খাল উদ্ধারে গিয়ে বাধার মুখে ডিএনসিসি, আটক ৪

প্রকাশ | ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খাল ভরাট করে গড়ে তোলা বহুতল ভবন ও দোকানপাট উচ্ছেদ করে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সে উচ্ছেদে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে নগর কর্তাদের। উচ্ছেদ কাজে বাধা দেওয়ার দায়ে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

রবিবার বেলা ১১টায় উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামের উপস্থিততে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। এ সময় খাল দখল করে গড়ে তোলা ভবন ও দোকানপাট উচ্ছেদ শুরু করলে আসে বাধা। নগর কর্তাদের ও পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বারবার উচ্ছেদে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন স্থানীয় কয়েকজন। তাদের মধ্যে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক তিনজনের নাম পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন ফারজানা কলি, মারুফা কাজল ও লিটন। আটক দুই নারী বাংলাদেশ আওয়ামী মহিলা লীগের মোহাম্মদপুর থানা কমিটির সদস্য বলে জানা গেছে।

উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপস শীল ও ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল-আমিন চারজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তারা বলেন, মোহাম্মদপুরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রামচন্দ্রপুর খালটি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রাখা হয়েছে। খাল দখল করে রাস্তা, বহুতল ভবন, বাজার তৈরি করা হয়েছে। আজ আমরা খাল উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছি। অভিযানের এক পর্যায়ে কিছু লোক বাধা দেন। তাদের অনেককে আমরা পুলিশ দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করায় দুই নারীসহ চারজনকে আটক করা হয়। তাদের মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা। 

এ দিকে বেলা দেড়টার দিকে খালের জায়গায় থাকা অবৈধ ট্রাক স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করতে গেলে সেখানেও বাধার মুখে পড়তে হয় উচ্ছেদকারী দলকে। এ সময় মেয়রের উপস্থিতিতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ।

উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খাল দখল করে ভবন, ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। আগে যারা খালের দায়িত্বে ছিল তারা বিষয়টি অবহেলা করেছেন। এখানে বহুতল ভবন গড়ে তোলা হয়েছে, বাজার বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এগুলো কোনো কিছুরই অনুমোদন নেই। দখলদাররা কারো অনুমতি নেননি। তাই আমিও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে কোনো বৈধ নোটিশ দেব না।’

মেয়র বলেন, ‘খালটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যা থাকার কথা বাস্তবে তার কিছুই নেই, অবৈধভাবে দখল ও স্থাপনা নির্মাণ করে খালটির অস্তিত্ব‌ই বিলীন করে দেওয়া হয়েছে। তাই প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট খালটিকে উদ্ধার করে বুড়িগঙ্গা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।’

ওয়াসা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার কথা উল্লেখ করে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাছে খালগুলো হস্তান্তরের আগে দায়িত্বে থাকা ওয়াসা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার কারণেই খালগুলো দখল ও দূষণে বিপর্যস্ত অবস্থায় উপনীত হয়েছে।’

এসময় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক এবং ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/কারই/জেবি)