পুষ্টিগুণে ভরা বেগুন প্রতিহত করে মারণরোগ!

প্রকাশ | ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:৫৯ | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৩৯

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

বেশির ভাগ মানুষ বলে থাকেন বেগুন সবজিটির কোনো গুণই নেই! কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর সমৃদ্ধ একটি সবজি। আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ জরুরি।

 

আমাদের দেশে অনেক প্রজাতির বেগুন পাওয়া যায়। সব ধরনের বেগুনের পুষ্টিগুণ প্রায় একই। বেগুনে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, খনিজ, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ম্যাঙ্গানিজ এবং থায়ামাইন আছে। যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে৷ এ ছাড়া বেগুনের উপাদানগুলো অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল হিসেবেও পরিচিত৷

 

ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা থেকে শুরু করে একাধিক নানান শারীরিক সমস্যা সমাধানে বেগুন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবার জেনে নেওয়া যাক, বেগুনের কয়েকটি অজানা গুণাগুণ সম্পর্কিত তথ্য:

 

বেগুনের মধ্যে যে ফাইবার রয়েছে তা পেটের সমস্যা দূর করার জন্য বিশেষভাবে কার্যকরী। এর পাশাপাশি বদ হজম দূর করে।

 

বেগুনে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের মধ্যে জমে থাকা দূষিত টক্সিক উপাদানকে কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও কোলন ক্যানসারের আশঙ্কা কমায়।

 

বেগুনে যে পরিমাণে ফাইবার রয়েছে তা শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। চিকিৎসকেরা ডায়াবেটিস রোগীদের এটি নিয়মিত খাবারের জন্য পরামর্শ দেন।

 

বেগুনের মধ্যে উপস্থিত ফলিক অ্যাসিড গর্ভবতী মহিলাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

বেগুনের মধ্যে ফাইবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে পটাসিয়াম ভিটামিন বি৬, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সেইসাথে হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।

 

বেগুনের মধ্যে বিশেষ কয়েকটি উপকারী অ্যাসিড রয়েছে যা শরীরে প্রবেশের সাথে সাথে রোগ-জীবাণু এবং টিউমার এর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে।

বেগুনে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন; যেমন এ, বি, সি, শর্করা, কার্বোহাইড্রেট, আমিষ এবং আয়রন। বেগুনের উদ্ভিজ্জ আমিষ আমাদের শরীরের হাড়কে শক্তপোক্ত করে তোলে।

 

বেগুনে ভরপুর ভিটামিন বি ১, বি ৬, বি ৩, সি, কে থাকে। এইজন্য বেগুন হৃৎপিন্ডের জন্য ভীষণ উপকারী একটি খাবার। বেগুনের ফ্ল্যাভোনয়েড নামক উপাদানটি হৃদরোগের আশঙ্কা বহুগুণে কমিয়ে দেয়।

 

বেগুনের মধ্যে উপস্থিত পলিফেনল, যা টিউমারের জীবাণু ও ক্যানসার কোষের বিস্তার বন্ধ হতে সাহায্য করে।

 

বেগুনের মধ্যে এমন উপকারী উপাদান রয়েছে যা বিভিন্ন ক্যানসারের কোষগুলোকে ধ্বংস করে এবং ভাইরাসজনিত রোগ শরীরের ধারে কাছে ঘেঁষতে দেয় না। এছাড়া শরীরের ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে।

 

কোলেস্টেরল হলো একধরণের চর্বি, যা রক্তে জমে। বেগুনে কোনো কোলেস্টেরল নেই। যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি, তাদের জন্য বেগুন আদর্শ খাদ্য। কারণ, বেগুন ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতে সহায়তা করে।

বেগুনে আছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। আয়রন শরীরে রক্ত বাড়াতে সহায়তা করে। তাই রক্ত শূন্যতার রোগীরা খেতে পারেন এই সবজি। উপকারে আসবে।

 

বেগুনে আছে রিবোফ্ল্যাভিন। রিবোফ্ল্যাভিন মুখ ও ঠোঁটের কোণের ঘা, জিহ্বার ঘা প্রতিরোধ করে। জ্বর হওয়ার পর মুখের বিস্বাদও দূর করে বেগুন। তাই জ্বরের পর বেগুনের তরকারি খেলে মুখের স্বাদ ফিরে পাওয়া যেতে পারে।

 

বেগুন ক্ষত স্থান দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। বেগুনে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘ই’ এবং ‘কে’। এরা শরীরের ভেতর রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। ফলে রক্ত চলাচল কার্যক্রমকে সচল রাখে।

 

বেগুন ভিটামিন এ সমৃদ্ধ সবজি। বেগুনের ভিটামিন ‘এ’ চোখের জন্য খুব উপকারী। এটি চোখের যাবতীয় রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।

 

বেগুনে আছে প্রচুর পরিমাণ ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশ। যা খাবার হজমে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

 

বেগুনে আছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। এই দুই উপাদান দাঁত, হাড় ও নখের জন্য খুব উপকারী। ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম দাঁতকে করে মজবুত, মাড়িকে করে শক্তিশালী। নখের ভঙ্গুরতা রোধ করে।

 

ডায়রিয়া হলে শরীরে প্রচুর জিঙ্কের ঘাটতি দেখা দেয়। বেগুন জিঙ্কের ঘাটতি দূর করে। তবে ডায়রিয়া চলাকালীন সময়ে বেগুন খাওয়া ঠিক না। ডায়রিয়া ভালো হলে বেগুন খাওয়া উচিত।

 

ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও বেগুন খেতে পারেন৷ বেগুনে থাকা উপাদানগুলো ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না৷ সেই সঙ্গে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রেখে এর সৌন্দর্য বাড়ায়৷

 

বয়স বেঁধে রাখতে বেগুনের সাহায্য নিতে পারেন৷ বেগুনে থাকে অ্যান্টি-এজিং উপাদান অ্যানথোয়াসিন৷ এটি মানুষের বয়স বাড়লেও শরীরে ছাপ পড়তে দেয় না৷

 

(ঢাকাটাইমস/৩০ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)