করোনা হওয়ার কতদিন পর গর্ভধারণ নিরাপদ?

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৪৪

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

সারা বিশ্ব করোনা মহামারিতে কাঁপছে। বিশ্বের এমন কোন স্থান নেই যেখানে করোনা হানা দেয়নি! করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে গর্ভবতী নারীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। করোনায় গর্ভবতী মায়েরা উচ্চ মৃত্যুঝুঁকিতে আছেন। এই মৃত্যুঝুঁকি যারা গর্ভধারণ করেননি তাদের চেয়ে ৭০% বেশি। সেই সঙ্গে গর্ভধারণের ফার্স্ট ট্রাইমেস্টারে, অ্যাবোরশনসহ আরও নানা জটিলতা করোনাভাইরাসের কারণেই দেখা যেতে পারে।

 

করোনাকালে অতিমারি পর্বে গর্ভধারণ করার যথাযথ সময় বেছে নেওয়াটাও খুব জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, তারা মনে করছেন, এই সময় নির্বাচনের সামান্য হেরফেরে আসন্ন প্রসবাদের নানা ধরনের শারীরিক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। ক্ষতি হতে পারে গর্ভস্থ ভ্রূণের। সদ্যোজাতেরও। সেই আশঙ্কা আরও বেড়ে যায় যদি কোনও মহিলা আগে কোভিডে সংক্রমিত হয়ে থাকেন।

 

আমেরিকার ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’ কিছু দিন আগেই জানিয়েছে, অন্য মহিলাদের চেয়ে আসন্নপ্রসবাদের কোভিডে সংক্রমিত হওয়ার বিপদ বেশি। আর আগে যদি কেউ কোভিডে সংক্রমিত হয়ে থাকেন তা হলে পরবর্তীকালে তার গর্ভধারণের সময় নির্বাচনে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন। নিজের স্বার্থে, গর্ভস্থ ভ্রূণের স্বার্থে, সদ্যোজাতের স্বাস্থ্যের স্বার্থে।

 

সিডিসি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, কোনও মহিলা যদি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে থাকেন কিছু দিন আগে তা হলে তাকে গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কয়েকটি জিনিস ভেবে দেখতে হবে। ভেবেচিন্তে গর্ভধারণের সঠিক সময় নির্বাচন করতে হবে।

 

সিডিসি বা হু’র বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর কোনও মহিলার প্রথম কাজ হবে তা থেকে সেরে ওঠে। সেই সেরে ওঠার পরেও গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা উচিত হবে না। তার জন্য আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। অন্তত আট সপ্তাহ। অর্থাৎ দু’মাস বা তার সামান্য কিছুটা বেশি সময়।

 

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কোভিড সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরেও শরীরের তার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসতে কিছুটা সময় লাগে। এটা সব ধরনের সংক্রমণের ক্ষেত্রেই সত্য। করোনার ক্ষেত্রে তো বটেই। কারণ, কোভিডের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধী অ্যান্টিবডিগুলোর পর্যাপ্ত পরিমাণে গড়ে উঠতে কম করে ছয় থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগেই। গর্ভধারণ করলে যে অ্যান্টিবডিগুলোর আরও কিছুটা বেশি পরিমাণে তৈরি হওয়া প্রয়োজন। আর সেটা সবচেয়ে ভাল হতে পারে সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার অন্তত দু’মাস পর গর্ভধারণ হলে।

 

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এও জানিয়েছেন, বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলে দেখা গিয়েছে, আগে কোনও মহিলা যদি কোভিডে সংক্রমিত হয়ে থাকেন তা হলে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে তার কোনও সমস্যা হয় না।

 

চিকিৎসকের মতে, গর্ভবতী মায়েদের নিরাপদ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা, ভিড় এড়িয়ে চলা, মাস্ক পরা, যথাসম্ভব বাসায় অবস্থান করা এবং হাসপাতালে ভর্তির সময়ে স্ক্রিনিং টেস্ট করা বিশেষত যাদের জ্বর, কাশি, গলাব্যাথার মতো করোনাভাইরাসের উপসর্গ  আছে তাদের জন্য অত্যাবশকীয়।

 

(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/আরজেড/এজেড