নার্স-আয়ার ডাক্তারি: প্রসবকালে কাটল নবজাতকের কপাল

প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:৩০ | আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:৩১

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফরিদপুরে নবজাতক প্রসব করাতে গিয়ে কপাল কেটে ফেলেছে নার্স ও আয়া। শনিবার সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালে ডাক্তারের অনুপস্থিতিতেই প্রসূতি মায়ের পেট থেকে নবজাতক বের করতে গিয়ে শিশুটির কপালের একটি অংশ কেটে ফেলে নার্স ও আয়ারা।

এ ব্যাপারে রোগীর লোকজন প্রশাসনে অভিযোগ জানালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে চায়না বেগম নামের ওই নার্স, হাসপাতালের পরিচালক পলাশ ও দালালকে আটক করে। এই ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার মইজুদ্দিন মাতব্বর পাড়ার শফিক খানের স্ত্রী প্রসূতি রুপা বেগমকে শনিবার ভোরে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সকালে হাসপাতালটিতে কোনো লোক না পেয়ে অপেক্ষায় থাকে পরিবারটি। পরে দালালদের উস্কানিতে পাশের আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা।

সেখানে চিকিৎসক ছাড়াই প্রসূতি মায়ের পেট থেকে নবজাতক বের করতে গিয়ে শিশুটির কপালের একটি অংশ কেটে ফেলে নার্স ও আয়ারা।

এ দিকে বিষয়টি জানাজানি হলে প্রসূতির পরিবার থানায় ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে। পরে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ও কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযোগের সত্যতা পেলে হাসপাতালটির পরিচালক, আয়া ও দালালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এই ঘটনায় প্রসূতির পরিবার আল-মদিনার হাসপাতালর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

আহত নবজাতকের ফুপু হোসনেয়ারা অভিযোগ করে বলেন, সকাল ৮টার দিকে ওই প্রাইভেট হাসপাতালের চায়না বেগম ও দুজন আয়া ডাক্তার ছাড়াই প্রসূতির পেট থেকে সন্তান বের করতে গিয়ে শিশুটির কপালের একটি অংশ কেটে রক্তাক্ত করে ফেলে। পরে দ্রুত বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গিয়ে নয়টি সেলাই দেওয়া হয় নবজাতকের।

হোসনেয়ারা বলেন, এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমরা।

ফরিদপুর সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. মাসুদুল আলম জানান, এ জাতীয় ঘটনা কাম্য নয়। আমরা ইতিমধ্যে হাসপাতাল থেকে তিনজনকে আটক করেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য বিভাগকে আমরা বলেছি।

ফরিদপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.  ফাতেমা করিম বলেন, বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উদাসীনতা মেনে নেয়া হবে না। আমরা প্রসূতি মায়ের অপারেশন ও এইজাতীয় কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ডাটাবেজ তৈরি করছি এ ব্যাপারে মনিটরিং জোরদার করা হবে।

ফরিদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন কর জানান, আমরা প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক, আয়া ও এক দালালকে আটক করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১৫জানুয়ারি/কেএম)