সরকারের আয়ু বেশি দিন নেই, দাবি হাফিজের

সরকারের আয়ু বেশি দিন নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমদ। বলেছেন, ‘সারা দেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচনের আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। মানুষের ঘৃণার কারণে তারা ভোট কারচুপি করেও জিততে পারছে না। অনেক মানুষ এখন রাজপথে নামছে। এসবের মধ্য দিয়ে টানেলের শেষে আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে।’

৭ জানুয়ারি ফেলানী হত্যা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সভায় হাফিজ এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের চেহারা কেমন, তা মুরাদ হাসানের মধ্য দিয়ে দেখা গেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশে সরকার পরিবর্তন হলে এ রকম আরও অনেক মুরাদ হাসানকে দেখা যাবে।’

নারীর প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন মুরাদ হাসান। আওয়ামী লীগের দলীয় পদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হাফিজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চেহারা কেমন, তা এক মুরাদ হাসানের মাধ্যমে আমরা দেখতে পেয়েছি। দেশে অসংখ্য মুরাদ হাসান আছে। তবে অধিকাংশই এখনো পানির নিচে। সরকার পরিবর্তন হলেই আরও অনেক মুরাদ হাসান পাওয়া যাবে।’

ভারতের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা যে স্বাধীন জাতি, তারা এই সম্মান দেখায় না। নদীর পানি আটকে রেখে তারা বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিণত করছে। নদীর পানির সুষম বণ্টনে তিস্তা, গঙ্গা, করতোয়াসহ অন্যান্য নদীর পানিতে আমরা ন্যূনতম ছাড় পাইনি। আমার মন্ত্রিত্বের সময়ে আমিও ফেনী নদীর পানি দিইনি। কিন্তু এখন তারা এ নদীর পানি নিয়ে যাচ্ছে। আর এর প্রতিবাদ করায় বুয়েটের ছাত্র আবরারকে সারা রাত পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’

সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাফিজ বলেন, ‘ফেলানীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার লাশ কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এটা বাংলাদেশকে ভয় দেখিয়ে জানান দেওয়া, দেখো, আমরা কত শক্তিশালী। আমাদের সঙ্গে একটু ভুলত্রুটি করলেই বিনিময়ে গুলি চলবে।’

ভারতের দালালে দেশ ভরে গেছে মন্তব্য করে এই নেতা বলেন, ‘ভারতে যান, সেখানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কোনো দালাল পাবেন না। পাকিস্তানেও কোনো ভারতীয় দালাল নেই। আর এ এক বাংলাদেশ, দুর্ভাগা দেশ। এ দেশে অসংখ্য ভারতীয় দালালে ভর্তি হয়ে গেছে।’

একাত্তরে লাখ লাখ বাংলাদেশি শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি রণাঙ্গনেও অস্ত্র হাতে বাঙালির পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারতের সেনারা। এই বিষয়টি নিয়ে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভারত আমাদের সাহায্য করেনি। তারা তাদের চিরশত্রু পাকিস্তানকে দুর্বল করার জন্য সাহায্য করেছে। অনেকে এখন প্রমাণ করতে চান যে, যুদ্ধটি ভারত ও পাকিস্তানের ছিল। কিন্তু ভারত যুদ্ধ করেছে ১০ দিন। বাঙালি যুদ্ধ করেছে আট মাস ২০ দিন। যুদ্ধ শুরুও করেছে বাঙালি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পাকিস্তানি মিলিটারিদের আত্মসমর্পণের দিন (১৬ ডিসেম্বর) রেসকোর্স ময়দানে মুক্তিযুদ্ধের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে যারা এভাবে পদদলিত করে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর নেই।’

বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির প্রান্তিক জনশক্তিবিষয়ক সম্পাদক অর্পণা রায় দাস ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব লায়ন ফারুক রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

(ঢাকাটাইমস/০৭জানুয়ারি/বিইউ/জেবি)