নরসিংদীতে চলছে অবৈধভাবে মাটি কাটার উৎসব

নাজমুল হাসান, নরসিংদী
 | প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০:৩৩

বছরের ১২ মাসের মধ্যে পৌষ-মাঘ-ফাল্গুন এ তিন মাস ইটভাটা ব্যবসায়ীদের মৌসুমী সময়। এ সময়ের মধ্যে সাধারণত আমাদের দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম থাকে। তাই এ সময়কে পুঁজি করে ইটভাটার মালিকেরা মান্ধাতার আমলের পদ্ধতিতেই ইটভাটাগুলোতে এ তিন মাস ইট তৈরির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকে। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য ইটভাটার মালিকদের বারবার সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মেনে চলার তাগিদ দেওয়া শর্তেও তা তারা আমলে না নিয়ে সরকারের বিধিনিষেধকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি ইট তৈরি করছে।

নরসিংদী জেলায় নতুন পুরাতন ছোট বড় মিলিয়ে অনেক ইটভাটা রয়েছে। ইট তৈরির প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে মাটি। আর এ মাটি সংগ্রহের জন্য জেলার সর্বত্রেই চলছে মাটিকাটার মহাউৎসব।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের তেলিয়া, ইটাখোলা-চরসিন্দুর রোড়ের ঝালকাটা ব্রিজ, পুটিয়া, দুলালপুর, বাঘাবো ইউনিয়ন, মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া, একদুরিয়া, রামপুর ইউনিয়ন, বেলাবো উপজেলা, রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ, চরসুবুদ্ধি, চড়আড়ালিয়া ইউনিয়ন, নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী, মহিষাশুড়া, করিমপুর ইউনিয়নের শ্রীনগর, নজরপুর ইউনিয়নের নজরপুর, হাজীপুর ইউনিয়নের চরহাজীপুর, পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের চলনা, ডাঙ্গাসহ আশপাশ এলাকার নদীর তীরবর্তী ও ফসলি জমি হায়ডোলিক ব্রেকো যন্ত্রের মাধ্যমে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে।এতে করে নদী রক্ষা বাঁধ, নদীর তীরবর্তী ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায় যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গত দুই এক বছর পূর্বে আমাদের গ্রামের নদীগুলো ড্রেজিং করে। নদীর ড্রেজিংয়ের মাটিগুলো নদীর দুই পাশে রেখে বাঁধ তৈরি করে। বিগত সময়ে এ বাঁধ না থাকায় বর্ষাকালে আমাদের ফসলি জমি ও ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে যেত। সরকার আমাদের জন্য আমাদের ফসলি জমি বর্ষাকালের পানি থেকে রক্ষা করার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে নদী খনন করে নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করল, আর এলাকার কিছু স্বার্থান্বেসী মহল টাকার বিনিময়ে ইটভাটাগুলোতে মাটি বিক্রি করছে দেদাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এলাকার ভূমিখেকো কিছু চিহ্নিত লোক রাজনৈতিক নেতার পরিচয় দিয়ে এবং প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে এসব অপরাধমূলক কাজ করছে। শুধু তাই নয়, মাটি বহনকারী কৃষিকাজে ব্যবহৃত ইচারমাথা ( টাক্টর) অবৈধভাবে মানুষের ফসলি জমিতে প্রবেশ করে কৃষকের ফসলি জমি নষ্ট করছে এবং রাস্তা-ঘাট ভেঙে দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে চরসিন্দুর ইউনিয়নের চলনা গ্রামে অবৈধ মাটি বিক্রেতা লিখন জানান, আমার মাটি বিক্রি করার অনুমতি আছে, কাগজও আছে।

অনুমতি বা কাগজ কোথায় থেকে পেলেন বা কে দিয়েছে তা জানাতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

(ঢাকাটাইমস/৪ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :