তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝে পাথওয়ের শীতবস্ত্র বিতরণ

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশে ২০১৩ সালে মন্ত্রিসভা হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ এই জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয়ে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়ে।

সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে হিজড়ারাও আলাদা একটি লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে৷ তবে প্রচলিত ধারণাকে ভেঙে এই তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতির পাশাপাশি সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচার জন্য বেসরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।

এ বছরও সেই আশাই দেখাচ্ছে পাথওয়ে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়ে বরাবরের মতো এ বছরও শীতের প্রথম প্রহর থেকে সমাজের নিম্ন আয়ের, হতদরিদ্রের মাঝে শীতবস্ত্র সোয়েটার, কার্ডিগান ও কম্বল বিতরণ করে আসছে।

তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ঢাকা-মিরপুরের ১০ নম্বর জুটপট্টি ও মণিপুরে বসবাসরত অবহেলিত তৃতীয় লিঙ্গ যথাক্রমে শানু ও সোনালী দলের মাঝে দুই শতাধিক শীতবস্ত্র বিতরণ করে পাথওয়ে।

সংগঠনটির চেয়ারম্যান মো. রইজুর রহমান ও নির্বাহী পরিচালক মো. শাহিন উপস্থিত থেকে হিজড়াদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। এসময় তারা নিজেদের অবহেলিত ও মানবেতর জীবনযাপনের বিভিন্ন প্রতিকূলতা এ সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

পাথওয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. শাহিন বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ফের বেড়েছে। অনেক দরিদ্র, খেটে খাওয়া মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। সেখানে হিজড়াদের বেঁচে থাকার বিষয়টি আরও প্রতিকূল হয়ে উঠছে। তাদের জন্যই মূলতঃ আজকের এই উদ্যোগ।

তিনি বলেন, আমরা হিজড়াদের কর্মঠ ও পরিশ্রম করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহে উৎসাহিত করছি। পাথওয়ে হিজড়াদের জন্য একটি স্কিল ডেভলপমেন্ট ট্রেইনিং সেন্টার ও একটি অনলাইন ফ্রিলেন্সিং জব মার্কেটপ্লেস তৈরি করতে যাচ্ছে, যাতে করে তারা নিজেরাই চাকরির বাজারে তারা অবহেলিত না থাকে, কারো কাছে হাত পাততে না হয়। একটা সময় হিজরারা সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যতে দেখা পাবে বলে আশা করেন তিনি।

সংগঠনটির চেয়ারম্যান মো. রইজুর রহমান বলেন, মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলো আমাদেরই কারো ভাই কারো বোন। ওরাও কোনো না কোনো মায়েরই সন্তান। কিন্তু কেন সমাজের বেশিরভাগ মানুষ তাদের ভালো চোখে দেখবে না? তাদের কী অপরাধ? অভাবে অথবা কর্মসংস্থান না থাকায় তারা কেন বঞ্চিত থাকবে? ওরাও সমাজ তথা রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। দরকার সবার সুদৃষ্টি, সহযোগিতা, স্থায়ী কর্মসংস্থান। মানুষ মানুষের জন্য। এটি বিবেচনায় হিজড়াদের জন্য উদ্যোগী হয়েছে পাথওয়ে।

পাথওয়ে এর আগে ২০২০ সালে জীবনমান উন্নয়ন ও হাত পেতে রোজগার থেকে বেড়িয়ে স্বাবলম্বী করতে হিজড়াদের জন্য 'ফ্রি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ' কর্মসূচি শুরু করে পাথওয়ে ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল।

(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/কেএম)