মাগুরায় অজানা রোগে আক্রান্ত কলা ক্ষেত, ক্ষতির মুখে কৃষক

আব্দুল আজিজ, মাগুরা
| আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪:০৬ | প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:৫৭

মাগুরা জেলা উচু, বন্যা মুক্ত এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় বিগত ৬-৭ বছরে কলা চাষের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছে। মাঠগুলোতে সবরি, চাপা ও দেশীয় জাতের কলার চাষ হয়ে থাকে। উৎপাদিত কলা জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলাতে যায়। এক বছরের ফসল হিসেবে লাভজনক ও যথেষ্ট চাহিদা থাকায় চাষিরা দিনদিন এ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। কিন্তু বিগত ২-৩ বছর ধরে কলা গাছে বিশেষ রোগের আক্রমণ দেখা দেওয়ায় চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েছে।

জেলার বিভিন্ন কলার ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, কোনো কোনো বাগানে ৪০ থেকে ৬০ ভাগ কলা গাছ এ অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হচ্ছে। কলা চাষিদের নেওয়া কোন ব্যবস্থাই কার্যকরী হচ্ছে না। কৃষি বিভাগের নজরদারীর অভাব থাকায় এবং এ রোগের প্রতিকার না পাওয়ায় কলা চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে কৃষকরা। কোন প্রতিকার না পাওয়ায় অনেক চাষি পুজি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অবশিষ্ট গাছ রক্ষা করতে বাগানের গাছ কেটে সাবাড় করছে।

খ্দ্দকুছুন্দি গ্রামের কলা চাষি মো. আজহারুল ইসলাম জানান, সাধারণত আমরা চৈত্র-বৈশাখ মাসে জমিতে কলার চারা রোপন করি। চারা রোপনের ৩-৪ মাস পর থেকে গাছের গোড়া ফেটে যাওয়া ও বৃদ্ধি কমে যাওয়া রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। আক্রান্ত গাছ ফেঁড়ে ভেতরে এক ধরনের পোকা দেখা যায়। সাধারণত গাছের গোড়ায় এ রোগের আক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত গাছ কাটলে দেখা যায় গোড়ায় কালো দাগ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে গাছের মাজ পচে যায়।

শৈলডুবি গ্রামের কলা চাষি মো. হাবিব ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘১৫ বছর ধরে কলার চাষ করছি, এতদিন মোটামুটি ভালই লাভ হচ্ছিল। ৩-৪ বছর গাছের গোড়া ফেটে যাওয়া, বৃদ্ধি কমে যাওয়া ও গাছের গোড়ায় এক প্রকার পোকা দেখা যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের লোকজন আমাদের ক্ষেতেও আসে না। আমাদের খোঁজও নেয় না। কোন উপায় না পেয়ে এলাকায় যারা সার ও কীটনাশক বিক্রি করে তাদের কাছে যায়। সার ও কীটনাশকের দোকানিরা আমাদেরকে এক এক সময় এক এক রকমের সার ও কীটনাশকের কথা বলে। আমরা তাদের পরামর্শ মত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছি। তাতে কোন কাজ হচ্ছেনা। আমাদের ক্ষেত শেষ, আমরা পথে বসে গিছি।’

খ্দ্দকুছুন্দি গ্রামের কলা চাষি বাহারুল বিশ্বাস জানান, অসংখ্য কলা গাছে ভাইরাস লাগছে, ফল হবে না। পাতা হলুদ হয়ে গেছে। গাছগুলো কেটে ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হায়াত মাহমুদ ঢাকা টামইমকে জানান, কিছু এলাকায় পানামা রোগের প্রার্দুভাব দেখা গেছে। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আক্রান্ত গাছ জমি থেকে সরিয়ে ফেলতে, জমিতে পটাশ সারের মাত্রা বাড়াতে এবং ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।

উল্লেখ্য মাগুরা জেলায় ৮০৬ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ মেট্রিক টন। এ মৌসুমে ১৬ হাজার ৯২৬ মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা জেলার প্রায় ১১ লাখ মানুষের চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলার মানুষের চাহিদা মিটাতে সহায়তা করবে।

(ঢাকাটাইমস/২৭ফেব্রুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :