করোনাকালে বয়স্কদের যত্নআত্তি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১০:১৪

করোনা সংক্রমণের ঢেউ সারাবিশ্বে আবারও আছড়ে পড়েছে। ওমিক্রন নামক নতুন ধরনটি বিস্তার লাভ করছে দাবানলের মতো। করোনাভাইরাসের থাবা থেকে কেউ এখন নিরাপদ নয়। বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে করোনার ছোবলের ভয় বেশি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা।

মারণঘাতি করোনাভাইরাসের থাবা সবচেয়ে বেশি মারাত্মক ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বয়স্কদের ক্ষেত্রে। পরিস্থিতির বিবেচনায় এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। অধিকাংশ বয়স্ক মানুষ ডায়াবেটিস, প্রেশারের মতো নানা সমস্যাই ভোগেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক কমে যায় বয়স্কদের। তাই করোনাকালে বয়স্কদের যত্নে থাকতে হবে সচেতন। বাড়িতে বয়স্ক মানুষ থাকলে কীভাবে সতর্কতা নিতে হবে। কী কী লক্ষণ দেখলে হাসপাতালে ভর্তি করার কথা ভাবতে হবে।

বয়স্করা ওষুধপত্র সময়মতো খাচ্ছেন কি-না দেখুন। প্রয়োজনে তাদের ওষুধের ডোজ বাড়া-কমা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। ঘন ঘন হাত ধোওয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহার অবশ্যই জরুরি।

হাড়ের সমস্যা না থাকলে বা চিকিৎসকের বারণ না থাকলে বয়স্কদের ছাদে হাঁটাহাঁটি বা জগিং করতে হবে। শরীর ও অসুখ বুঝে কিছু ব্যায়াম চিকিৎসার অঙ্গ হয়ে থাকে। তাই সেসব ব্যায়াম নিয়মিত করে যেতে হবে।

বাড়ির সামনে কোনও ফাঁকা জায়গায় গিয়ে রোদ পোহালেও মাস্ক পরুন বয়স্করা। গায়ে রোদ লাগানো খুবই জরুরি। তাই জানলা খুলে রোদ আসতে দিন বয়স্কদের ঘরে।

ভালো বই পড়া, গান শোনা বা গাছেদের পরিচর্যা করার মধ্যেও বয়স্করা আনন্দ পান। সেসব উপাদানের যাতে অভাব না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

বাড়ির খুদে সদস্যটিকে বেশির ভাগ সময়টাই ছেড়ে দিন বাড়ির সবচেয়ে বড় মানুষটির কাছে। এই দুইয়ের সঙ্গ দুজনেরই মনের চাপ কমাবে। হুহু করে সময়ও কাটবে। বাড়িতে পোষ্য থাকলে তার সঙ্গেও সময় কাটাতে পারেন বয়স্ক মানুষটি। এতেও মন ভাল থাকবে।

এমন কোনও কাজ করবেন না যাতে বয়স্ক মানুষটি মনে দুঃখ পান। যেমন সময় কাটানোর জন্য অনেক বয়স্ক মানুষই টিভি দেখেন। বয়স্ক মানুষটি তার পছন্দের অনুষ্ঠান দেখার সময় টিভির চ্যানেল বদলে দেবেন না। এতে তিনি নিজেকে গুরুত্বহীন বলে ভাবতে পারেন। প্রয়োজনে নিজেদের পছন্দের অনুষ্ঠান মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে দেখুন।

তার খাওয়া-স্নান-ওষুধ খাওয়া এসব কাজ যেন ঘড়ি ধরে সময়মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে তিনি যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন না তেমনই তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দেখে আনন্দ পাবেন।

গরম পানিতে গোসল করতে হবে বয়স্কদের। তাদের খাবার রান্নায় আদা-দারুচিনি-হলুদের মতো মশলা— যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে সেসব ব্যবহার করুন।

আদা, গোলমরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, কাঁচা হলুদ ফুটিয়ে পানীয় তৈরি করে লেবু মিশিয়ে চায়ের মতো খাওয়াতে পারেন।

বয়স্কদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় উপাদান ও চিকিৎসকের ফোন নম্বর হাতের কাছেই রাখুন। দীর্ঘমেয়াদি কোনও অসুখ থাকলে তার চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না।

বয়স্করা করোনায় আক্রান্ত হলে অন্তত ১২ সপ্তাহ ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, এই সময় বয়স্কদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে অন্তত এক মিটার, অর্থাৎ তিন ফুট দূরে থেকে কথা বলতে হবে। চুমু খাওয়া বা আলিঙ্গন করা যাবে না।

করোনার আতঙ্ক নিয়ে বয়স্কদের পক্ষে একা থাকা খুব কঠিন। সময় কাটাতে তাদের ঘর পরিষ্কার করা নাচা বা বসে বসে করা যায় এমন ব্যায়ামে মন দিতে হবে। এছাড়া সূর্যের আলো আর মুক্ত বাতাস যতটা সম্ভব গায়ে লাগাতে হবে।

বাড়িতেও মাস্ক ব্যবহার করুন। সার্জিক্যাল বা মেডিক্যাল মাস্ক পরুন। ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত বিনে তা ফেলে দিন।

(ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :