চুয়াডাঙ্গায় পাঁচ দিনেও উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ স্কুলছাত্র

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ২১:৫৪

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা এলাকার স্কুলছাত্র আবু হুরায়রা নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিনেও সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজের ঘটনাকে কেন্দ্র এলাকায় জন্ম নিয়েছে নানা ধরনের কুসংস্কারমূলক বিশ্বাস। তাকে জিনে তুলে নিয়েছে বলেও গুঞ্জন ওঠে এলাকায়।

আবু হুরায়রার পরিবারের লোকজনও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে স্থানীয় কথিত কবিরাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে হুরায়রাকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

হুরায়রা এলাকার ভুট্টা ব্যবসায়ী ও কৃষক আবদুল বারেকের ছেলে। এ বছর লটারির মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হয় এই নিখোঁজ শিশু।

এলাকাবাসী জানায়, গত ১৯ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৩টায় পাশের বাড়ির রনজু হকের বাসায় প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে যায়। ওই শিক্ষকের ঘরে বই-ব্যাগ রেখে হুরায়রা বাইরে বের হয়। এরপর থেকে তাকে পাওয়া যায়নি।

ওই দিন সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হয় এবং রাতে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। এলাকায় মাইকিংও করা হয়। একপর্যায়ে ধারণা করা হয় বাড়ির পাশে পুকুরে পড়েছে হুরায়রা। সেজন্য ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পুকুরে দীর্ঘসময় তল্লাশি করেন। তবুও সন্ধান মেলেনি তার।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, শুক্রবার পর্যন্ত কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি শিশু আবু হুরায়রার। গ্রামের সব মানুষের মুখে মুখে একই কথা, হুরায়রাকে জিনে তুলে নিয়ে গেছে। তাকে জিনের মাধ্যমে ফেরত দেয়ার জন্য সিরাজগঞ্জ জেলার একজন কবিরাজ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম দেয়াও হয়েছে। ছেলে ফেরত পাওয়ার পর আরও ২০ হাজার টাকা দেওয়া লাগবে।

টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও সিরাজগঞ্জের ওই কবিরাজের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার কথা স্বীকার করেছেন শিশু হুরায়রার বাবা আবদুল বারেক। তিনি বলেন, ছেলে ফেরত পেলে টাকা দিতে কোনো আপত্তি নেই আমার। ওই কবিরাজের ফোন নম্বর চাইলে তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানান। তার একমাত্র ছেলেকে ফিরে পেতে আকুতি করেন। ছেলে হারানোর পর থেকে তারা এখন পাগলপ্রায়। খাওয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম বলে জানান তিনি।

গ্রামবাসী জানায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে একইভাবে গ্রামের কৃষক হায়াত আলী (৭০) নিখোঁজ হন। ঘটনার পাঁচদিন পর সন্ধ্যায় তাকে মাঠে পাওয়া যায়। পরে গ্রামবাসীর মনে বিশ্বাস জন্ম নেয় যে, ওই কবিরাজের মাধ্যমে জিনরা রেখে গিয়েছিল। এসব গুঞ্জনে পরে আসল ঘটনায় ধামাচাপা পড়ে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসীন বলেন, আমরা সবকিছু মাথায় রেখেই শিশু আবু হুরায়রাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যে শিক্ষকের কাছে ব্যাগ রেখে নিখোঁজ হয়েছে, ওই শিক্ষককেও সন্দেহে রাখা হয়েছে। এছাড়া তার বাবার সঙ্গে গ্রামের কারো কোনো ধরনের বিরোধ আছে কি না, সব খতিয়ে দেখছি আমরা।

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/আইএইচ/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :