দুর্নীতিবাজদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কটের আহ্বান প্রধান বিচারপতির

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:৩৭ | আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতিবাজদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কট করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।একইসঙ্গে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতিবাজরা যেন মামলা থেকে পরিত্রাণ না পায় এবং নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে দুদক কর্মকর্তাদের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়। এবছর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আপনার অধিকার, আপনার দায়িত্ব: দুর্নীতিকে না বলুন’।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমৃত্যু দর্নীতি অন্যায় জুলুম শোষণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে, সুবিধা বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষে কাজ করে গেছেন। তিনি সব সময় দুর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর‌্যন্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছিলেন আপসহীন। তার জন্মশতবার্ষিকী এবং দেশের স্বাধীনতার অর্ধশত বার্ষিকীদেও আমরা দুর্নীতি থেকে মুক্ত হতে পারিনি।

তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালে ৫ জানুয়ারি একটি ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘করাপশন আমার বাংলার মজদুর করে না, কারপশন আমার বাংলার শ্রমিক করে না। তাদের টাকা দিয়ে যারা লেখা পড়া করেছে তারা করাপশন করছে।’ ওই ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্পিকারকে উদ্যেশ্য করে বলেছিলেন, ‘আমার দেশকে বাঁচান, দেশের মানুষকে বাঁচান, মানুষের দুঃখ  দুর করুন। আর দুর্নীতিবাজ ঘুষখোর কালোবাজারিদের উৎখান করুন।”

প্রধান বিচারপতি ২৬ মার্চ ১৯৭৫ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু একটি ভাষণের উদ্ধৃত করেন। যেখানে বঙ্গবন্ধু শিক্ষিত সমাজের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শিক্ষিতদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন, আমি এই যে দুর্নীতির কথা বললাম, এটা কারা করে? আমার কৃষক দুর্নীতিবাজ না, আমার শ্রমিক দুর্নীতিবাজ না। তাহলে ঘুষ খায় কারা? ব্ল্যাক মার্কেটিং করে কারা? বিদেশি এজেন্ট কারা? বিদেশে টাকা চালান করে কারা? এই আমরা যারা শিক্ষিত পাঁচভাগ তারাই দুর্নীতি করি। আমাদের চরিত্র সংশোধন করতে হবে। ‘

তরুণ সমাজকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমার সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় যখন দেখি দেশের স্বনামধান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জনের পর রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্টিত হয়ে কিছু কিছু কর্মকর্তা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়। বিদ্যান ব্যক্তি লোভী হলে, ঐশ্বর্যের পেছনে ছুটলে, অসাধু হলে দুর্নীতিকে প্র্রতিরোধ করা কোনোদিন সম্ভব হবে না।

এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তার দক্ষতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে যেন আসল অপরাধী ছাড় না পায়। পাশাপাশি নিরপরাধ ব্যক্তি যেন সমস্যায় না পড়ে। প্রসিকিউশন টিমকে আরও দায়িত্ববান করতে হবে। কমিশনের হাত শক্তিশালী করতে সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।

এ বিষয়ে দুদককে কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তবে, দুদক যেন এর অপব্যবহার না করে সে বিষয়েও তাগিদ দেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/০৯ডিসেম্বর/এসআর/ইএস)