শিল্পী সংঘের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা নেই কেন?

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১২:০৭ | প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১১:৪৩
অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচনের প্রার্থীদের একাংশ

আগামী ২৮ জানুয়ারি শুক্রবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে টেলিভিশন শিল্পীদের নিয়ে গঠিত অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচনের ভোট। ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে প্রার্থী তালিকা। এছাড়া গত ২১ জানুয়ারি প্রার্থীদের পরিচিতি সভাও হয়ে গেছে। ভোটের বাকি আর মাত্র এক দিন। কিন্তু এই নির্বাচন নিয়ে নেই তেমন কোনো আলোচনা বা চর্চা। অনেকটা নীরবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই নির্বাচন।

কিন্তু কেন আলোচনায় নেই অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন? কারণ, ওই একই দিনে বিএফডিসিতে অনুষ্ঠিত হবে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ভোট। তা নিয়ে গত ১৫ দিন ধরে তুমুল আলোচনা, চর্চা। এই নির্বাচনে দুই প্যানেলে লড়ছেন একঝাঁক তারকা প্রার্থী। এফডিসি এলাকাজুড়ে প্রতিদিনই হচ্ছে দুই প্যানেলের মিটিং, মিছিল। প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা এফডিসি ও এর আশপাশের এলাকা।

ইতোমধ্যে বিরাট আয়োজনে পরিচিতি সভাও করেছে দুটি প্যানেল। তাদের মধ্যে একটি হলো, গত দুই মেয়াদে শিল্পী সমিতির ক্ষমতায় থাকা মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানদের প্যানেল এবং অন্যটি ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণদের প্যানেল। এই নির্বাচন নিয়ে এত আলোচনা আর চর্চা যে, তারই জেরে ঢাকা পড়ে গেছে অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচনের আলোচনা। এমনটাই মনে করছেন অভিনয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এবারের অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২১ জানুয়ারি শুক্রবার বিকাল চারটায় অনুষ্ঠিত হয় প্রার্থী পরিচিতি সভা। ওই সভাকে কেন্দ্র করে নাট্যাঙ্গনের তারকাদের মিলন মেলা বসেছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির থিয়েটার স্টুডিওতে। এফডিসির নির্বাচনের মতো অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন প্যানেলভিত্তিক নয়। ফলে এ নির্বাচনে সকল প্রার্থী স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন অভিনেতা আহসান হাবীব নাসিম ও শাহাদাৎ হোসেন নিপু। এর মধ্যে নাসিম গত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সামলেছেন। সভাপতি ছিলেন শহীদুজ্জমান সেলিম। এবার তিনি নির্বাচন করছেন না। তাই সভাপতি প্রার্থী নাসিম। এছাড়া সহসভাপতি তিনটি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দিলু মজুমদার, তানিয়া আহমেদ, আনিসুর রহমান মিলন, সেলিম মাহবুব ও ইকবাল বাবু।

সভাপতি প্রার্থী আহসান হাবীব নাসিম জানান, ‘গণতান্ত্রিকভাবে একটা নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সত্যি বললে, এ নির্বাচনে কেউ হারবে না। আমি এ সংগঠনকে সরকারীভাবে নিবন্ধন করেছি। শিল্পীদের জন্য জরুরি কল্যাণ তহবিল গঠন করেছি। শিল্পীদের কর্ম পরিবেশ, নিরাপত্তা, শুটিংয়ের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছি। আবার বিজয়ী হলে অগ্রজদের নিয়ে প্রতি তিন মাসে একটি করে হলেও মত বিনিময় সভার আয়োজন করবো।’

আরেক সভাপতি প্রার্থী শাহাদাৎ হোসেন নিপু বলেন, ‘আমি বিজয়ী হলে শিল্পীদের বিমার আওতায় আনার চেষ্টা করবো। শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াবো। সবাই নেতা হতে পারে না। নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতাও সবার থাকে না। তবে আমরা সবাই কর্মী। কোনো নাট্য কর্মীকে অবহেলা করা যাবে না। অবহেলার চোখেও দেখা যাবে না।’

গত শুক্রবারের প্রার্থী পরিচিতি সভায় এভাবেই দুই সভাপতি প্রার্থী তাদের প্রতিশ্রুতির কথা উপস্থিত মিল্পীদের জানান। সেখানে অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ বলেন, ‘আমরা কেউ কারও প্রতিদ্বন্দ্বি নই। সবাই একসঙ্গে কাজ করি। কারও বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ বা অনুযোগ নেই। আমাদের এই সংঘটা শুধুমাত্র ২১ জনের না। যারা এখানে সদস্য এই সংঘ তাদের সবার।’

শিল্পী সংঘের এবারের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন রওনক হাসান ও কবীর টুটুল। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন নাজনীন হাসান চুমকি, শামীমা তুষ্টি ও জামিল হোসেন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে লড়ছেন সাজু খাদেম, তুষার মাহমুদ ও জুলফিকার চঞ্চল। আইন ও কল্যাণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর ও রওনক বিশাখা শ্যামলী।

কার্যনির্বাহী সাতটি সদস্য পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ২০ জন। তারা হলেন- আবুল কালাম আজাদ, আশরাফ কবির, আইনুন নাহার পুতুল, আশরাফুল আলম খান, এএএম গোলাম কিবরিয়া, খালেদ আহমেদ সালেহীন, নুরুন নাহার বেগম, মরিয়ম সরকার, মাসুদ আলম তানভীর, মিজানুর রহমান, আব্দুল হান্নান আখন্দ, আমিনুল বারী, মৌসুমী হামিদ, রেজাউল করিম সরকার, শামস সুমন, শ্যামল জাকারিয়া, স্মরণ কুমার সাহা, সংগীতা চৌধুরী, সূচনা সিকদার ও হাফিজুর রহমান।

এই নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন প্রবীণ অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তার সঙ্গে থাকবেন নরেশ ভূঁইয়া ও মাসুম আজিজ। এছাড়া আপিল বোর্ডের দায়িত্বে আছেন আরেক প্রবীণ অভিনেতা মামুনুর রশীদ এবং আইনজীবী জুয়েল। তারা সবাই অভিনয়শিল্পী সংঘের সদস্য।

প্রাথমিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সদস্য সংখ্যা ১১০০। পূর্ণাঙ্গ ৯০০ সদস্যের মধ্যে ৬০ জনের বেশি মারা গেছেন। বেশ কয়েকজন থাকেন দেশের বাইরে। সে সব বাদে এবার ভোট দিতে পারবেন ৭৪৮ জন। তবুও এই সংখ্যা চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের চেয়ে বেশি। কারণ, মিশা-জায়েদ এবং কাঞ্চন-নিপুণদের নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ৪২৮ জন।

ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :