শাবি ভিসির বাসায় খাবার-ওষুধ নিয়ে যেতেও বাধা

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ২১:৩৬ | আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ২১:৪০

সিলেট ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। ভিসির বাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর এবার সেই বাসায় খাবার ও ওষুধ নিয়ে ঢুকতেও বাধা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এমনকি অনশনরত শিক্ষার্থীদের জন্য আনা খাবারও ফিরিয়ে দিয়েছেন তারা।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে খাবার নিয়ে প্রবেশ করতে চান প্রক্টর ড. আলমগীর কবীরসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। তবে তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কিলো রোডে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই মানবপ্রাচীর তৈরি করে রাখেন। তারা শর্ত জুড়ে দিয়েছেন, পুলিশ ছাড়া এই প্রাচীর ভেদ করে কেউ উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে যেতে পারবেন না।

এসময় শিক্ষক প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের অনেক অনুরোধ করলেও ভেতরে যেতে পারেননি। এমনকি অনশনরত শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়ে আসা খাবারও তারা গ্রহণ করেননি। শিক্ষকরা পরে ফিরে যান। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন।

পরে ড. আলমগীর কবীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুধু উপাচার্যের জন্য নয়, গেস্ট হাউজ ও ডরমিটরিতে আমাদের বেশকিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা আটকা পড়ে আছেন, তাদের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিলাম। এদের মধ্যে একজন শিক্ষক অসুস্থ। উনি কী অবস্থায় আছেন তা আমরা জানি না। এমনকি যোগাযোগও সম্ভব হচ্ছে না।’

এই শিক্ষক বলেন, ‘উপাচার্যের হার্টের সমস্যা, তার ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। যদি ভেতরে যাওয়ার সুযোগ হতো তবে ওষুধের ব্যবস্থা করা যেত। এখন আর এই সুযোগ নেই।’

গতকাল রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এদিন বিকালে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনের পরও উপাচার্য পদত্যাগ না করলে তাকে পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রাখা হবে জানান।

গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। পরদিন রবিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

১৫ জানুয়ারি বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় শাবি কর্তৃপক্ষ।

তবে তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তারা বুধবার বিকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কিলোতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন। অনশনরতদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ১৬ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রবিবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন কর্মসূচির ১০০ ঘণ্টা পূর্ণ হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/জেবি)