কাজে যেতে না চাওয়ায় সহকর্মীকে হত্যা!

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

কাজে যেতে না চাওয়ায় সহকর্মীকে হত্যার অভিযোগে মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বুধবার দুপুরে সিআইডির সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল আমিন।

গত ৫ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ব্রহ্মন্দী ষাড়পাড়া গ্রামে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহকর্মীর এলোপাতাড়ি মারপিটে মারা যান আবদুল করিম নামের এক বৃদ্ধ। ওইদিন সকাল সাতটার দিকে একই গ্রামের আবদুল করিমের সহকর্মী রংমিস্ত্রি মনির হোসেন তার বাড়িতে এসে তাকে কাজে যাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু আবদুল করিম তাকে জানান যে, তিনি আজ তার সাথে কাজে যেতে পারবেন না। মনির হোসেনের সাথে কাজে যেতে না চাওয়ায় মনির হোসেন তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে মনির হোসেন দ্রুত পালিয়ে যান।

আবদুল করিমের ডাক-চিৎকারে তার পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। পরে হাসপাতাল তার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য দিলে তারা পরীক্ষার টাকা আনতে আবদুল করিমকে নিয়ে বাড়িতে যান। বাড়িতে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই  আঘাতজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়।

নিহত আবদুল করিম নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ব্রহ্মন্দী ষাড়পাড়া গ্রামের মৃত বাছিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রংমিস্ত্রি ছিলেন।

এ ঘটনায় নিহত আবদুল করিমের স্ত্রী মোসা. নারগীছ বাদী হয়ে মনিরের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। আড়াইহাজার থানার মামলা নম্বর-১১, তারিখ- ০৭/০১/২০২২ ইং। ধারা- ৩০২ পেনাল কোড-১৮৬০।

সংবাদ সম্মেলনে খায়রুল আমিন বলেন, ওই ঘটনার পরে বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তী সময়ে মনির হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। পরে সিআইডির এলআইসির একটি চৌকস দল মঙ্গলবার দল শরীয়তপুরের গোসাইরহাট এলাকা থেকে মনিরকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত মনিরের বরাত দিয়ে খায়রুল আমিন বলেন, প্রায় আট বছর ধরে আবদুল করিম ঢাকা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে রংমিস্ত্রির কাজ করে আসছিলেন। তার সাথে প্রায় চার বছর ধরে কাজের সুবাদে মনিরের পরিচয় হয়। মনির মূলত আবদুল করিমের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। তাদের  দুজনের মধ্যে কাজের মজুরিসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মনোমালিন্য দেখা দেয়। আবদুল করিমের জন্য দৈনিক হাজিরা ৪০০ টাকা আর সহকারী হিসেবে মো. মনির তার জন্য দৈনিক হাজিরা ৫০০ টাকা ঠিক করে আবদুল করিমকে জানান। আবদুল করিম হেড মিস্ত্রী এবং তার যন্ত্রপাতি দিয়েই মূলত ঠিকাদারির কাজ করা হয়। তবু তার দৈনিক হাজিরা কম বিধায় তিনি মনিরের সাথে কাজে যেতে অস্বীকৃতি জানান। তখন মনির হোসেন উত্তেজিত হয়ে তার সাথে কাজে যেতে না চাওয়ায় এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে দ্রুত পালিয়ে যান।

(ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/এএ/জেবি)