বিধিনিষেধ থোড়াই কেয়ার, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০২২, ২৩:০২ | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২২, ২৩:০৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
বাণিজ্যমেলায় উপচেপড়া ভিড়। নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই।

মহামারি করোনাভাইরাসের উদ্বেগজনক ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সরকারের দেওয়া ১১ দফা বিধিনিষেধ গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তবে কাগজেপত্রে বিধিনিষেধ থাকলেও বাস্তবে জনসাধারণ এসবের থোড়াই কেয়ার করছেন। স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও। নির্দেশনা মানাতে প্রশাসনেরও নেই তেমন কোনো তৎপরতা। যদিও বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, এখনই সতর্ক না হলে সামনে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করতে পারে।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ৩৭৮ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মারা গেছেন ছয়জন৷ মাত্র একদিনের ব্যবধানে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে এক হাজারের বেশি৷ একদিনে এর চেয়ে বেশি চার হাজার ৬৯৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ২৬ আগস্ট৷ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্তের হার বাড়ছে৷ নতুন রোগীসহ মোট শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে বর্তমানে ১৬ লাখ নয় হাজার ৪২ জন৷ তাদের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ১২৯ জন৷

ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের ১১ দফা নির্দেশনার দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার রাজধানীসহ সারাদেশে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়ার দৃশ্য চোখে পড়েছে পদে পদে। ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর অদূরে বাণিজ্য মেলায় প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। রাজধানী থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে গিয়েছেন পূর্বাচলের এই বাণিজ্য মেলায়। সেখানে দোকানগুলোতে দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়। মাস্ক পরায় চরম অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। নির্দেশনার নিয়ম অমান্যকারীকে আইনের আওতায় আনার কথা বলা হলেও মাঠে তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।

১০ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা বিধিনিষেধ অনুযায়ী, করোনার টিকা নেওয়ার সনদ দেখিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁয় খেতে হবে। তা মানতে দেখা যায়নি কোথাও। মগবাজার একটি হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি আসনই ভরা। লোকজন অনায়াসে আসছে, খেয়ে চলে যাচ্ছে। কারো টিকার সনদ দেখা হয়নি। রেস্তোরাঁর ম্যানেজার বলেন, এটা মানা সম্ভব নয়। আমরা কীভাবে একজনকে বলবো সনদ দেখান, এটা আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়।

রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বাসে অধিকাংশ যাত্রীর মাস্ক নেই। চালক-সহকারীরও অনেকের মাস্ক নেই। থাকলেও সেটা ঝুলছে থুতনিতে।

সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জানিয়েছেন, আগামীকাল শনিবার থেকে বাসে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সব পরিবহনকে সমিতি চিঠি দিয়েছে। মাস্ক না পরা যাত্রীকে বাসে তোলা হবে না। চালক-শ্রমিককেও পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। বাসে স্যানিটাইজার রাখতে হবে।

এদিকে বিপণিবিতান ও মার্কেটেও একই দৃশ্য দেখা গেছে।  ভেতরে ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক ছাড়াই কেনাবেচার কাজ সারছেন। নিউমার্কেট এলাকার সড়কে ছুটির দিনে ফুটপাতে শীতের কাপড়ের জমজমাট বাজার জমে। ক্রেতার ভিড়ে সড়কে যানজট লেগে যায়।

তবে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে ধীরে ধীরে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। শুক্রবার থাকায় আজ তেমন কড়াকড়ি করা হয়নি। তবে আগামীকাল শনিবার থেকে সবখানে কড়াকড়ি করা হবে।

ডিএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) ফারুক হোসেন বলেন, শুধু জরিমানা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। অভিযানের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারও চালানো হচ্ছে। রাজধানীর ৫০ থানা এলাকায় পুলিশের আলাদা টিম মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে উৎসাহিত করছে। এসব টিমের তৎপরতা আগামী দিনে আরও জোরদার হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/জেবি)