প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মারামারিসহ নানা কারণে সমালোচিত ছাত্রলীগ

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ২০:২৬ | প্রকাশিত : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ২০:২৪

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে। তবে এদিন মিছিলে নেতাকর্মীদের অবস্থানকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামরি, ক্যাম্পাসজুড়ে উচ্চ শব্দে গান বাজানো, ঐতিহাসিক বটতলার নামফলক ভেঙে ফেলাসহ বিভিন্ন কারণে সমালোচিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে দুপুরে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদদীন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে মারামারি হয়। এসময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য মীমাংসা করতে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। সভাপতি আল নাহিয়ান জয়ও সামান্য আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানা যায়, বটতলার নিচে আগে এসে অবস্থান নেয় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ। পরে সেখানে মিছিল নিয়ে আসেন জসীমউদ্দীন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। বিরোধ মীমাংসা করতে মঞ্চ থেকে বটতলার নিচে যান সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। হাতাহাতি এক পর্যায়ে মারামারিতে পরিণত নয়। ইট, চেয়ার, বাঁশ ছোড়াছুড়ি হয়। এতে সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এদিকে উচ্চ শব্দের কারণে কলা ভবনে ক্লাস বিঘ্নিত হওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। তমাল আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, 'ছাত্রলীগের প্রোগ্রামের এমন শব্দে কারো কোনো কাজে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব না। টি-শার্টের পেছনে লিখেছেন, ছাত্রলীগ করতে হলে আগে ভালো ছাত্র হতে হবে। কিন্তু ছাত্রদের লেখাপড়াই করতে দিচ্ছেন না। এমন নিমকহারামি আর কত করবেন? এবার আমাদেরও একটু লেখাপড়া করে পাস করতে দিন প্লিজ!’

এদিন ঐতিহাসিক বটতলার নামফলক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভেঙে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ ওঠেছে। চারটি নামফলকের তিনটিই ভেঙে গেছে।

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্যাম্পাসের অবস্থা তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুসাইবা তাসনিম সাবা বলেন, 'দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠের এই নোংরা অবস্থা। বখাটেদের আড্ডা জমেছে। তারা রাস্তায় গাঁজা খাচ্ছে। মেয়েদের দিকে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করছে। আর যেখানে-সেখানে মুত্র ত্যাগ করছে। শামসুন্নাহার হল গেইটের সামনে মুত্রের গন্ধে পেট ফুলে আসছে। উচ্ছৃঙ্খল মিউজিকে রিডিং রুমে বসেও পড়াশোনা দায়।’

এসব ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একে এম গোলাম রব্বানী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর রক্ষা করার দায়িত্ব ছাত্র-শিক্ষক সবার। বাইরের লোকজন এভাবে ক্যাম্পাসে এনে কর্মসূচি পালনের পর এরকম ঘটনা ঘটলে তো যারা আয়োজক তাদেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে।’

এদিকে বিকাল সোয়া চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে থেকে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর, মহানগর দক্ষিণ, ঢাকার বিভিন্ন কলেজ ছাত্রলীগ অংশ নেয়। শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।

শোভাযাত্রাটি মধুর ক্যান্টিন থেকে শাহবাগ-মৎস ভবন-কাকরাইল-পল্টন হয়ে গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৪জানুয়ারি/আরএল/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :