ভাই খোরশেদ ১৩ হাজার পেলে তৈমূরের ভোট এত কম কেন?

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ২১:২৭ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ২১:৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
তৈমূর আলম খন্দকার ও মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ (ফাইল ছবি)

নারায়ণগঞ্জের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১১টি ভোটকেন্দ্রে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার মোট ভোট পেয়েছেন সাত হাজার ২৬৪। আর নৌকার সেলিনা হায়াৎ আইভী পেয়েছেন সাত হাজার ৩৬১ ভোট। নিজের ভোটকেন্দ্রসহ এই ওয়ার্ডে তৈমূর আলম আইভীর চেয়ে কম পেয়েছেন ৯৭ ভোট।

অথচ এই ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ঠেলাগাড়ি প্রতীক নিয়ে চতুর্থবারের মতো কাউন্সিলর হয়েছেন তৈমূরের ছোট ভাই যুবদল নেতা মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। যিনি ভোট পেয়েছেন ১৩ হাজারেরও বেশি।

করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, মৃতদের দাফন-কাফনে এগিয়ে বাহবা কুড়ানো খোরশেদ নির্বিঘ্নে কাউন্সিলর হবেন, এটা অনেকটা নিশ্চিত ছিল। তবে প্রশ্ন উঠেছে নিজে ১২ হাজার ৭৭০ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়ে ওয়ার্ড দখলে রাখলেও ভাই তৈমূর কেন অর্ধেক ভোট পেলেন। শুধু তাই নয়, মেয়র পদে অন্য বিজয়ী প্রার্থীর চেয়েও ৯৭ ভোট কম পেয়েছেন খোরশেদের ভাই।

কাউন্সিলর খোরশেদ মোট পান ১৩ হাজার ৭৯২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পান মাত্র এক হাজার ২২ ভোট।

রবিবার অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

কোন কেন্দ্রে কত ভোট পেয়েছেন তারা

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের এ নম্বর কেন্দ্রে তৈমূর আলম পেয়েছেন ৯৭৬ ভোট। আইভী পেয়েছেন ৮১৪। খোরশেদ পেয়েছেন এক হাজার ৬৮১ ভোট।

একই কলেজের দুই নম্বর কেন্দ্রে তৈমূর পেয়েছেন ৭৭৪ ভোট। আইভী পেয়েছেন ৫০৬ ভোট। খোরশেদ পেয়েছেন এক হাজার ২৫২ ভোট।

আদর্শ স্কুলের ভোট কেন্দ্র-১ এ তৈমূর পেয়েছেন ২৬৭ ভোট। আর আইভী পেয়েছেন ৩৪৭ ভোট। এখানে খোরশেদ পেয়েছেন ৫৯৬ ভোট।

একই স্কুলের দুই নম্বর কেন্দ্রে তৈমূর পেয়েছেন ৩৫২ ভোট। আইভী পেয়েছেন ৪৯২ ভোট। এই কেন্দ্রে খোরশেদ পেয়েছেন ৮০১ ভোট। এই স্কুলের ভোটকেন্দ্র-৩ এ তৈমূর পেয়েছেন ৬৮০ ভোট। আর আইভী পেয়েছেন ৩৬২ ভোট। এখানে খোরশেদ পেয়েছেন এক হাজার ৩৮ ভোট।

নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে তৈমূর পেয়েছেন ৯৮২ ভোট। আর আইভী পেয়েছেন ৫২৭ ভোট। এই কেন্দ্রে কাউন্সিলর খোরশেদ পেয়েছেন এক হাজার ৫৪৩ ভোট।

নারায়ণগঞ্জ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোট কেন্দ্র-১ এ তৈমূর আলম পেয়েছেন ৬৪৪ ভোট। আইভী পেয়েছেন ৫৯০ ভোট। খোরশেদ এই কেন্দ্রে পান এক হাজার ৭৯ ভোট।

এই কলেজের ২ নম্বর কেন্দ্রে তৈমূর ৪৯১ ভোট। আইভী পেয়েছেন ৪১২ ভোট। খোরশেদ পান ৭৮৯ ভোট।

আদর্শ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৈমূর পেয়েছেন ৪৯৩ ভোট। আর আইভী পেয়েছেন ১০৪৭ ভোট। এখানে খোরশেদ পান এক হাজার ৪১৯ ভোট।

নারায়ণগঞ্জ আইডিয়েল স্কুল কেন্দ্রে তৈমূর পেয়েছেন ২৮৯ ভোট। আর আইভী পেয়েছেন ৭৪৪ ভোট। খোরশেদ এখানে পেয়েছেন ৯৮১ ভোট।

সরকারি তোলারাম কলেজের ভোট কেন্দ্র-১ এ তৈমূর পেয়েছেন ৭৭৭ ভোট। আর আইভী পেয়েছেন ৯০৬ ভোট। এক হাজার ৫৪৩ ভোট পেয়েছেন খোরশেদ।

এই কলেজের দুই নম্বর ভোট কেন্দ্রে তৈমূর পেয়েছেন ৫২৯ ভোট। আর আইভী পেয়েছেন ৬১৪ ভোট। এখানে খোরশেদ পেয়েছেন এক হাজার ৭০ ভোট।

 ‘টিম খোরশেদ’ নামে একাধিক গ্রুপ তৈরি করে পুরো করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অন্যন্য নজির গড়েছেন কাউন্সিলর খোরশেদ। নতুন করে ওমিক্রন ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় আবারো সক্রিয় হয়েছেন টিম খোরশেদের সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খোরশেদ তার কাজের কারণে মানুষের কাছে যে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে ভোটের ফলাফলে। অনেকে খোরশেদকে কাউন্সিলর পদে ভোট দিলেও মেয়র পদে তার ভাইকে ভোট দেননি। এতেই দুই ভাইয়ের প্রাপ্ত ভোটে এত ব্যবধান।

তবে খোরশেদ এই ব্যবধানের জন্য দায়ী করছেন ইভিএমকে। তিনি দাবি করেন, ইভিএমের মাধ্যমে যে কারচুপি সেটা মেয়রের ভোটে করা হয়েছে। কাউন্সিলরের ভোটে করা হয়নি। এ কারণেই ভোটের এত ব্যবধান।  

(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/বিইউ/জেবি)