স্মরণসভায় হাবীবের মৃত্যুর তদন্ত চাইলেন প্রিয়জনরা

প্রকাশ | ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ২২:৩৩

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষার্থী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সময়ের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার হাবীবুর রহমানের মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে তার বন্ধু-শিক্ষক-সহযোদ্ধারা।

শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় এই দাবি ওঠে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে হাবীবের বন্ধুদের আয়োজনে এই স্মরণসভা হয়।

এতে প্রয়াত হাবীবের বিভাগ-হল-বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু-শিক্ষক-সাংবাদিকতার সহকর্মী, রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।

হাবীবের বন্ধু সাংবাদিক ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমি পেশায় অপরাধ সাংবাদিকতা করি। প্রায়ই আমাকে মর্গে যেতে হয়। কিন্তু সেই মর্গে স্বজন নিয়ে কোনদিন মর্গে যাব ভাবতে পারিনি। মর্গের সেখানে কাজ করা মানুষ আমাকে চেনে। তারা আমাকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, এটাকে দুর্ঘটনা মানতে আমার পেশাগত অভিজ্ঞতা সায় দেয় না। এটা উদঘাটনের দাবি করছি।

প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব সাখাওয়াত মুন বলেন, জাদুকরী মুখ স্মরণ করছি। বসে বসে তার ছেলেটিকে দেখছিলাম। ও বুঝতেই পারছে না, ও কী হারিয়েছে। আমি মধ্যবয়সে এসে বাবাকে হারিয়েছি। সেটিই এখনো বুঝতে পারছি না। আমরা তার পাশে থাকবে, যোগ করেন সাখাওয়াত মুন।

তার বন্ধু ফারাবি হাফিজ বলেন, আমার চোখে ভাসে কেবল ওর হাসি মুখ। আমরা দাঁড়াতে শিখেছি, হাঁটতে শিখেছি, আমরা এখন দৌড়াব। আর সে চলে গেল। তার সাথে যত স্মৃতি সবই মানুষের উপকারের জন্য। যেমন, দোস্ত ছোট ভাইয়ের চাকরি লাগবে, কাউকে হলে তুলতে হবে- এ রকম নানা ইস্যুতে কথা হয়েছে। পেছনে কোন রহস্য আছে কি-না, খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, বন্ধুদের মাঝে আড্ডা জমিয়ে রাখত হাবীব। বন্ধুদের মাঝে কোন ঝামেলা হলে সেটা মিটমাট করত সে।  হাবীবের বাচ্চার পাশে থাকতে চাই। হাবীব যেন উপরে বসে কষ্ট না পায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসাইন প্রিন্স বলেন, হাবীব ভাইয়ের মৃত্যু যদি কোন নাশকতা হয়, তাহলে সেই নাশকতাকারী যত শক্তিশালীই হোক, সেটাকে উপড়ে ফেলতে হবে।

হাবীরেব বিভাগ গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, আমি হাবীবকে ক্লাস রুমে পেয়েছি। ও বরাবরই বিনয়ী ছিল। তার হাসিমাখা মুখ সবাইকে মুগ্ধ করত। বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষক হিসেবে হাবীবকে অন্য শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে দেখেছি।

 

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাদিয়া শারমিন বলেন, হাবীবরা যখন ক্যাম্পাসে এসেছিল, তখন নীল শাড়ি পরে দল নিয়ে এখানেই কবিতা আবৃত্তি করেছিলাম ওদের অভ্যর্থনা জানাতে। আজ নীল জামা পরে ওকে স্মরণ করতে এসেছি। আজ সামনের মানুষদের চোখে জল।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, হাবীব ভাইয়ের মত এমন দেশপ্রেমিক সাংবাদিক চলে গেছেন। পরিকল্পিত কোনভাবে হয়েছে আমরা এটার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আপন করে নেয়ার সহজাত ক্ষমতা ছিল তার। শোকাবহ যে ঘটনা ঘটেছে, তার একটি পূর্ণ তদন্ত হোক। যাতে কোন আক্ষেপ নিয়ে আমাদের থাকতে না হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৮ জানুয়ারি/আরএল/এলএ)