একদিনে দুটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ল নীলফামারীর অন্তু

নীলফামারী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ২২:০২

নীলফামারী সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা ভার্সণের দশম শ্রেণির ছাত্র নাফিস ইসতে তৌফিক অন্তু। মহামারী করোনায় বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ার ভুত চাপে অন্তুর ঘাড়ে। বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েনি কখনই।

প্রথমে স্টাপলারের পিন বের করে চেন তৈরি করে রেকর্ড গড়ার চেষ্টা ছিল অন্তুর। পরে দ্রুততম সময়ে ১০টি সার্জিক্যাল মাস্ক পরিধান ও হাতের স্পর্স ছাড়াই কলা খেয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ে অন্তু। অল্প বয়সে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ায় আনন্দিত অন্তুর পরিবারের সদস্য ও বিদ্যালয়ের সহপাঠীসহ শিক্ষকমণ্ডলী।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার নীলকুঞ্জ আবাসিক এলাকার ইউনূছ আলী ও নাসমুন নাহার দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান নাফিস ইসতে অন্তু। অন্তুর বাবা একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে মার্কেটিং বিভাগে চাকরি করেন এবং মা গৃহিনী। পড়াশোনার পাশাপাশি ঘরে বসে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে বিভিন্ন উপাদান উদ্ভাবনের চেষ্টা করে অন্তু। তবে ছোট বেলা থেকেই অন্তুর স্বপ্ন একজন ইঞ্জিনিয়ার হওয়া।

গত বছরের ১৩ এপ্রিল গিনেস ওয়ার্ল্ডে আবেদন করে অন্তু। ৪ মে গিনেস কর্তৃপক্ষ অন্তুর আবেদন গ্রহণ করে ১০টি সার্জিক্যাল মাস্ক দ্রুততম পরিধানের অনুমতি দেয়। অবশেষে ১৪ জুলাই দীর্ঘদিনের পরিশ্রম সফল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ পিলের ৭.৩৫ সেকেন্ডের রেকর্ড ভেঙে ৭.১৬ সেকেন্ডে ১০টি মাস্ক পরে গিনেস ওয়ার্ল্ডে রেকর্ড গড়ে অন্তু।

৬ নভেম্বর রাতে গিনেস ওয়ার্ল্ডের বার্তা এসেছে অন্তুর সফলতার। একই তারিখে হাতের ব্যবহার ছাড়াই একটি কলা মুখ দিয়ে ছোলে আবার খেয়ে কানাডার মাইক জ্যাকের ৩৭.৭ সেকেন্ডের রেকর্ড ভেঙেছে ৩০.৭ সেকেন্ডে। আর ১৯ ডিস্বেবর হাতে পেয়েছে গিনেস ওয়াল্ডের দুটি সনদপত্র।

নাফিস ইসতে তৌফিক অন্তু ঢাকাটাইমসকে জানায়, করোনার সময়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টেলিভিশন দেখে ইচ্ছে জাগে গিনেস ওয়ার্ল্ডে রেকর্ড গড়ার। তারপর অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। আল্লাহর মেহেরবানিতে দুটি রেকর্ড গড়তে সক্ষম হয়েছি। আর একটি রেকর্ড গড়ার প্রস্তুতি চলছে। তবে আমার ইচ্ছে, বড় হয়ে একজন ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন শেষ ইচ্ছেটা পূরণ করতে পারি।

অন্তুর মা নাসমুন নাহার ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমার ছেলে ছোট থেকেই বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। পোশাক কেনার কোন চাহিদা নেই তার। আমরা যা কিনে দেই, সে তাতেই খুশি থাকে। একটু সময় পেলেই যন্ত্রপাতি নিয়ে বসে পড়ে। প্রতিনিয়তই তার নতুন কিছু অবিষ্কারের চিন্তা। তবে সে যে বিশ্ব রেকর্ড করেছে, এতে আমরা গর্বিত।

ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল সরকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিজের প্রচেষ্টায় দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র গিনেজ ওয়ার্ল্ডে দুটি রেকর্ড গড়েছে। আমরা শিক্ষকরা তাকে অনেক হেল্প করেছি। ২০২১ সালে শুধু অন্তু নয়, আমাদের প্রতিষ্ঠানের আরও দুজন বিভিন্ন পর্যায়ে সেরাদের খাতায় নাম লিখিয়েছে। আমরা চাই, আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সবসময় ভালো কিছু করুক। তাদের প্রতিভাগুলো সারাবিশ্বে তুলে ধরুক।

তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষকমণ্ডলীরা শিক্ষার্থীদের সর্বদা সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এমনকি আর্থিকভাবে কেউ অসচ্ছল থাকলেও তাদের সহযোগিতা করা হয়। আমরা শ্রেষ্ঠ কিছু শিক্ষার্থীর ছবি তুলে প্রধান ফটকের সামনে ঝুলিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের পরামর্শ থাকবে, শুধু রেকর্ড গড়া নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না, পড়ালেখার প্রতিও কঠোর নজর রাখতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/আইএইচ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :