মিশা-জায়েদদের হ্যাটট্রিক নাকি কাঞ্চন-নিপুণদের প্রথম

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১১:২৩ | আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৪৪

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

অপেক্ষা আর মাত্র দুই দিনের। এর পরের দিন অর্থাৎ, শুক্রবার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সবচেয়ে চর্চিত নির্বাচনের ভোট। এবার কোমর বেঁধে নেমেছে শক্তিশালী দুটি প্যানেল। একটি মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানদের প্যানেল, যারা গত দুই মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে শিল্পী সমিতির দায়িত্ব সামলেছেন। অন্য প্যানেলটি চিত্রনায়ক ইলিয়াস ও চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারদের।

দুই প্যানেলেই তারকা প্রার্থীদের ছড়াছড়ি। গত দুই বারের মতো এবারও নিজেদের প্যানেল থেকে মিশা সওদাগর সভাপতি এবং জায়েদ খান সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন। এই নির্বাচনেও প্যানেলসহ জিতে তারা হ্যাটট্রিক পূরণ করতে চান। সোমবার এফডিসিতে বিরাট আয়োজনে প্যানেল পরিচিতি সভা করে সেই ঘোষণাই দিয়েছেন তারা।

এদিনের সভার সভাপতিত্ব ও উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন চিত্রনায়ক রুবেল। তিনি এবার মিশা-জায়েদ প্যানেল থেকে সহসভাপতি পদে লড়ছেন। রুবেল এদিন তাদের প্যানেলের সবাইকে নাম এবং পদ ধরে ডেকে মঞ্চে এনে বসান। এবারের নির্বাচনে রুবেলের সঙ্গে সহসভাপতি পদে অভিনেতা-প্রযোজক মনোয়ার হোসেন ডিপজলও লড়ছেন।

এছাড়া এই প্যানেলে বিভিন্ন পদে আরও আছেন অভিনেতা সুব্রত (সহ–সাধারণ সম্পাদক), আলেকজান্ডার বো (সাংগঠনিক সম্পাদক), জয় চৌধুরী (আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক), জ্যাকি আলমগীর (দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক), জাকির হোসেন (সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক), ফরহাদ (কোষাধ্যক্ষ)।কার্যনির্বাহী সদস্য পদে আছেন রোজিনা, অঞ্জনা, সুচরিতা, অরুণা বিশ্বাস, মৌসুমী, আসিফ ইকবাল, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, নাদের খান ও হাসান জাহাঙ্গীর।  

সোমবার প্যানেল পরিচিতি সভায় মিশা সওদাগর এবং জায়েদ খান তাদের দুই মেয়াদের নানা উন্নয়নমূলক কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। করোনাকালীন সময়ে তারা কীভাবে শিল্পীদের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন, তাও বলেন। এবার ফের তাদের নির্বাচিত করে শিল্পীদের উন্নয়নে আরও বেশি বেশি কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য উপস্থিত সবার প্রতি আহ্বান জানান।

অন্যদিকে, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত সভাপতি পদপ্রার্থী ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নিপুণ আক্তারদের প্যানেলও। তাদের পরিষদ থেকে সহসভাপতি পদে লড়ছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ এবং অভিনেতা ও পুলিশ কর্মকর্তা ডিএ তায়েব। যারা একসময় মিশা-জায়েদ প্যানেলের হয়ে নির্বাচন করেছিলেন।

এছাড়া ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলে এমন আরও কয়েকজন তারকা প্রার্থী হয়েছেন, যারা গত দুই মেয়াদে মিশা-জায়েদদের সঙ্গে ছিলেন, প্রার্থীও হয়েছিলেন। তারা হলেন- চিত্রনায়ক সায়মন সাদিক, মামনুন হাসান ইমন, নিরব হোসেন, ফেরদৌস আহমেদ, অমিত হাসান, চিত্রনায়িকা পরীমনি, কেয়া, জেসমিন এবং রম্য অভিনেতা আফজাল শরীফ। আরও আছেন- শাকিল খান, নানা শাহ, সাংকো পাঞ্জা, গাঙ্গুয়া ও সীমান্ত।

ইলিয়াস কাঞ্চন এবং নিপুণরা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্যানেল পরিচিতি সভা করেননি। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে তারা এফডিসিতে মিটিং মিছিল করছেন, ভোটার শিল্পীদের কাছে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন এবং নানা রকম প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। অনেক শিল্পীর পাশাপাশি এবার কয়েকজন পরিচালক-প্রযোজকও কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলকে সমর্থন করছেন। প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু তো তাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে কাজও করছেন।

যার কারণে এবারের নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল। তাদের দাবি, গত কয়েকদিন ধরে ভোটারদের কাছে গিয়ে, কথা বলে বুঝেছেন, তারা এবার বড় ব্যবধানে প্যানেলসহ জিতবেন। যদি তাই হয়, তবে এটি হবে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিপুণের প্রথম জয়। এর আগে তারা কখনো একসঙ্গে নির্বাচন করেননি।

১৯৮৯ সালে ইলিয়াস কাঞ্চন সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করেছিলেন। জয়ও পেয়েছিলেন। সেবার তার প্যানেল থেকে সভাপতি হয়েছিলেন খল অভিনেতা আহমেদ শরীফ। ৩২ বছর পর ফের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ইলিয়াস কাঞ্চন। অন্যদিকে, চিত্রনায়িকা নিপুণ এবার প্রথম বড় কোনো পদে লড়ছেন। তাই তাদের প্রথম জয় হবে নাকি মিশা-জায়েদদের হ্যাটট্রিক, তা জানতে অপেক্ষা শুক্রবার পর্যন্ত।

গত চার বছরে দেড় শতাধিক শিল্পী তাদের ভোটধিকার হারিয়েছেন বলে অভিযোগ। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪২৮ জন। দুই প্যানেল এবং স্বতন্ত্র মিলে মোট প্রার্থী ৪৪ জন। এবার নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অভিনেতা পীরজাদা হারুন। এছাড়া আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের ভূমিকায় দেখা যাবে খ্যাতিমান পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানকে।

ঢাকাটাইমস/২৫জানুয়ারি/এএইচ