পৃথিবীতে পানি এলো কোথা থেকে? জানলে অবাক হবেন

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৩৯ | আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৫৩

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পৃথিবীতে পানি এলো কোথা থেকে? এই প্রশ্নের উত্তর অনেকেই জানতে চান। অনেকে মনে করেন পৃথিবী সৃষ্টির পর পরই পানির ধারা বইতে শুরু করে। আবার আবার কেউ কেউ বলছেন পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকেই পানি ছিল। 

 বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর পানির উৎপত্তি-রহস্য সমাধান করতে গিয়ে দেখেছেন তাদের প্রমাণগুলো প্রকারান্তরে সূর্যের দিকেই নির্দেশ করছে। এই ধারণার উপর ভিত্তি করেই বা এই ধারণাটিকেই কেন্দ্রে রেখে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকার গবেষকরা পৃথিবীতে পানির উৎস নিয়ে টানা গবেষণা করে চলেছেন।

পানির উৎপত্তি-রহস্য

তবে সব চেয়ে জোরদার প্রমাণ মেলে ২০১০ সালে। এই বছরই জাপানের হায়াবুসা মিশন দ্বারা সংগৃহীত একটি প্রাচীন গ্রহাণু বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকদল। তারা পরামর্শ দেন, পৃথিবীর সৃষ্টির সময় থেকেই এই গ্রহে পানি এসেছিল। সূর্য থেকে চার্জযুক্ত সৌরবায়ু নামে পরিচিত কণাগুলি যখন পানির অণু তৈরি করতে শস্যের রাসায়নিক গঠনকে পরিবর্তন করে, তখন শস্যের মধ্যে এই পা তৈরি হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়াটিকে 'স্পেস ওয়েদারিং' বলে। 'নেচার অ্যাস্ট্রোনমি' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পৃথিবীতে কোথা থেকে এল পানি, সূর্যের সৌরবায়ুই এর উত্তর দিতে পারে।
  
সি-টাইপ উল্কাপিণ্ড

বিজ্ঞানীরা দীর্ঘকাল ধরেই পৃথিবীর মহাসাগরের প্রাচীন উৎস নিয়ে বিভ্রান্ত। বিভিন্ন তত্ত্ব পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, এক ধরনের পানি বহনকারী গ্রহাণু রয়েছে, যা ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগে গঠনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এই গ্রহে কোনও ভাবে পানি নিয়ে আসতে পারে। গবেষকদের বিশ্বাস, পৃথিবীর কিছু পানি অবশ্যই সি-টাইপ উল্কাপিণ্ড থেকে এসেছে।
  
আইসোটোপিক্যাল আলোক উৎস

পৃথিবী অবশ্যই অন্তত আরও একটি উৎস থেকে পানি পেয়েছে। সেটি হল আইসোটোপিক্যাল আলোক উৎস। কীভাবে এবং কখন পানি পৃথিবীতে পৌঁছেছে এবং এই গ্রহের ৭০ শতাংশ পৃষ্ঠকে ঢেকে রেখেছে, যা আমাদের সৌরজগতের অন্য যে কোনও পাথুরে গ্রহের চেয়ে অনেক বেশি, সেটাই বিস্মিত করে গবেষকদের।  
  
বায়ুবিহীন বিশ্বের পানির উৎস

বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানগুলি বায়ুবিহীন বিশ্বের পানির উৎস খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারে। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল এস-টাইপ গ্রহাণু নামে পরিচিত একটি ভিন্ন ধরনের মহাকাশ-শিলা থেকে পানি পাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেন না।   
  
সৌরধুলো

বিজ্ঞানীরা বলেন, প্রথম দিকে সৌরজগতে একটি অত্যন্ত ধুলোময় স্থান ছিল। যা মহাকাশ-বাহিত ধূলিকণাগুলোর পৃষ্ঠের নিচে পানি তৈরির জন্য প্রচুর সুযোগ প্রদান করে। গবেষকরা পরামর্শ দেন, এই পানি-সমৃদ্ধ ধূলিকণা পৃথিবীর মহাসাগরে সরবরাহের অংশ হিসাবে সি-টাইপ গ্রহাণুর পাশাপাশি প্রথম পৃথিবীতে বৃষ্টিপাত হত। প্রাথমিক সৌরজগতের দ্বারা উৎপাদিত এই সৌর বায়ু থেকে প্রাপ্ত পানি আইসোটোপিক্যালি হালকা। এই সূক্ষ্ম দানাযুক্ত ধূলিকণা সৌর বায়ু দ্বারা প্রবাহিত হয়ে বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে আকৃষ্ট হয়েছিল।

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/এজেড)