দিনে স্কুল, রাতে চলবে সিনেমা

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:৪৭

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে দেশে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অর্থায়নে ৫০টি এডট্রেইনমেন্ট সার্ভিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। যেখানে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষাদান কার্যক্রম এবং মুভি থিয়েটার দেখা যাবে। দিনে চলবে স্কুল এবং রাতে দেখানো হবে সিনেমা। 

আজ বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে সাক্ষাতকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই-কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী এ তথ্য জানান। বৈঠককালে উভয় দেশ এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন। 

বৈঠকে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা ও আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
 
এ সময় তারা দুই দেশের পারষ্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে মানব সম্পদ উন্নয়ন, আইটি শিল্পের বিকাশ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে ভারত সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন জেলা পর্যায়ে আইটি, হাই-টেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়) প্রকল্প, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের চলমান অগ্রগতি, আইসিটি খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা, প্রযুক্তি হস্তান্তর, স্টার্টআপ তৈরির সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সহযোগিতা প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অসামান্য অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন বর্তমানে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস পেয়েছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে আইসিটি সেক্টরে ভারতের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে দেশের ১২টি জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পে ভারত সরকার  ঋণ প্রদান করছে। এরমধ্যে আটটি পার্ক স্থাপনের কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি ২০২২ এর মধ্যে শুরু করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস এন্ড এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার (বিডিসেট) আরেকটি প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের ৬টি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, হাই-টেক পার্ক এবং শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হবে। এখান থেকে আগামী দুই বছরে ২৪০০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে। ইন্টারনেট অব থিংস, মেশিন লার্নিং, রোবোটিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, এক্সটেনডেড রিয়ালিটিসহ অন্যান্য উচ্চতর বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। 

এছাড়াও সভায় জানানো হয় ৩০ জনকে ৬ মাসের জন্য ভারতে আইসিটির উপর উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করা হবে। 

প্রতিমন্ত্রী জানান স্টার্ট-আপ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের ৫০টি করে স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো স্থাপন করা হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত আইটি এক্সিলারেটর (বিআইটিএ)। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ৬৪টি জেলায় ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ স্থাপন করা হচ্ছে। একইসঙ্গে প্রতিটি জেলায় আইটি এক্সিলারেটর’ ও স্থাপন করা হবে। 

উল্লেখ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন এবং মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে লাইটিং দ্যা ফায়ার অব আর্ট অ্যান্ড ফ্রিডম শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী শিগগিরই কোলকাতা এবং দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়। 

ভারতীয় হাইকমিশনার দুই দেশের সম্পর্ক আগামীর দিনগুলোতে আরো সুদৃঢ় হবে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের আইসিটি খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে ভারত সার্বিক সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন প্রযুক্তিসহ সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে এগিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ  আরো এগিয়ে যাবে।   

পরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং ভারতের মধ্যে  ৪টি কার্যাদেশ স্বাক্ষরিত হয়। 

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/এজেড)