সমুদ্রতলেও গোলাপ ফোটে!

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪৬

মানুষ মহাকাশের অনেক রহস্যের সমাধান করলেও গভীর সমুদ্রের অনেক অংশ এখনো মানুষের কাছে অজানা রয়ে গেছে৷ সমুদ্রের তলদেশে চোখজুড়ানো প্রবালের সারি জাদুময় ও রহস্যময় এক জগত সৃষ্টি হয়েছে৷

প্রায় ৪৮ কোটি বছর আগে সমুদ্রে প্রবালের আবির্ভাব ঘটেছিল। প্রবাল প্রাচীরগুলো পূর্ণাঙ্গ রূপে আসতে হাজার হাজার বছর সময় লাগে।

এই প্রবালগুলো অ্যান্থজোয়া শ্রেনীভূক্ত সামুদ্রিক প্রাণী। সম্প্রতি সমুদ্রের তলদেশে গোলাপ আকৃতির প্রবালের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বিজ্ঞানীদের অবাক করার বিষয়। প্রায় দীর্ঘ এলাকা জুড়ে থাকা এই গোলাপের প্রবাল অপূর্ব নয়নাভিরাম। প্রবালগুলো হাজার হাজার মিটার গভীরে কোনো আলো ছাড়াই বেঁচে থাকে৷

পরিবেশবিদদের কাছে সব চেয়ে অবাক করা বিষয় হল, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের এই বিশ্বে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরেও অক্ষত রয়েছে এই সব প্রবাল। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সমুদ্রের গভীরে অবস্থানের কারণেই এগুলো সুরক্ষিত রয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের তাহিতি দ্বীপে এই প্রবালপ্রাচীরের সন্ধান পাওয়া গেছে।

প্রবালপ্রাচীরটির খোঁজ পান সাঁতারুদের একটি দল। তাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন অ্যালেক্সিস রোজেনফিল্ড নামের এক ফরাসি আলোকচিত্রী। চোখের সামনে প্রবালপ্রাচীরটি দেখে অভিভূত তিনি। বিস্মিত রোজেনফিল্ডের ভাষায়, 'বিশাল আকারের অপরূপ গোলাপ প্রবালগুলো প্রত্যক্ষ করার বিষয়টি মোহনীয়। দৃষ্টিসীমার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত সেগুলি ছড়িয়ে ছিল। যেন এক শিল্পকর্ম।'

সারা বিশ্বেই সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে হারিয়ে যাচ্ছে প্রবালের নজরকাড়া রঙ।

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ। ২০১৬ সাল থেকে সেখানকার ৮০ শতাংশ প্রবাল নষ্ট হয়েছে! ইউনেসকোর তথ্য বলছে, উষ্ণ জলে প্রাচীরগুলির অবস্থান সাধারণত সর্বোচ্চ ২৫ মিটার গভীর পর্যন্ত হয়। তবে তাহিতির প্রবালপ্রাচীরটির গভীরতা ৩০-১২০ মিটারের মধ্যে। এই গভীরতায় আলো ভালো ভাবেই পৌঁছতে পারে। যা প্রবালের বেড়ে ওঠা ও তার টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট।

তাহিতির এই প্রবালপ্রাচীরের আবিষ্কার ইঙ্গিত দিচ্ছে মহাসাগরগুলোতে আরও এমন বড় প্রবালপ্রাচীর থাকতে পারে। কারণ, ইউনেসকোর বিজ্ঞানীদের হিসাব মতে, সাগরের তলদেশের মাত্র ২০ শতাংশ এখনও পর্যন্ত সামনে এসেছে। আগামী দিনে এরকম আরও কত আসবে।

উল্লেখ্য, প্রবালপ্রাচীর বাদামি, লাল, নীল, সবুজ, হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। প্রাচীরে বসবাসকারী শৈবাল, অ্যালজি, স্পঞ্জ ও অন্যান্য প্রাণীর বিভিন্ন উপাদানের রং এই বৈচিত্র্যের জন্য দায়ী। এর আকারও বিভিন্ন হতে পারে। কোনোটা গোলাপ ফুলের মতো, মৌমাছির চাকের মতো, কোনোটা হরিণের শিংয়ের মতো, আবার কোনোটা মানুষের মস্তিষ্কের মতো হয়। প্রবালক্ষরিত ক্যালসিয়াম কার্বনেটের বিভিন্নতার জন্যই এমনটি হয়ে থাকে। একেকটি প্রবাল প্রাচীরে প্রায় ১০ লাখ প্রবাল পাওয়া যায়। তাই প্রবাল প্রাচীরকে ‘সমুদ্রের বৃষ্টি অরণ্য’ বলা হয়ে থাকে।

(ঢাকাটাইমস/২৫জানুয়ারি/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :