দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী: স্পিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২২, ২১:৪৪ | প্রকাশিত : ১৪ জানুয়ারি ২০২২, ২১:৩০

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি স্বাধীন দেশ উপহার দেওয়ায় আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার রেখে যাওয়া দেশকে বিশ্বে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে ৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মজীবনে যোগদানের ৯ম বর্ষপূর্তি ও ১০ম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

স্পিকার বলেন, ২৪ বছরের আন্দোলন সংগ্রামে বারবার ফাঁসির মঞ্চে গিয়েও বাংলাদেশের কথা বলেছেন যে মানুষটি তিনিই তো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি বলেই সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আপনারা কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পেরেছি।

পাকিস্তান আমলে সিভিল সার্ভিস হিসেবে নিজের বাবার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে স্পিকার বলেন, পাকিস্তানি দুঃশাসনের সময়ে সিভিল সার্ভিসে যারা কাজ করতেন তারা চরম বৈষম্যের শিকার হতেন চাকরি জীবনে। অথচ তারা কোনো দান নয়, অনেক কষ্টে যোগ্যতা দিয়ে তারা চাকরি পেয়েছেন। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি। আর নিরলস চেষ্টায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, স্বাধীন দেশে কাজ করার সুযোগ পাওয়া অনেক বড় গর্বের। আপনারা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করতে পারছেন। তাই পেশাগত দায়বদ্ধতা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন মিসরের লেখক ও সাংবাদিক মোহসেন আর আরিশি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন নিয়ে গল্প বলেন মিসরীয় এই লেখক। শেখ হাসিনাকে নিয়ে তার লেখা বই ‘হাসিনা: হাকাইক ওয়া আসাতির’ অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত প্রধানমন্ত্রীর জীবনের নানা চড়াই উৎরাই ও সাফল্য নিয়ে বিদেশি এই লেখক বইটি বেশ সাড়া ফেলে। লেখক বইটি লেখার প্রেক্ষাপট, কীভাবে লেখার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তাও বক্তব্য তুলে ধরেন আরিশি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন। তিনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা যারা কাজ করি তারা মাস শেষে বেতন পাই। কিন্তু বেতনের জন্যই কাজ করি, না দেশকে ভালোবাসার কারণে কাজ করি সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে। আমাদের অনুধাবন করতে হবে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই আমরা মর্যাদা পেয়েছি৷ দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমরা এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি।

সোহরাব হোসাইন বলেন, আমরা কেউ বহিরাগত কোনো কর্মচারী না৷ এ দেশেরই সন্তান হিসেবে আমরা এদেশের জনসেবক। শুধু পয়সার জন্য আমরা কাজ করি না। জীবন চালানোর জন্য অর্থের দরকার আছে। কিন্তু দেশকে ভালোবেসেই আমরা সেবা দেই এ বিষয়টি সবার মধ্যে ধারণ করা খুব জরুরি।

পিএসসির চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। তাই এই চলার পথে সবাইকে শরিক হতে হবে৷ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ থাকতে হবে৷ তবে এটা ঠিক যদি কেউ বিচ্ছিন্নভাবে সহযোগিতা করতে এগিয়ে নাও আসে তাহলেও দেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে৷

অলক্যাডার অ্যসোসিয়েশনের মধ্য দিয়ে নিজেদের সম্পর্ক বাড়ানোর তাগিদ দেন কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান। সুন্দর আয়োজনের জন্য ৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়শনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি এই ধরনের অনেক অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও এই অনুষ্ঠানটি ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। কারণ গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে জাতীয় দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে কাজ করার কারণেই গুরুত্বপূর্ণ একটি বইয়ের লেখককে সুদুর মিসর থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মোহসেন আল আরিশি তার বইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে মেয়ে শেখ হাসিনার নানা সময়ের খুনসুটি যেমন আরিশি বইটিতে উল্লেখ করেছেন, তেমনি ১৯৭৫ সালের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড নিয়েও কথা বলেছেন মিশরীয় সাংবাদিক। শেখ হাসিনার জন্ম থেকে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত পুরো চিত্র নিজের চোখে কীভাবে দেখেছেন তাও উল্লেখ করেছেন বইটিতে।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মোহসেন আল আরিশি বলেন, শেখ হাসিনা অ্যাকসেপশনাল। কারণ তিনি দীর্ঘদিনের ধর্মীয় ট্যাবু ভেঙে নারীর ক্ষমতায়নে তিনি নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। সফলও হয়েছেন। তিনি অনেক মুসলিম দেশের পুরুষ শাসকদের চেয়ে সফল। কারণ অন্যসব মুসলিম দেশের শাসকরা যখন ব্যস্ত যুদ্ধ নিয়ে তখন তিনি বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করা, স্থিতিশীল করায় কাজ করছেন। শেখ হাসিনা তাতে সফলও হয়েছেন।

আরিশির লেখা বইয়ের অনুবাদক ইসফানদিয়র আরিওন কিভাবে বইটি অনুবাদের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন তা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা বইয়ের মূল বক্তব্যও তুলে ধরেন তার বক্তব্যে।

বক্তব্যের পালা শেষ হওয়ার পর সংগঠনের ম্যাগাজিন, সদস্যদের লেখা একাধিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। সবশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড চিরকুটের শিল্পীরা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল হাদী। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় দে সজল ও শামীমা সুলতানা স্মৃতির উপস্থাপনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে ৩১তম বিসিএসের বিভিন্ন ক্যাডারের সদস্যরা অংশ নেন।

(ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/বিইউ/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :