'বিপিএম' ও 'পিপিএম' পদক কী জানেন? পদকপ্রাপ্তরা চাকরিকালে কী সুবিধা পান?

সিরাজুম সালেকীন
ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১১:০০ | প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪১

বিভিন্ন স্তরের পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের নিজ পদমর্যাদা অনুযায়ী আলাদা ব্যাজ সব সময় ইউনিফরমে দেখা যায়। কর্মকর্তাদের ব্যাজ কাঁধে আর অন্যদের ব্যাজ শোভা পায় ডানায়। এই র‌্যাংক ব্যাজ তাদের পদমর্যাদার সূচক। কিন্তু জাতীয় দিবস ও বিশেষ কিছু অনুষ্ঠানে অনেকের বুকে এক বা একাধিক ব্যাজ ঝুলতে দেখা যায়। এগুলো পুলিশ বাহিনীতে তাদের বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি। একই সঙ্গে তাদের জন্য সম্মানের স্মারকও।

পুলিশে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি 'বাংলাদেশ পুলিশ পদক’ (বিপিএম), এরপরই 'প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক’ (পিপিএম)। এই দুই পদকে যারা ভূষিত হন তারা এককালীন অর্থ ও প্রতি মাসে ভাতা পান। তা ছাড়া বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী অনেকে এ পদকে ভূষিত হন। কাজ ও অবদান মূল্যায়ন করে প্রতি বছর এই পদকের জন্য বিভিন্ন ম্তরের কর্মকর্তা ও সদস্যদের নির্বাচন করা হয়। সাধারণ পুলিশ সপ্তাহে এই পদক পরিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশের সদস্যরা যখন নিজ নিজ ইউনিটের পোশাক পরিহিত থাকেন তখন মেডেলগুলো বুকে ঝোলানো থাকে না। তবে পোশাকে একেকজনের একেক রকম 'রিবন' থাকে। সেখানে সাইন হিসেবে পদকগুলোর চিহ্ন থাকে। শুধু বিপিএম-বিপিএমের নয়, সারদা ট্রেনিংয়ে দক্ষতা, জাতিসংঘ মিশনের পদকের সাইনও এই রিবনে থাকে। আর বিশেষ দিবস যেমন- স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পুলিশ সপ্তাহে যে পোশাক পরা হয়, সেসময় বিপিএম বা পিপিএমের মেডেলগুলো পরা হয়।

বিগত বছরের কাজের মূল্যায়ন করে প্রতি বছরের শুরুতে চার ক্যাটাগরিতে এই পদক দেওয়া হয়। প্রতি বছর পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী রাজারবাগ পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে পদকপ্রাপ্তদের এই পদক পরিয়ে দেন। প্রথমবারের মতো যারা এই পদকে ভূষিত হন তাদের নামের শেষে 'বিপিএম' বা 'পিপিএম' উপাধি যুক্ত হয়। যারা একাধিকবার একই পদকে ভূষিত হন তাদের নামের শেষে বিপিএম বা পিপিএম (বার) উপাধি যুক্ত হয়।

বিপিএম-পিপিএম ছাড়াও প্রতি বছর প্রশংসনীয় ও ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ সদস্যদের ‘আইজিপি’স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিসেস ব্যাজ’ বা আইজিপি ব্যাজ দেওয়া হয়।

করোনাকালীন সময়ে এবার ২০২০ ও ২০২১ সালে পদকপ্রাপ্তদের নাম একসঙ্গে ঘোষণা করা হয়। বিপিএম-পিপিএম পদক দেওয়া হয় ২৩০ জনকে। গত রবিবার ভার্চুয়ালি পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিনে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের হাতে এসব পদক তুলে দেন। এ বছর আইজিপি ব্যাজ পেয়েছেন পুলিশের ৪০১ কর্মকর্তা ও সদস্য।

বিপিএম (সাহসিকতা-সেবা) কী?

অসীম বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পুলিশ সদস্যদের প্রতিবছর বিপিএম (সাহসিকতা) দেওয়া হয়। 'বিপিএম সাহসিকতা' পদকের জন্য যারা ভূষিত হন তারা প্রত্যেকে এককালীন এক লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা ভাতা পেয়ে থাকেন।

সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পুলিশ বিভাগের কার্যক্রমে গতিশীলতা, দক্ষতা বৃদ্ধি কিংবা উন্নয়ন, আধুনিকায়নে বিভিন্ন দপ্তর ও শাখায় দৃশ্যমান অবদান, গুরুত্বপূর্ণ মামলা তদন্ত করে রহস্য উদ্ঘাটন বা অপরাধীকে আইনের আওতায় আনেন কিংবা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বে থেকে দক্ষতা, কর্তৃব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেন, তারা 'বিপিএম সেবা' পদক পেয়ে থাকেন। এই পদকের জন্য প্রত্যেক পুলিশ সদস্য বা কর্মকর্তা এককালীন ৭৫ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা ভাতা পান।

পিপিএম (সাহসিকতা-সেবা) কি?

বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ সদস্যদের প্রতি বছর 'পিপিএম সাহসিকতা' পদকে ভূষিত করা হয়। এককালীন ৭৫ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা ভাতা পেয়ে থাকেন এই পদকপ্রাপ্ত সদস্য ও কর্মকর্তারা।

সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পুলিশ বিভাগের কার্যক্রমে গতিশীলতা, দক্ষতা বৃদ্ধি কিংবা উন্নয়ন, আধুনিকায়নে বিভিন্ন দপ্তর ও শাখায় দৃশ্যমান অবদান, গুরুত্বপূর্ণ মামলা তদন্ত করে রহস্য উদ্ঘাটন বা অপরাধীকে আইনের আওতায় আনেন কিংবা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বে থেকে দক্ষতা, কর্তৃব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেন, তারা 'পিপিএম সেবা' পদক পেয়ে থাকেন। এই পদকের জন্য পুলিশ সদস্য বা কর্মকর্তারা এককালীন ৫০ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে এক হাজার টাকা পেয়ে থাকেন।

সেবা, সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য ২০১৯ সালে বিপিএম এবং পিপিএম পান ১১৮ জন। ২০১৮ সালে ৩৪৯ জন পুলিশ সদস্যকে বিপিএম-পিপিএম পদক দেওয়া হয়েছিল। এর আগে ২০১৭ সালে ১৮২ জন, ২০১৬ সালে ১৩২ জন, ২০১৫ সালে ১০২ জন, ২০১৪ সালে ৮৬ জন বিপিএম-পিপিএম পদক পান।

এবারের পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী যা বললেন

মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন ও নিরাপত্তা রক্ষায় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করায় পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পূর্বসূরিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সর্বশক্তি দিয়ে রক্ষা করতে হবে। আমার বিশ্বাস, জনবান্ধব পুলিশিংয়ের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার পাশাপাশি গণতন্ত্র রক্ষায় পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য নিজেদের দায়িত্ব পালন করবে।’

পুলিশের সেবামূলক কাজের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার সময় পুলিশ মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছে। যখন মানুষ আত্মীয়স্বজনের লাশ ফেলে গেছে, তখন পুলিশ তাদের দাফন করেছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫জানুয়ারি/এসএস/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :