করোনায় চুল পড়ার সমস্যা প্রতিরোধ করার কৌশল

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪০ | প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০:০৪

করোনাভাইরাস সারাবিশ্বে তাণ্ডব সৃষ্টি করছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চুল পড়া নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। পজিটিভ ব্যক্তিদের মধ্যে একটি বড় সংখ্যার মানুষই কিন্তু এই সমস্যায় ভুগছেন। অনেকের কাছেই এই সমস্যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার সঙ্গে মানুষ কেবল বারবার সংক্রমণের জন্যই চিন্তিত নন, উপরন্তু তারা উপসর্গগুলো পুনরাবৃত্তি নিয়েও চিন্তিত।

বেশিরভাগ রোগী যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল তাদের মধ্যে সংক্রমণের প্রায় ২-৩ মাস পরে চুল ঝড়ে পড়ার লক্ষণ দেখা গিয়েছে। চিকিৎসকের মতে, যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চুল পড়ার ঘটনায় পুষ্টির ঘাটতি, হরমোনের পরিবর্তন, মানসিক চাপ, পরিবেশগত কারণ এবং জেনেটিক কারণ থেকে শুরু করে একাধিক কারণ দায়ী থাকে তবে করোনায় চুল পড়াকে 'টেলোজেন এফ্লুভিয়াম' হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। এর কারণগুলো হলো: লকডাউনের ফলে মানসিক চাপের পাশাপাশি সংক্রমণের ভয়।

ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিক্রিয়া হিসাবে প্রোইনফ্ল্যামেটরি সাইটোকাইন নিঃসরণ চুলের ফলিকলগুলিকে ক্ষতি করেছে। ভাইরাস নিজেই সরাসরি চুলের ফলিকলের ক্ষতি করতে পারে, তবে এটি এখনও প্রমাণিত সত্য নয়, এই বিষয়ে আরও গবেষণা চলছে। শরীরে সংক্রমণ/প্রদাহজনক প্রক্রিয়ার সময়, আয়রন, জিঙ্ক, বি-কমপ্লেক্স ভিটামিনের মতো পুষ্টির ক্ষয় হয় যা চুলের বৃদ্ধি এবং শক্তির জন্য অপরিহার্য।

বিশেষজ্ঞের মতে, "আমাদের চুল বৃদ্ধির পর্যায় (অ্যানাজেন) রূপান্তর (ক্যাটাজেন), স্থায়ীত্ব (টেলোজেন) এবং ঝরানো (এক্সোজেন) এই বিষয়গুলো একটি চক্রাকার পর্যায়ে সম্পূর্ণ হয়। যেহেতু আমাদের মাথার ত্বকে লক্ষ লক্ষ লোমকূপ রয়েছে এবং এর প্রতিটি ফলিকল একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ভিন্ন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যায় তাই, চুল পড়া কমানো এবং নতুন চুল গজানোর প্রক্রিয়াটিতে অনেক সময় লাগে।"

যে কোনো গুরুতর ভাইরাল সংক্রমণ শরীরের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের উৎসকে ক্ষয় করে দেয় এবং শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হয়। এইভাবে, কোভিড-এর পরে ৩ মাস পর্যন্ত, প্রচুর সংখ্যক রোগী অতিরিক্ত চুল পড়ে বলে অভিযোগ করেছেন। সাধারণ চুল পড়া কোনও রোগ নয়, বরং শরীরে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতির লক্ষণ। একটি কার্যকরী থাইরয়েড, অটোইমিউন অবস্থা, ভিট বি১২, সেলেনিয়াম, ভিট ডি, আয়রনের ঘাটতির মতো কারণগুলো প্রাথমিকভাবে চুল পড়ার জন্য দায়ী। রোগী সুস্থ হওয়ার কয়েক মাস পরও চুল পড়া এবং চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তাররা চিকিৎসার সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দেন। একটি ভাল ডায়েট ছাড়াও, অনেকগুলি কার্যকর স্বাস্থ্য অবস্থা রয়েছে যা কঠোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মোকাবেলা করার জন্য রোগীর খাদ্যে যোগ করা যেতে পারে।

নারিকেল তেল ব্যবহার করুন

ভাল মানের নারিকেল তেল ব্যবহার করুন। মেথি আর কালো জিরা রোদে দিয়ে একদম শুকনো করে নেবেন। তারপর সেটা মিক্সিতে গুঁড়িয়ে নিন। গুঁড়া করা হয়ে গেলে সেটা নারিকেল তেলে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন কিছুক্ষণ। এই তেল একটি কাচের শিশিতে রাখবেন। ১০ থেকে ১২ দিন সহজেই রাখতে পারবেন। সপ্তাহে তিন দিন লাগানো পর কোনও মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

অলিভ অয়েল

অলিভ অয়েল (জলপাইয়ের তেল) চুলের পুষ্টির জন্য খুবই উপকারি। এই তেল সপ্তাহে অন্তত দুদিন ব্যবহার করলে চুলের গোড়া যেমন মজবুত হবে, তেমনি চুলের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।

অ্যালোভেরা ব্যবহার করুন

অ্যালোভেরা যেমন ত্বকের জন্যও কার্যকরী তেমনই চুলের জন্যও। অ্যালোভেরার মধ্যে থাকে ভিটামিন-ই। যা স্কাল্পের পরিচর্চার জন্য আদর্শ।

মধু ডিমের ব্যবহার

ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুল পড়ে যাওয়ার যুগান্তকারী ওষুধ মধু ও ডিম। এই দুইয়ের দ্রবণ ৩০ মিনিট করে মাথায় লাগিয়ে ধুয়ে ফেলার পর চুল অনেকটা ভালো থাকে। উজ্জ্বলতাও বাড়ে। এটুকু করলেই এই বর্ষাতেই আপনার চুলের ঝড়ে যাওয়া আটকাতে পারবেন।

হেনার ব্যবহার

তেলের সঙ্গে হেনা মিশিয়ে তা মাথায় লাগালে চুলের জন্য উপকার পাওয়া যায়। তবে হেনা ব্যবহার করার সময় অবশ্যই একটা কথা মাথায় রাখবেন, ৩০ মিনিটের বেশি কখনই হেনা মাথায় রেখে দেওয়া উচিত নয়।

ফ্ল্যাক্স সিড

চুলের পরিচর্যার ক্ষেত্রে ফ্ল্যাক্স অত্যান্ত কার্যকরী। ফ্ল্যাক্স সিড প্রোটিন, ভিটামিন বি, ই, ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এটি চুলের ফলিকলস পুষ্ট করে, চুলকে মজবুত ও ঘন করে, চুল বৃদ্ধি করে ও স্ক্যাল্প সুস্থ রাখে। এছাড়াও, খুশকি এবং ইচি স্ক্যাল্পের সমস্যা দূর করে, অকালে চুল পেকে যাওয়া ও চুল ফাটা রোধ করে। ফ্ল্যাক্স সিড চুলের পিএইচ লেভেলে সামঞ্জস্য বজায় রাখে।

পেঁয়াজের রস

একটি পেঁয়াজের রস বের করে নিন। সেই রসের সঙ্গে পরিমাণ মতো নারকেল তেল মেশান। হালকা গরম করে মাথায় ভাল করে মাসাজ করুন। মাসাজ করার জন্য তুলোর প্যাড তেলে চুবিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। ৩০ মিনিট মাথায় রেখে উষ্ণজলে চুলে শ্যাম্পু করে নিন। প্রতিদিন এটা ব্যবহার করলে ভাল ফল পাবেন। তবে বেশিক্ষণ এই তেল চুলে লাগিয়ে রাখলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।

মেথি আর নারকেল তেল

চুল পড়া রোধ করে মেথি আর নারকেল তেল। নারকেল তেলের মধ্যে পরিমাণমতো মেথি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। তেল ঠান্ডা হলে চুলের গোড়ায় ভাল করে তেল মেখে হালকা হাতে মাসাজ করুন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন। এটি সপ্তাহে একদিন করতে পারেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫জানুয়ারি/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

যে পাঁচ সমস্যায় আক্রান্তরা গুড় খাওয়ার আগে একবার ভাবুন, নইলে...

সাজেদুর রহমান শাফায়েতের স্বপ্ন পৃথিবী ঘুরে দেখা

খাওয়ার পরপরই চা পান উপকার না ক্ষতি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জ্বরের মধ্যে যে পাঁচ খাবার খেলেই বিপদ! জানুন, সাবধান হোন

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের! সুস্থ থাকবেন যেভাবে

মুখে দুর্গন্ধের কারণে হা করতেও অস্বস্তি লাগে? সমাধান কী জানুন

লিভার ভালো রাখে লাউ! ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

কিডনি ভালো রাখে আমের পাতা! উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

ইফতার ও সাহরিতে বাহারি আয়োজন ধানমন্ডির দ্য ফরেস্ট লাউঞ্জে

বারবার ফোটানো চা খেলেই মারাত্মক বিপদ! বাঁচতে হলে জানুন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :