রাজবাড়ীতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:৫৫

এম. মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী

পেঁয়াজ উৎপাদনে রাজবাড়ীর অবস্থান তৃতীয়। মাটি ও আবাহাওয়ার প্রভাবে রাজবাড়ী জেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজের মান অন্য জেলার পেঁয়াজের চেয়ে অনেক ভাল।

প্রতি মৌসুমে জেলায় মুড়িকাটা ও হালি এই দুই জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়। এর মধ্যে আগাম জাত মুড়িকাটা। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভালো ফলনের আশায় চাষিরা। এ বছর জেলায় পাঁচ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে কিছু ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, পেঁয়াজ চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা এলাকায় দেখা যায়, মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ করেছেন চাষিরা। এখন পেঁয়াজ ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত। কেউ নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ ওষুধ ছিটাচ্ছেন। অক্টোবরে প্রথম সপ্তাহে রোপণ করা মুড়িকাটা পেঁয়াজ তিন মাসের মধ্যে ঘরে উঠবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার পেঁয়াজের ভালো ফলন ও দাম পাওয়ার আশা চাষিদের।

উড়াকান্দা এলাকার কৃষক রশিদ মেম্বার জানান, সব খরচসহ মুড়িকাটা পেঁয়াজ ঘরে ওঠানো পর্যন্ত বিঘাপ্রতি খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। আর বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদন হবে ৫০ থেকে ৬০ মণ। গত বছর ভালো দাম পেয়েছিলেন।

আলতাফ মন্ডল বলেন, পেঁয়াজের মণ কম পক্ষে দুই হাজারের বেশি টাকায় থাকতে হবে। তাহলে কিছুটা লাভ থাকবে। আর কৃষক যখন পেঁয়াজ ঘরে তুলবেন তখন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করতে হবে। এতেই কৃষক বাঁচবে।

আরেক কৃষক ছুলাইমান মোল্লা জানান, গত বছর পেঁয়াজে ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি। এবারও ভালো ফলন হবে আশা করছেন। তবে শঙ্কায় রয়েছেন পেঁয়াজ ঘরে তোলার সময় ভারতের পেঁয়াজ এলে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে। সে জন্য সরকারের কাছে দাবি, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করার।

প্রান্তিক চাষি সামাদ বেপারী, সলামত সেখ ও সাদ্দাম হোসেন জানান, অনেক কৃষকই দরিদ্র। নিজেদের জায়গা জমি না থাকায় অন্যের জমি লিজ নিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করেন। সরকার কম সুদে ঋণ দিলে তারা আরও বেশি পেঁয়াজের আবাদ করবেন।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এই জেলায় দুই ধরনের পেঁয়াজ আবাদ হয়ে থাকে। মুড়িকাটা ও হালি পেঁয়াজ। গত বছর জেলায় ৩১ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হালি পেঁয়াজ ২৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর এবং মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ২ হাজার মেট্রিকটন। এ বছরেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এসএম শহীদ নূর আকবর বলেন, সারাদেশের মধ্যে পেঁয়াজ উৎপাদনে রাজবাড়ী তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কৃষকদের মাঝে সহজ শর্তে ঋণও দিয়ে থাকেন।

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/এলএ/এসএ)