সামিয়া-ফাতেমার পড়াশোনা দায়িত্ব নিলো ত্রিশাল ছাত্রলীগ

ময়মনসিংহ ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২১:১১

ভূমিহীন দিনমজুর আব্দুস সামাদ। বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের ভাটিপাড়া গ্রামে। আগ্রহ থাকলেও মেয়ে সামিয়া আক্তারকে লেখাপড়া করানোর সামর্থ ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করে দেন বাবা সামাদ। একই অবস্থা একই গ্রামের ফজলুল হকের। তিনিও অভাবের কারণে মেয়ে ফাতেমা আক্তারের খরচ দিতে না পেরে পড়াশোনা করে দেন।

টাকার অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়া দরিদ্র মেধাবী সামিয়া আক্তার ও ফাতেমা আক্তারের দায়িত্ব নিলো ত্রিশাল পৌর ছাত্রলীগ।

জানা যায়, উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাটিপাড়া গ্রামের সামিয়া আক্তার ও ফাতেমা আক্তার পড়ালেখা করার খুবই ইচ্ছা। সামিয়া বড় হয়ে হতে চায় মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক। আর ফাতেমা আক্তার উচ্চ শিক্ষিত হয়ে করতে চায় সাধারণ মানুষের সেবা। বয়সে ছোট হলেও দেখতে শুরু করেছে স্বপ্ন। দুজনেই সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই শেষ হতে চলছিল। কারণ তাদের বাবার কাজ করে পড়ালেখা চালানো সম্ভব নয়। করোনার বন্ধের পর স্কুল খুললেও বাবাদের সামর্থ নেই ভর্তি করার। সেই সময় তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় ত্রিশাল পৌর ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ সামিয়া ও ফাতেমাকে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করেন দুখু মিয়া বিদ্যানিকেতন স্কুলে। তাদের স্কুল ড্রেস, বই, প্রাইভেট পড়ার খরচ ও যাতায়াত ভাড়াসহ সব কিছু তারা বহন করবে।

সামিয়ার দাদি মাজেদা জানান, সামিয়ারা দুই ভাই, এক বোন। সামিয়া সবার বড়। বাবা দিনমজুর। অর্থের অভাবে সামিয়ার লেখাপড়া বন্ধ ছিল। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছে।এখন নাতনির স্বপ্ন পূরণ হবে।

ফাতেমার দাদি আয়েশা খাতুন জানান, আমাদের নাতনির পড়ালেখার খুব ইচ্ছা। কিন্তু টাকার অভাবে তাদের পড়াতে পাড়ি নাই। আমার ছেলে হতদরিদ্র দিনমজুর। থাকার জায়গা ছাড়া কোন জমি নাই। পড়ালেখা করার খরচ দিবে কোথা থেকে। ফাতেমারা চার বোন, এক ভাই। ফাতেমা তৃতীয় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। নেতার পড়াশোর দায়িত্ব নেয়ায় আমরা নিশ্চিন্ত হলাম।

পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন সরকার জানান, গরিব মেধাবী সামিয়া ও ফাতেমা পড়াশোনা করতে পারছে না এ খবর আমার কাছে আসে। তারপর আমি তাদের খবর নিয়ে স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করি। তাদের যা লাগবে ছাত্রলীগ দেবে। তাদের স্বপ্ন পূরণ করার দায়িত্ব আমাদের ভাল করে পড়াশোনা করলে যতদূর পড়তে চায় ছাত্রলীগ সহযোগিতা করবে।

পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন জানান, সামিয়া ও ফাতেমার স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিয়েছে ছাত্রলীগ। আমরাও চাই তাদের মেধাদিয়ে তারা বড় কিছু হোক।

দুখু মিয়া বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, সামিয়া ও ফাতেমকে আমার স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য নিয়ে আসে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ছাত্রলীগ তাদের ভর্তিসহ সকল খরচ তারা বহন করবে। মেধাবী এ শিক্ষার্থীদের জন্য আমার পক্ষ থেকেও যতটুকু করা সম্ভব করব।

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :