সৈয়দপুরে ভিজিডির চালে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:৫৩

নীলফামারী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ভিজিডির চাল দিতে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। সরকার চাল পরিবহন ও বিতরণ খরচ দিলেও সেই বাবদে এই অর্থ আদায় করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে দিনব্যাপী ভিজিডির চাল বিতরণকালে এই ঘটনা ঘটেছে। 

নিয়ম না থাকলেও কার্ড প্রতি ২০ টাকা করে নেওয়ায় এবং প্রশাসনের প্রতিনিধি উপস্থিত থেকেও এই অনিয়ম প্রতিরোধে নির্বিকার থাকায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারা এব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

জানা যায়, ইউনিয়নের ৭১৬ জন কার্ডধারী মানুষকে মঙ্গলবার ভিজিডির চাল দেয়া হয়। এসময় কার্ড থাকা সত্বেও আলাদা করে স্লিপ সংগ্রহের নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নেন দায়িত্বে থাকা ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মইনুল হোসেন। প্রকাশ্যে বুথ বসিয়ে এভাবে টাকা নিচ্ছেন কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন চেয়ারম্যানের নির্দেশে নিচ্ছি। এটা নেয়ার কি বৈধতা আছে জানতে চাইলে মেম্বার বলেন জানিনা, চেয়ারম্যানকে বলেন।

এসময় চাল নিতে আসা ঘোনপাড়ার বিধবা মহিলা বিউটি (৫৫) বলেন, চালের স্লিপ দিতে ২০ টাকা করে নিয়েছে। একই কথা জানান, শ্বাসকান্দর মাঝাপাড়ার আব্দুলের স্ত্রী লাভলী, উত্তরা আবাসন এলাকার জাহেদা। তারা বলেন, সরকারি চাল তাও টাকা দেয়া লাগছে।

একটি সূত্র মতে, ভিজিডির চাল বিতরণ কমিটির তদারকি না থাকায় এই অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে। কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে এই উপজেলায় কর্মরত থাকায় চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সখ্যতার সুযোগে এভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায়ে ট্যাগ অফিসার ও ইউপি কর্তৃপক্ষ বেপরোয়া। সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারও এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল নয় বলে সূত্রের অভিযোগ। 

ইউপি সচিব আবদুল মান্নানের জানান, টাকা নেয়ার কোন বিধান নেই। তবুও নেয়াটা নিয়ম হয়ে গেছে। তাই নতুন পরিষদও নিচ্ছে। তবে চেয়ারম্যান মেম্বাররা না নিলেও পারতো। কিন্তু তারা নিলে আমার করার কি আছে?

ট্যাগ অফিসার হিসেবে উপস্থিত উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান কে টাকা নেয়ার বিষয়ে বললে তিনি বলেন, এটা আমার দেখার বিষয় নয়। আমি চালের হিসাব রাখবো এবং কার্ড অনুযায়ী সঠিকভাবে বিতরণ করবো। টাকা নিচ্ছে চেয়ারম্যান মেম্বাররা। আপনি থাকতে এমন অনিয়ম চলছে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে কি জানিয়েছেন? তিনি নির্বিকার নিশ্চুপ হয়ে যান। 

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জুন কে পরিষদে না পেয়ে মোবাইল করলে তিনি জানান, খাদ্য গুদাম থেকে চাল আনার পরিবহন খরচ, লোড -আনলোড ও বিতরণের জন্য লেবার বিল দিতে হয়। এই টাকা কোথায় পাবো? বাবার জমি বিক্রি করে কি দিবো? এসব খরচ বাবদ টাকা নেয়া হয়েছে। আগেও নিয়েছে, আমরাও নিচ্ছি। এতে দোষের কী?

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন নাহার বেগমকে মুঠোফোন জানালে তিনি বলেন, কোনভাবেই চাল দিতে টাকা নেয়া যাবেনা। কেউ নিয়ে থাকলে তা অন্যায় করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দীর্ঘদিন থেকেই এমনটা হয়ে আসলেও আপনারা কোন ব্যবস্থা নেন না বলে অভিযোগ আছে। এব্যাপারে আপনার অভিমত কি? তিনি বলেন এটা ঠিক নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের অবশ্যই বিচার করা হবে। 

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/এআর)