শিল্পী সমিতি আমার ভালোবাসা, তাই এত শত্রু: জায়েদ খান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ২০:৪৫

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দুই বারের নির্বাচিত সম্পাদক জায়েদ খান। একই পদে এবারের নির্বাচনেও লড়ছেন এই চিত্রনায়ক। আগামী ২৮ জানুয়ারি ভোট। নির্বাচন উপলক্ষে রবিবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি। জানালেন সমিতির প্রতি তার ভালোবাসা কতোটা।

জায়েদ খান বলেন, ‘আমি যে এখন কত এতিম তা বোঝাতে পারব না। আমার মা মরার আগে রাজারবাগ হাসপাতালে বলে গেছেন, ‘তোমার আর বিয়ে করা লাগবে না। তুমি শিল্পী সমিতি নিয়েই থাকো।’ আমার কাছে শিল্পী সমিতি একটা ভালোবাসার জায়গা হয়ে গেছে। এ জন্যই এত শত্রু।’

জায়েদ জানান, লকডাউন চলাকালে এফডিসির ১১টা কুকুরকেও বাসা থেকে রান্না করে এসে খাইয়েছি। মিশা সওদাগর আর কমিটি শিল্পী সমিতির কি কি উন্নয়ন করেছেন তার ফিরিস্তিও দেন এই চিত্রনায়ক।

জায়েদ খান বলেন, ‘যে শিল্পী সমিতিতে এসে গেটে পকেটের টাকা খরচ করে ফ্লাক্সের চা খেতে হতো, সেখানে এখন দুইটা কফি মেশিন থাকে মিশা-জায়েদের আমলে। তিনটা ফ্রিজ সমিতিতে। ২১টা লাইট জ্বলে। এই শিল্পী সমিতি তো আমরা করেছি। অনেকের চক্ষশূল হয়ে গেছি এত কাজ করে।’

এরপরই অভিনেতা বলেন, এফডিসিতে ১১টা কুকুর আছে। না খেয়ে শুকিয়ে গিয়েছিল। লকডাউনের মধ্যে বাসা থেকে রান্না করে এনে সেই কুকুরগুলোকেও খাইয়েছি। যদি একটা মিথ্যা বলি, আমার বাবা-মা কবরে। তাদের আত্মা শাস্তি পাবে। জীবনটা দিয়ে দিয়েছি শিল্পীদের জন্য। বিনিময়ে অবহেলা পেয়েছি মানুষের। গালি শুনেছি। আমাকে খুনি সাজানো হচ্ছে।’

জায়েদ অভিযোগ করে বলেন, ‘রাত একটার সময় আমাকে মার্ডার কেসের আসামি বানানো হল এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। লোক পাঠানো হয়েছে শিমুর বাসায়, যে আপনারা শুধু একবার জায়েদ খানের নাম বলেন, যে তাকে সন্দেহ করছি। আপনাদের যা লাগে দেবো।’

অভিনেতার প্রশ্ন, ‘এর জন্যই কি দুই বছর পরিশ্রম করে গেলাম। আপনারা বিবেকের কাছে প্রশ্ন করেন, কার বাসায় শিল্পী সমিতির প্যাকেট যায়নি। কার বাসায় আমি গরু জবাই করে মাংস পাঠাইনি?’

জায়েদের ধারণা, ‘কাজ কম করলে আমার দুর্নামও কম হতো। অনেক কাজ করেছি বলে আজ আমার দুর্নামও অনেক। অনেক সংগঠন আমাকে চেপে ধরার চেষ্টা করছে। আমাকে আর মিশা ভাইকে বয়কট করার হুমকি দিয়েছে। কিছু মুখোশধারী লোককে এফডিসির গেটে দাঁড় করিয়ে আমাদের পদত্যাগ চায়। অথচ কতবার আমি ঝুঁকি নিয়ে শিল্পীদের দ্বারে দ্বারে খাবার পৌঁছেছি। এটাই আমার অপরাধ ছিল?’

সামনে উপস্থিত শিল্পীদের উদ্দেশ্য করে জায়েদ বলেন, ‘আপনারা হাত তুলে কেউ বলতে পারেন যে, জায়েদ এই অন্যায়টা করেছে শিল্পীদের সঙ্গে। তাহলে আমি মাথানত করে শিল্পী সমিতি থেকে চলে যাবো। আমার মা-বোন সবাই আমাকে বকে। যে তুই শিল্পী সমিতি করে শেষ হয়ে গেলি। এদিকে আপনারাও বকেন। তাহলে আমি কই যাবো বলেন তো। কাজ করাই কি আমার অপরাধ?’

নিজ প্যানেল থেকে টানা দুইবার সভাপতি নির্বাচিত হওয়া মিশা সওদাগরের প্রসঙ্গ টেনে জায়েদ বলেন, ‘মিশা ভাইয়ের স্ত্রী-সন্তান আমেরিকায় থাকে। ভাবী মিশা ভাইকে সেখানে চলে যেতে বলে, মিশা ভাই যায় না। বলে, তোমাকে একা ফেলে যাবো? আমরা কবরী আপার লাশ কাঁধে তুলেছি, উজ্জ্বল ভাইয়ের বউয়ের লাশ কাঁধে, সাদেক বাচ্চু ভাইর লাশ কাঁধে, রানা হামিদের লাশ কাঁধে। আর কত লাশ কাঁধে তুলব বলেন তো? কাঁধটা তো ব্যথা হয়ে গেছে।’

প্রমঙ্গত, দুই মেয়াদে টানা চার বছর ধরে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থেকে জায়েদ খান অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বহু শিল্পী কাছ থেকে চাঁদা নিয়েও রশীদ না দেওয়ার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া দেড় শতাধিক শিল্পী এবারের নির্বাচনে ভোট দিতে পারছে না। তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার পেছনেও জায়েদ খানের হাত আছে বলে অভিযোগ।

এতসব অভিযোগ মাথায় নিয়েই এবারও একই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খান নির্বাচন করছেন। তাদের বিপক্ষে একটি প্যানেল গড়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন। তার প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। এছাড়া দুই প্যানেলেই আছে একঝাঁক করে তারকা প্রার্থী।

(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/এএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :