চাল ভালো রাখার কার্যকরী কৌশল

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৫৬

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে মানুষের প্রধান খাদ্যশস্য চাল। বাংলাদেশে বিভিন্নভাবে ভাত খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। পানিতে চাল ফুটিয়ে ভাত রান্না করা হয়। চীন, জাপান ও কোরিয়ায় আঠালো ভাত খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। ধানের বিভিন্ন প্রকরণের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রকার সুগন্ধিযুক্ত ভাত রান্না হয়। মনসামঙ্গল কাব্যে প্রায় ৬৫ রকমের ধানের নাম পাওয়া গেছে।

ভাতে থাকে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট বা স্টার্চ, যার ফলে শরীরে শক্তি জোগাতে যার বিরাট ভূমিকা নেয়৷ ফাইবার থাকার ফলে পেটের সমস্যা কমাতে, ওজন, সুগার এবং রক্তচাপ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ভাতে আছে প্রোটিন–ভিটামিন–মিনারেলস৷

বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে খেলে সে উপকার আরও বাড়ে৷ বাংলাদেশের ডাল-ভাত খেতে অনেকেই বেশি পছন্দ করেন। তবে এই ভাত খেতে গিয়ে যদি ভাতের মধ্যে পোকা থাকে তবে খুবই অরুচিকর ও বিরক্তিকর মনে হয়। ভাতের খাবারে আয়েশ আর তখন থাকে না। অনেকেই আছেন বাড়িতে বস্তা ভর্তি চাল এনে রাখেন। রোজ রোজ বাজারে যাওয়ার ঝক্কি এড়াতেই এই বন্দোবস্ত।

কিন্তু চাল বেশিদিন থাকলেই তাতে পোকা ধরতে শুরু করে। চাল খেয়ে প্রায় শেষ করে দেয় পোকার দল। এমনকি সেই চালের ভাতও খাওয়া যায় না। ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে ওঠে। ভাত রান্নার আগে চাল যতই ধোয়া হোক না কেন, চোখ ফাঁকি দিয়ে দু-একটি পোকা ঠিকই থেকে যায়। এটি যেমন বিরক্তিকর তেমনই অসহ্যকর। চালে পোকার কারণে একসঙ্গে বেশি চাল রাখতে গিয়ে কখনো কখনো পড়তে হয় সমস্যায়।

চাল একটু পুরনো হতে শুরু করলেই পোকা হতে শুরু করে। চালে পোকা হয় যা একএক করে দূর করা খুবই পরিশ্রমের কাজ৷ আবার পোকা সমেত চাল সেদ্ধ করার কোনও প্রশ্নই আসে না৷ তাই উপায় কী? কী করে বাছবেন চালের পোকা? অনেকেই এই সমস্যা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। তবে কিছু উপায় জানা থাকলে এসব সমস্যার সমাধান করা খুব সহজ। পোকা ধরলে সে চাল নষ্ট তো হয়ই, পোকা বেছে সেই চাল রান্না করলেও সংক্রমণের ভয় থাকে। কিছু সহজ নিয়ম মানলেই কিন্তু চালের এই পোকা দূর করা যায়। প্রয়োজন কেবল সংরক্ষণের ঠিক উপায় জানা।

চাল সব সময় একটি মুখবন্ধ পাত্রে রাখুন। ভালো হয়, প্লাস্টিক না ব্যবহার করে যদি বড় স্টিলের ড্রামে রাখতে পারেন। এতে চাল ভালো থাকে, পোকাও ধরে না। চালে পোকা ধরে গেলে সেই পাত্রে কিছু নিমপাতা রেখে দিন। নিমপাতা না পেলে তেজপাতা ও দিতে পারেন। দেখবেন চালের পোকা চলে গেছে। তাছাড়া চালে পোকা ধরা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আগে থেকেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। এতে পোকা ধরার কোনো সুযোগই থাকবে না।

গুদামে খাদ্যদ্রব্য থাকার সময় চালে, গমে কিছু পোকা জন্মায়। সাধারণত বাড়িতে রোদে দিয়ে দানাশস্যগুলি শুকিয়ে নিয়ে এই পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়। চালে যদি পোকা লেগে যায়, তবে কৌটো ভর্তি করে চাল ফ্রিজে রেখে দিন। ফ্রিজে চার থেকে পাঁচ দিন রাখার পর দেখবেন চালের সব পোকা মরে গেছে। চালের মধ্যে কয়েকটি শুকনো মরিচ দিয়ে রাখুন। তাহলেই আর পোকা আসবে না।

আবার গোলমরিচও চালের পোকা দূর করতে পারে। এজন্য এক মুঠো আস্ত গোলমরিচ চালের পাত্রে দিয়ে রাখুন। অনেকেই চালের পোকা ধরলে রোদে শুকোতে দেন। এতে পোকা মরে যায় ঠিকই, কিন্তু সেই চালে আর ভালো ভাত হয় না। তাই সরাসরি চাল রোদে না রেখে কৌটোসমেত রেখে দিতে পারেন। রোদের তাপে পোকা মরে যাবে। চালের পরিমাণ যদি বেশি হয়ে থাকে তাহলে চাল প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে রাখুন।

চাল সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে সব সময় এয়ার টাইট ফুড কন্টেইনার ব্যবহার করুন। এয়ার টাইট কন্টেইনারে চাল রাখলে চালে পোকা যেমন ধরবে না তেমন চাল স্যাতস্যাতেও হবে না। চাল সব সময় ঠান্ডা যায়গায় রাখুন, স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে চালের পাত্র রাখবেন না। চাল ফুরিয়ে গেলে চালের পাত্র পরিষ্কার করে তার পর শুকিয়ে আবার চাল রাখুন।

(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/আরজেড/জেবি)