গাঁজা সেবনে কমে শুক্রাণুর সংখ্যা

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:৩০ | আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১০:৪০

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই গাঁজা সেবন নিষিদ্ধ। তারপরও মাদকসেবীরা এটা অবৈধভাবে সংগ্রহ করে সেবন করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে গাঁজা সেবনে হ্রাস পায় শুক্রাণুর সংখ্যা। ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির করা একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এল এমন তথ্য।

 

একটি বিখ্যাত বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণা পত্রে দাবি করা হয়েছে, এ যাবৎ গঞ্জিকা সংক্রান্ত গবেষণায় ব্যবহৃত হত টেট্রাহাইড্রক্যানাবিনল বা টিসিএইচ ইনজেকশন। যা গাঁজার মূল সাইকোঅ্যাকটিভ উপাদান। কিন্তু ইঁদুরের উপর করা এই গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছে গাঁজার ধোঁয়া। যা মানুষের সেবন করা গাঁজার অনুরূপ।

 

গবেষকদের দাবি, অল্প সময়ের ব্যবহারেও গাঁজা হ্রাস করেছে ইঁদুরের শুক্রাণুর সংখ্যা। শুধু একটি প্রজন্মে নয়, পরবর্তী একটি প্রজন্মের ইঁদুরেও দেখা গিয়েছে একই সমস্যা। কাজেই গঞ্জিকা সেবনে শুধু মাদক সেবনকারী একা নন, আক্রান্ত হন তার পুত্রও। পাশাপাশি শুধু শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাসই নয়, গাঁজার প্রভাবে শুক্রাণুর গতি হ্রাস পায় বলেও অভিমত গবেষকদের।

 

গবেষকদের মতে, শেষ কয়েক দশকে বিভিন্ন কারণে প্রায় ৫৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা। শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়াকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় অলিগোস্পার্মিয়া। প্রতি মিলিলিটার বীর্যে দেড় কোটির কম শুক্রাণু থাকলেই তাকে বলা হয় অলিগোস্পার্মিয়া।

 

গাঁজা সেবনের কারণে মানসিক ও শারীরিক সব ধরনের ক্ষতি হয়। সামাজিক দক্ষতা কমে যায়। দীর্ঘদিন গাঁজা খেলে এর ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি হয়। দিন দিন গাঁজা খাওয়ার মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। গাঁজা সেবনকারীরা ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়। কখনো অতি আনন্দে আত্মহারা থাকে। আবার কখনো মনমরা থাকে। অনেক সময় কোনো কিছু মনে রাখাতে পারে না। অর্থহীন কথাবার্তা বলে। হাত-পা কাঁপতে থাকে। হাঁটাচলা করতে কষ্ট হয়। চোখ লাল হয়ে যায়।

 

প্রথম দিকে খাওয়াদাওয়া বেশি করে। ধীরে ধীরে খাওয়ার রুচি একেবারে কমে যায়। রক্তচাপ কমে যায়। বুক ধড়ফড় করে। ধীরে ধীরে সবকিছু থেকে আনন্দ হারায়। নিজেকে সব সময় গুটিয়ে রাখে। ঘুমের নিয়ম বলে কিছু থাকে না। মানসম্মান ও ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয়। হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়। তখন অন্যকে আঘাত করে। অনেক সময় আত্মহত্যার চেষ্টাও করে। বিনা কারণে অন্যকে সন্দেহ করে। স্বাস্থ্য ভাঙতে ভাঙতে দুর্বল হয়ে পড়ে। হৃদ্‌রোগ, ফুসফুস, লিভার ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একপর্যায়ে যৌনশক্তি নষ্ট হয়ে যায়।

 

গাঁজা সেবনে শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয় সন্তানধারণে। সন্তান ধারণে ইচ্ছুক কেউ যদি এক বছর অরক্ষিত যৌন সঙ্গমের পরেও অসফল হন, তা হলে তার কারণ হতে পারে এই রোগ। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাধ্যতামূলক। মানসিক চাপ, শুক্রাশয়ের সমস্যা, বিভিন্ন যৌন রোগ, ডায়াবিটিস, ক্যানসারসহ একাধিক কারণে শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস পায়। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল গাঁজা সেবন।

 

(ঢাকাটাইমস/৯ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)