কোতয়ালী থানার এসআইসহ দুজনকে আদালতে তলব

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:২৭

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মুন্সীগঞ্জ জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগের একটি মামলায় রাজধানীর কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই-নিরস্ত্র) রুবেল মল্লিকসহ দুইজনকে তলব করেছেন আদালত।

গত মঙ্গলবার ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন। সমনে আগামী ২৯ মার্চ আসামিদের হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানা গেছে।

মামলার আসামি হলেন, শ্যামপুর থানাধীন পশ্চিম ধোলাইপাড়স্থ যুক্তিবাদী গলির আব্দুল ওয়াব মিয়ার ছেলে ডিবি পুলিশের সহকরী কমিশনার (এসি) পরিচয়দানকারী খসরু রোমান।

মামলায় বলা হয়, ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি বাদী সিআইডি পুলিশের ট্রেনিং সেন্টার মালিবাগ, ঢাকা থেকে বিকালে ভাটারা থানাধীন নূরের চালা এলাকার বোনের বাসায় আসেন। সন্ধ্যার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমেরিকান অ্যাম্বাসির অপর সাইডে দাঁড়ান। আনুমানিক সময় সন্ধ্যা ৭টায়  পুলিশের ডাবল কেবিন পিকআপ ভ্যান বাদীর কাছে এসে দাঁড়ায়।

তখন দু’টি লোক গাড়ি থেকে বের হয়, একজন বলেন “আমি ডিবির এসি খসরু রোমান, অন্যজন বলেন আমি রুবেল মল্লিক এস.আই”। তখন বাদী ডিবির এসি পরিচয় দানকারী খসরু রোমানের মাজায় পিস্তল ও হ্যান্ডকাপ দেখতে পান। তখন তারা বাদীকে পুলিশের পিকআপ গাড়িতে তোলেন এবং ২নং আসামি বাদীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও চাকরির আইডি কার্ড কেড়ে নেন এবং বাদীর হাতে হ্যান্ডকাফ লাগান। আসামি রুবেল মল্লিক গাড়িতে থাকা গামছা দিয়ে বাদীর চোখ বাঁধেন। খসরু রোমান বাদীকে বলেন তোর শ্বশুর খারাপ লোক, আমার বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছিল। তোর অবস্থা এখন শেষ। তোকে তোর শ্বশুর বাঁচাতে পারবে না। বাদী খসরু রোমানকে চিনতেন না। তারা বাদীর কাছে ২০ (বিশ) লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং বলে টাকা দিলে তোকে ছেড়ে দেবো। তখন তারা বলাবলি করেন, সরকারি অফিসার টাকা নিয়ে ছাড়লে আমরা ফেঁসে যাবো। ওকে ইয়াবার মামলা দিই। অন্য একজন বলেন, সে মাদকের বড় অফিসার। তাকে মাদক মামলা দিলে কাজ হবে না। চল ওকে বাসায় নিয়ে যাই এবং আমাদের কাছে যে স্বর্ণের বার আছে তা দিয়ে ডাকাতি মামলায় আটক দেখিয়ে চালান দেই। রাত আনুমান ১টায় বাদীকে নিয়ে বাদীর বোনের বাসায় আসেন তারা। সে বাসায় এসআই রুবেল মল্লিকসহ অন্যরা ট্রাভেল ব্যাগের ভেতর স্বর্ণের বার ঢুকিয়ে তা জব্দ দেখানোর চেষ্টা করেন। এসময় পরিবারের লোকেরা প্রতিবাদ করলে খসরু রোমান অত্যন্ত খারাপ ভাষায় গালি দেন এবং পিস্তল উঁচিয়ে হত্যার হুমকি দেন। আর বলেন, বেশি কথা বললে আমাকে (বাদী) ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলবো। এরপর বাড়িওয়ালাকে ডেকে স্বর্ণের বার সাদা কাগজে সই করতে বলেন তারা। তিনি সাদা কাগজে বই না করায় পরে ওই বাসা থেকে নগদ ২৬ লাখ টাকা, আইফোন ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে যান। এরপর বাদীকে নিয়ে আসামিরা বাদীর বাসায় যায় এবং সেখান থেকে নগদ দুই লাখ টাকা নিয়ে নেন। পরে নিজেদের অপরাধের দায় থেকে বাঁচানোর জন্য কোতয়ালী থানার মামলা নং- ১২, তাং-১১/০১/১০২১ ধারা- ১৭০/৩৯৫ দ-বিধির অজ্ঞাত নামা আসামীর ডাকাতির মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে চালান করেন। সে মামলায় বাদী কিছুদিন জেলও খাটেন।

মামলায় বলা হয়, আসামিরা নিজের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে বাদির স্ত্রী, বোনজামাই ও বোনের সামনে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে জখম করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরবর্তীতে বাদী জানতে পারেন খসরু রোমান আদৌও ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা না বা পুলিশের কোন ধরনের সদস্যও নন। সে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য।

ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/ইএস