তেলের অস্থিরতার মধ্যে পেঁয়াজও বাড়াচ্ছে ঝাঁজ

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২২, ০৭:৪৩ | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২২, ০৯:৩৯

বীর সাহাবী, ঢাকাটাইমস

বাজারে ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে ক্রেতা-ভোগান্তির মধ্যে অস্থির হয়ে পড়েছে পেঁয়াজের বাজার। দুইদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। এভাবে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ক্রেতার পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েছেন।

শনিবার রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা দরে আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। বৃহস্পতিবার ৫০ টাকা ও বুধবার ৪০ টাকা দরে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়। সেই হিসাবে কেজিপ্রতি বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত।

ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি আর বাজার থেকে প্রায় উধাও হওয়ার মধ্যে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। এভাবে হুটহাট দাম বাড়িয়ে অতিমুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের জিম্মি করছে বলেই তাদের অভিযোগ।

ক্রেতাদের ভোগান্তি সঙ্গে তারা নিজেরাও বিপাকে পড়েছেন বলে ভাষ্য ঢাকার কারওয়ান বাজারের পাইকার ব্যবসায়ীদের। কি ধরনের বিপাক জানতে চাইলে পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. সেলিম মিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা আসলে কম দামে বিক্রি করতে চাই, কিন্তু বেশি টাকা দিয়ে কিনে সেটা তো সম্ভব নয়।’

আর একারণে ব্যবসায়ীরা নিরুপায় দাবি করে তিনি বলেন, ‘চাইলেও কমে বিক্রি করতে পারি না। বৃহস্পতিবার যেখানে দাম ছিল ৪০ টাকা কেজি সেখানে আজ ৬০ টাকা ইন্ডিয়ান আর ৬৫ টাকা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করা লাগতেছে।’

আহসান হাবিব নামে এক ক্রেতা জানান, সস্থায় নিত্যপণ্য কিনতে তিনি সপ্তাহে একবার কারওয়ান বাজারে আসেন। তবে দ্রব্যমূল্যের দামের কারণে বাজারে এসে নিজেকে অসহায় লাগে বলেই মন্তব্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই চাকুরের।

ঢাকা টাইমসকে আহসান হাবিব বলেন, ‘সয়াবিনে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। তার মধ্যে পেঁয়াজের বাজার চড়া হতে শুরু করেছে। সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি।  প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি, হতাশায় পড়ে গেছি।’

এদিকে কারওয়ান বাজারে ‘দুই কেজি সয়াবিন তেল কিনলে সাথে দুই কেজি পোলাওর চাল কিনতে হবে’ এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সয়াবিন তেল ব্যবসায়ী জসিম উদ্দীন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা সত্য। তবে এটা সব সয়াবিন তেলের জন্য নয়, শুধু রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল কিনলেই এটা দেওয়া হচ্ছে।’

এই সুযোগ ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে নয় তেল কোম্পানিই ক্রেতাদের জন্য এমন অফার দিচ্ছে বলে দাবি এই ব্যবসায়ীর। তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের কিছুই করার নেই, কোম্পানি তাদের পোলাওর চাল বাজারে চালানোর জন্য এই নিয়ম করে দিয়েছে।’

জসিমের দোকানে গতকাল বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন ৭৯৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর খোলা তেল বিক্রি হয়েছে লিটারে ২০০ টাকা। অন্যদিকে সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে এক লিটারের বোতল ২৬০ টাকা আর খোলা ২২০ টাকা দরে।

হিলিতে বাড়ছেই পেঁয়াজের ঝাঁজ

এদিকে গতকাল মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে দেশীয় পেঁয়াজ বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩-৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কবির হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যে মুড়িকাটা পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছিল, সেটার মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। এর ওপর গত কয়েকদিন আগে ঝড়-বৃষ্টি হয়েছিল, তাতে উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়। এছাড়া সম্প্রতি ওভারলোডিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাড়িভাড়া বেশি লাগছে। এ কারণে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমে গেছে।’

(ঢাকাটাইমস/০৬মার্চ/ডিএম)