তসলিমা নাসরিনকে কেন ‌‘মৃত’ বলছে ফেসবুক?

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ২২:১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিতর্কিত ও নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিনকে কে না চেনেন! তবে চেনা না চেনা নিয়ে কথা নয়, কথা হলো এই সময়ে হঠাৎই আলোচনার জন্ম দিয়েছে তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি। সেখানে ফেসবুক লিখে রেখেছে ‘রিমেম্বারিং তসলিমা নাসরিন’। সাধারণত মৃত মানুষের আইডির ক্ষেত্রে এমনটা হয়ে থাকে। কিন্তু ফেসবুক কেন তসলিমাকে মৃত বলছে। অথচ তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন তিনি মারা যাননি।

তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক ঘেঁটে জানা যায়, তিনি মৃত্যু বিষয়ক ভাবনা নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন। এই স্ট্যাটাসের ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই ফেসুবক ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখককে মৃত দেখাচ্ছে!

‘রিমেম্বারিং তসলিমা নাসরিন’-এর সঙ্গে আরও কিছু লেখা যুক্ত করে ফেসবুক, যেটা সাধারণত মৃত ব্যক্তিদের আইডিতে ফেসবুক করে থাকে। সেখানে লেখা রয়েছে- ‘আমরা আশা করি আপনারা যারা তসলিমা নাসরিনকে ভালোবাসেন, তারা তাকে স্মরণ করার জন্য তার প্রোফাইল পরিদর্শন করতে পারেন।’

প্রশ্ন আসছে, জীবিত তসলিমাকে মৃত ঘোষণা করল কে? মূলত মৃত ব্যক্তির ফেসবুক আইডি রিমেম্বারিং করতে মৃত ব্যক্তির ফেসবুক বন্ধুরা তার আইডিটি রিমেম্বারিং করতে ফেসবুকের একটি লিংকে ঢুকে ফরম পূরণ করতে হয়।  কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে প্রমাণসাপেক্ষে সেই অ্যাকাউন্ট রিমেম্বারিং করে দেয় ফেসবুক।

মূলত তসলিমা নাসরিনের একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করেই তার আইডিটি রিমেম্বাররিং করা হয়। তসলিমা নাসরিনের করা সেই পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আমি চাই আমার মৃত্যুর খবর প্রচার হোক চারদিকে। প্রচার হোক যে আমি আমার মরণোত্তর দেহ দান করেছি হাসপাতালে, বিজ্ঞান গবেষণার কাজে। কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনে কারও জীবন বাঁচুক। কারও চোখ আলো পাক।’

তিনি আরও লিখেন, ‘প্রচার হোক, কিছু মানুষও যেন প্রেরণা পায় মরণোত্তর দেহ দানে। অনেকে কবর হোক চান, পুড়ে যাক চান, কেউ কেউ চান তাদের শরীরের পোড়া ছাই প্রিয় কোনো জায়গায় যেন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কেউ কেউ আশা করেন, তাদের দেহ মমি করে রাখা হোক। কেউ আবার বরফে ডুবিয়ে রাখতে চান, যদি ভবিষ্যতে প্রাণ দেওয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার হয়!’

ফেসবুক পোস্টের শেষাংশে তিনি লিখেন, ‘সে অসুখ-বিসুখে আমি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করি এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত করবো। কোনো প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে আমার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই, ঠিক যেমন বিশ্বাস নেই কোনো কুসংস্কারে। জীবনের একটি মুহূর্তেরও মূল্য অনেক। তাই কোনো মুহূর্তই হেলায় হারাতে চাই না।’

তবে তার আইডি রিমেম্বারিংয়ের ক্ষেত্রে তার যে স্ট্যাটাসের কথা বলা হচ্ছে তিনি সেখানে একবারও লিখেননি আপনারা ফেসবুকে আমার আইডি মৃত বলে আবেদন করুন। তার এক ঘনিষ্ঠজন নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনি একটি তাত্ত্বিক লেখা লিখেছেন, অতি উৎসাহীরা তার পোস্টের অপব্যাখ্যা করে রিমেম্বারিংয়ের জন্য আবেদন করেন। ফেসবুকও কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়া সেটি এপ্রুভ করে ফেলে।

তিনি আরও বলেন, এসব বিষয়ে ফেসবুকের একটু যত্নবান হওয়া উচিত। অন্তত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর ছাড়া তার মতো একজন আন্তর্জাতিক মানের লেখকের আইডি রিমেম্বারিংয়ে দেওয়া বিব্রতকর।

(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/এসআর/জেবি)