‘মাস্ক পরা ও হাত ধোয়ায় জোর দিয়ে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালাতে হবে’

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৪৯

বোরহান উদ্দিন

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও ভয়াবহ হতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যা আজ বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হচ্ছে। এসব বিধিনিষেধ পুরোপুরি পালন না করলে সুফল আসবে না। তাই এসব নির্দেশনা পালনে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে সবগুলো বাস্তবায়ন কঠিন হলেও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক এবং হাত ধোয়ায় জোর দিয়ে ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।

মুঠোফোন ঢাকাটাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন পরামর্শ দেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বোরহান উদ্দিন।

বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সবচেয়ে কিসে বেশি জোর দিতে হবে?

সবগুলো পরামর্শই মেনে চলা উচিত। কিন্তু দেশের আর্থসামাজিক ও জনসংখ্যাগত দিক দিয়ে চাইলেও হয়তো কিছু বিষয় মেনে চলা অনেকটা কঠিন। যেমন সামাজিক দূরত্ব পুরোপুরি নিশ্চিত করতে গেলে তখন পাইকারি বাজারঘাট বন্ধ করে দিতে হবে। সেটা হয়তো সম্ভব হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ কি না সেটা ভেবে দেখা যেতে পারে। এসব তো বন্ধের কথা বলা আছে।

এখন সবচেয়ে বেশি জোর দিতে মাস্ক পরা ও হাত ধোয়ায়। মাস্ক ছাড়া কেউ বাসার বাইরে বের হতে পারবে না। আর হাত না ধুয়ে কেউ নাক, মুখে হাত দেবে না। এটা নিশ্চিত করা গেলে কিন্তু সুফল মিলবে। সেজন্য ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করতে হবে।

গণপরিবহনে কখনোই সেই অর্থে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। এটা কিভাবে বাস্তবায়ন হবে?

নির্দেশনায় আছে অর্ধেক যাত্রী নেবে। কিন্তু আগে কিছুদিন মানা হয়েছিল পরে আবার আগের মতোই হয়ে যায় গণপরিবহনের চিত্র। এখানে স্টাফদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতেই হবে। আর যাত্রীদের মাস্ক ছাড়া বাসে উঠতে দেওয়া যাবে না৷ প্রতিটি স্টপেজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন৷ যেই মাস্ক ছাড়া থাকবে তাদের ১০ টাকা হলেও জরিমানা করতে হবে। না হলে লাভ হবে না।

বিধিনিষেধের মধ্যে বাণিজ্য মেলা চলছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ভোট হচ্ছে। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আছে। এটা ঝুঁকির কারণ হবে না?

অবশ্যই এটা ঝুঁকি বাড়াবে। আমরা করোনা বেড়ে যাওয়ায় ঠেকাতে কিছু সুপারিশ করেছি। পরে মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছে। তারমধ্যে এমন জনসমাগম এড়ানোর কথা বলা আছে। এখন এটা বাস্তবায়নও সরকারকে করতে হবে। না হলে অতীতেও আমরা অনেক নির্দেশনা দেখেছি কিন্তু বাস্তবায়ন কম হতে দেখেছি। ফলে বিপদ বেড়েছে।

বাণিজ্য মেলা ও নির্বাচন নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন- আমরা বন্ধের জন্য বলেছি। কিন্তু এরচেয়ে বেশি কিছু করার নেই। কী বলবেন?

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্য হতাশার ও দুঃখজনক। কীভাবে তিনি বলেন নির্দেশনার বাইরে কিছু করার নেই? তাহলে কে করবে? আমাদের অবস্থা তাহলে কী হবে? কোনোভাবে তিনি একথা বলতে পারেন না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন দেশে এখন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ করোনা রোগীই ওমিক্রনে আক্রান্ত। আপনি কী একমত?

প্রতিদিনের তথ্য অনুযায়ী ওমিক্রনে আক্রান্ত তো ১ শতাংশও হয় না। সেখানে কীভাবে ১৫ থেকে ২০ শতাংশের কথা বললেন বুঝে আসে না। বিষয়টা এমন না যে দেশের ১০ ভাগ লোক দুর্নীতিতে জড়িত বলে দিলাম। অফিসিয়াল তথ্য ছাড়া কথা বললে জনগণ বিভ্রান্ত হবে। তবে এটা সত্য যে, করোনার সংক্রমণ ঠেকানো না গেলে সামনে ওমিক্রন আরও বাড়বে।

আপনাকে ধন্যবাদ

ঢাকাটাইমসকেও ধন্যবাদ

ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/বিইউ/এমআর