, এর নথিপত্রকে বলে পেপার বুক। আমরা তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করে দেবো। যেন পেপার বুক তৈরির জন্য হাইকোর্টে কোনো বিলম্ব না হয়।

‘কিছু কিছু মামলা আছে, যেগুলো সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দেয়। সরকারের দায়িত্ব এসব মামলা দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে সমাজকে আশ্বস্ত করা— আইনের শাসন দেশে বিরাজ করছে। সেই দায়িত্ব পালনে শেখ হাসিনার সরকার এখন পর্যন্ত সফল।’

আনিসুল হক বলেন, এই মামলায় ২৫ আসামির মধ্যে তিন জন শুরু থেকেই পলাতক। বাকি ২২ জন আদালতে উপস্থিত ছিল। দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় সন্দেহাতীতভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মামলাটির রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষ অক্লান্ত পরিশ্রম করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করায় তাদের ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।

(ঢাকাটাইমস/০৮ডিসেম্বর/ইএস)