কখন ভিটামিন ডি গ্রহণ বন্ধ করবেন?

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:১২

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন ডি। এমনকি এটি শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের ক্ষেত্রেও বেশ কার্যকরী। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভিটামিন ডি’র বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য মানুষের দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

করোনাভাইরাসের কারণে যাদেরকে বেশ ভুগতে হয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে, তাদের দেহে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দেহে ভিটামিন ডি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

 

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করেন তাদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা ৫৪ শতাংশ কম। যাদের দেহে ভিটামিন ডির ঘাটতি রয়েছে তাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, বিভিন্ন ধরনের জটিলতায় বেশি ভোগেন এবং অনেক ক্ষেত্রেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।

 

অন্যান্য রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে দেহে ভিটামিন ডি’র অভাব করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। ভিটামিন ডি’র প্রধান উৎস সূর্যের আলো। যারা প্রতিদিন এই ভিটামিন গ্রহণ করছেন তাদের মধ্যে ঠিক কী পরিমাণ মানুষ করোনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাচ্ছেন তা এখনো পরিষ্কার নয়।

 

ভিটামিন ডি মূলত শরীরের স্নেহপদার্থ দ্রবীভূত করার একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। যা সূর্যালোকের প্রভাবে শরীরে কোশে কোশে তৈরি হয়। হাড় মজবুত করতে তো বটেই, শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্যেও ভিটামিন ডি অত্যন্ত উপকারী। তবে ভিটামিন ডি অন্যান্য ভিটামিনেরচেয়ে কিছুটা আলাদা। এক-এক ধরনের হরমোনও বলা হয়। সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে ত্বক থেকে এক ধরনের স্টেরয়েড হরমোন নিঃসৃত হয়।

 

সূর্যের আলো ছাড়াও কয়েকটি খাবার যেমন দুধ, ডিম থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। তবে শরীরের ভিটামিন ডি-র অত্যধিক ঘাটতি দেখা দিলে তখন অনেকেই ভরসা রাখেন ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টের উপর। তবে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টের অত্যধিক সেবনে অনেক সময়ে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কয়েকটি শারীরিক উপসর্গ আপনাকে জানান দেবে যে, ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টে খাওয়া বন্ধ করার সময় এসেছে।

 

হাইপারক্যালশেমিয়া

 

ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি করে হাড় সুস্থ রাখে। তবে শরীরে ভিটামিনডি-র অতিরিক্ত ব্যবহার রক্তে ক্যালশিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যাকে বলে হাইপারক্যালশেমিয়া। সাধারণত শরীরে ক্যালশিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা ৮.৫-১০.৮ মিলিগ্রাম। স্বাভাবিক মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে বমি বমি ভাব, বমি, দুর্বলতার মতো শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়।

 

হাড়ে যন্ত্রণা

 

শরীরে ভিটামিন ডি-র উচ্চ মাত্রার কারণে রক্তে এই ভিটামিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে হাড়ের সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি শুরু হয়। এই কারণে হাড়ের যন্ত্রণা বা হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়।

 

কিডনির সমস্যা

 

হাইপারক্যালশেমিয়ামের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে কিডনি। এ ছাড়াও ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দেয়। এই রোগটিকে বলা হয় পলিউরিয়াও।

 

চিকিৎসকের মতে, ভিটামিন ডির অভাবে শিশুদের রিকেট, বড়দের অস্টিওপোরোসিস, অস্টিওম্যালেসিয়ার মতো নীরবঘাতক রোগ হয় যাতে মানুষের হাড় ভেঙ্গে যায়, মানুষ পঙ্গু হয়ে যায়। ভিটামিন ডির স্বল্পতার সাথে ব্রেইন, হার্টের রোগের সম্পর্ক রয়েছে, এমনকি ক্যানসার ও কিছু সংক্রামক রোগেরও সম্পর্ক রয়েছে। তবে আমরা যদি একটু সচেতন হই, বিশেষ করে খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন এনে দুধ জাতীয় খাবার যথাযথ পরিমাণে গ্রহণ করি তাহলেই এসব রোগ থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকতে পারব।

 

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/আরজেড/এজেড)