হরেক পরিচয়ে প্রতারণা, অবশেষে পুলিশের জালে ধরা

প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৪৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নাম তার চন্দ্রশেখর। পরিচয় দিতেন শেখর নামে। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। এছাড়া কখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস, সেনাবাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও পরিচয় দিতেন। আর এসব পরিচয় ব্যবহার করে হাতিয়ে নিয়েছেন বহু অর্থ। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে চন্দ্রশেখরের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়গুলো সামনে এসেছে।

বুধবার তেজগাঁওয়ের নাজনীনবাগ এলাকা থেকে চন্দ্রশেখর মিস্ত্রিকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মাদপুর থানা পুলিশ। এর সময় তার কাছ থেকে চাকরি প্রার্থীর সিভি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরির বিজ্ঞপ্তি, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের বদলির আবেদন, সরকারি স্কুল-কলেজে ভর্তির আবেদন, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম, মোবাইল নম্বর, একাধিক সিল, ছয়টি মোবাইল ফোন, চারটি ডেবিট কার্ড ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেক জব্দ করা হয়।

চন্দ্রশেখরের সম্পর্কে বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্যামলীতে বিস্তারিত জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, গ্রেপ্তার চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ, বদলি, স্কুল কলেজে ভর্তি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে প্রেরণ, গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ পাস ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তার আসল নাম চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি হলেও তিনি শেখর নামে পরিচয় দিতেন।

ডিসি বিপ্লব কুমার বলেন, গত ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিফ কম্পট্রোলার পরিচয়ে চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন করে একজন ছাত্রকে ভর্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি যখন মোবাইল ফোনে নিজেকে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন, আগে থেকে তার কণ্ঠ নকল করার প্র্যাকটিস করে অবিকলভাবে তার মতো করে কথা বলতেন। তার মোবাইল ফোনের কললিস্ট পর্যালোচনা করে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানান ডিসি বিপ্লব।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে ছয় বছর আগে ২০১৬ সালে তেজগাঁও থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন চন্দ্রশেখর মিস্ত্রি।

এক প্রশ্নের জবাবে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বলেন, তার সঙ্গে এই প্রতারণার কাজে আর কারা জড়িত তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।

ঢাকাটাইমস/২৭জানুয়ারি/এসএস/এফএ/এমআর