তৌহিদুল হকের কবিতা: অপমান

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২২, ১২:২৩ | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২২, ১৫:৫৫

তৌহিদুল হক

শব্দের উপর্যুপরি গর্জনে ফিরে এসেছি স্টেশনের

আকর্ষণ থেকে। চারদিকে নিরিবিলি আস্তরণে

সক্রিয় রাখার কোমল মায়া বেশিক্ষণ ধরে রাখতে

পারেনি আমায়। জীবনের কোলাহল কিংবা হৃদয়ের

তৃষ্ণা। এ আমার জীবন নয়, মুখরিত শব্দের

অসীম আনন্দধারা। যেখানে যেতে চেয়েছি

সেখানে হয়নি যাওয়া কখনো।

 

ভুল স্টেশনে নেমেছি বারবার। অপরিচিত হয়েছে

পরিচিত। বন্ধুর নাম দিয়েছি ঘটনাচক্রে প্রাপ্য অতি মূল্যবান

উপজীব্য। যে বা যারা চোখের তৃষ্ণায় জল

নামায় শরীর ঘেঁষে। অলংকার বেশে!

 

অপমানে তোমার থেকে দূরে থেকেছি বেশ। যা

কখনো হয়নি ধরা, তাও স্পর্শ করেছি অতি

আদরে। তোমার অপমান ভুলতে আমার মৃত্যু

হয়েছে কতশত বার। জিহ্বার তলাটে তীব্র

শব্দ করে বিদায় নিয়েছে জীবনের স্পন্দন। ভয়

হয়েছে অথবা হয়নি। কিন্তু ভুলতে পারিনি

তোমার শব্দের উৎসবে মানের প্রশ্ন কিংবা

আমার যোগ্যতা সীমানা ছুঁতে পারে না,

পারে না মাড়াতে সফলতার সিঁড়ি। কী করা উচিত?

 

এক চিৎকারে ছুটে চলেছি আবার অন্য জায়গায়

আমার সমগ্র সত্তা কিংবা অস্তিত্বের সর্বাংশে

পিছু নিয়েছে তোমার সমর্পিত অপমান। এ যেন

অলংকার, এ যেন শেষ হবার নয়। এ যেন

                               শুধু-ই আমার।

 

 

ভেবেছি, থাক না! কিছু অপমান জমা

মস্তিষ্কের শীতল সংগ্রহে, কিছু বিরোধ

চলুক জীবন্ত দাপটে। সবকিছুর অবসান হলে

হয়তো মানুষটার-ই নৈকট্য সন্ধানের জিজ্ঞাসু

আচরণ একদিন তলাটে ঠেকে। আবার

হাত বাড়িয়ে ফিরে আসতে চায় জন-মানুষের

ঠিকানায়। কী অদ্ভুত!

 

মানুষ কী চায়, বলতো? যখন অস্থির

উত্তেজনা ভর করে, তখন অপমানে জ্বলে শরীরের

সকটুকু। নিজের অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়ার চরম

দুঃসাহস সন্ধি করে গোপনে। আবার কখনো

সেই নিপীড়ন রূপ নেয় স্মৃতির মিছিলে

নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে। কখনো মনের অজান্তে

শাসন করে, দূর ছাই! জীবনের পাতায়

লেখা হয় প্রাপ্তির সীমানা

অজানা থাকে গোপন দুঃখবিলাস

তোমায় ভালোবাসার অপমান।