সিইসি প্রতিহিংসা চরিতার্থে নিকৃষ্ট পথ নিয়েছেন: মাহবুব তালুকদার

দেশে বিভিন্ন নির্বাচন বিষয়ে ভিন্নধর্মী অবস্থানের কারণে তার চিকিৎসার বিষয় উল্লেখ করে সিইসি প্রতিহিংসা চরিতার্থে নিকৃষ্ট পথ বেছে নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, গত দুই বছরে তিনি তার চিকিৎসায় কোনো সরকারি খরচ নেননি।

আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে মাহবুব তালুকদার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনারদের চিকিৎসাবিধি অনুযায়ী ইসি থেকে তার চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহ করা হয়েছে। সিইসি নিজেও চিকিৎসার জন্য টাকা নিয়েছেন।

সিইসি গতকাল বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের চিকিৎসায় বছরে ইসির ব্যয় হয়েছে ৩০-৪০ লাখ টাকা। তিনি একজন রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। তিনি কখনো আইসিইউতে, কখনো সিসিইউতে থাকেন। ভারতে, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করেন।

এই বক্তব্যের সমালোচনা করে বিবৃতিতে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার হিসেবে অসুখের যথাযথ চিকিৎসা পাওয়া আমার মৌলিক অধিকার। নির্বাচন বিষয়ে আমার ভিন্নধর্মী অবস্থানের নিমিত্ত সিইসি তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য চিকিৎসার বিষয় উল্লেখ করে আমার বিরুদ্ধে এহেন নিকৃষ্ট পথ বেছে নিয়েছেন।’

বিবৃতিতে সিইসিকে উদ্দেশ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘তিনি (সিইসি) আমাকে রোগাক্রান্ত ব্যক্তি বলে উল্লেখ করে বলেছেন, আমি কখনো আইসিইউতে বা কখনো সিসিইউতে থাকি। কিন্তু ইচ্ছা করলেই কেউ আইসিইউ বা সিসিইউতে থাকতে পারে না। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে বিশদভাবে অবহিত করা প্রয়োজন মনে করি।’

নির্বাচন কমিশনার হওয়ার সময় থেকেই তিনি প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘ক্যানসার কালক্রমে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। আমি সিঙ্গাপুর ও ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালের চারজন চিকিৎসকের সমন্বয় গঠিত মেডিকেল বোর্ড দুই দফা শারীরিক পরীক্ষা করে আমাকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমোদন দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনারদের চিকিৎসাবিধি অনুযায়ী আমার চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহ করা হয়েছে।’

তবে গত দুই বছরে তিনি চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে বিদেশে যাননি উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘বরং এই দুই বছরে চিকিৎসার জন্য সম্পূর্ণ নিজের খরচে আমি আমেরিকা গিয়েছি। বর্তমানে কর্মরত নির্বাচন কমিশনাররা এবং অবসরপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনাররা সবাই-ই প্রাপ্যতা ও বিধি অনুযায়ী কমিশন থেকে চিকিৎসার খরচ নিয়ে থাকেন। কে এম নূরুল হুদা নিজেও নির্বাচন কমিশন থেকে চিকিৎসার জন্য টাকা নিয়েছেন।’

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশে অনুষ্ঠিত প্রায় সব স্তরের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা আছে সব মহলে। বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে অনেক সময় সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এ নিয়ে সিইসি ও কমিশনের অন্য সদস্যদের কখনো ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে আগে। কিন্তু আগের সবকিছু ছাপিয়ে গেছে সিইসির এবারের বক্তব্য।

(ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/মোআ)