বাজার খারাপের দিনেও ভালো করছে রহমান ইক্যুইটি

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২২, ০৭:৪৫ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২২, ১২:৫৪

বীর সাহাবী, ঢাকাটাইমস

রহমান ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি কার্যক্রম শুরু করে। তবে এই অল্প সময়ের মধ্যে ব্রোকারেজ হাউজটি আলোচনায় এসেছে। তাদের কার্যক্রম আর সাম্প্রতিক সময়ে বাজারের অবস্থা নিয়ে ঢাকা টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেদী আরাফাত।

বিনিয়োগকারীদের জন্য একগুচ্ছ পরামর্শসহ সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে আতঙ্কিত না হয়ে কিভাবে নিরাপদ লেনদেন করতে পারেন।

ঢাকা টাইমস: কার্যক্রমে আসার পর থেকে এ পর্যন্ত কেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে? 

মেহেদী আরাফাত: আমাদের গ্রুপের আরো অন্য আরও প্রতিষ্ঠান আছে। সেসবের সঙ্গে রহমান ইক্যুইটির কোনো যোগসাজশ নেই। এটা স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। কারো সাব-সিডিয়ারি না।
আমরা কার্যক্রম শুরুর পর আমাদের সঙ্গে অনেক বড় বড় বিনিয়োগকারী যোগ দিয়েছেন। তারা ইতোমধ্যে কেনাবেচা শুরু করেছেন। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে মার্কেটের অবস্থা স্বাভাবিকভাবেই খারাপ যাচ্ছে। তবে আমরা সবকিছু মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ভালোই আছি।

ঢাকা টাইমস: কার্যক্রম শুরুর পর এখন পর্যন্ত বিও অ্যাকাউন্ট কেমন হয়েছে?

মেহেদী আরাফাত: ধীরে ধীরে অনেক বিনিয়োগকারীই আসছেন। যেহেতু আমরা নতুন প্রতিষ্ঠান তাই সবকিছুই আস্তে আস্তে হবে এটাই স্বাভাবিক। তারপরও আমাদের এখানে বিও অ্যাকাউন্ট হয়েছে ২০০ থেকে বেশি। এখনো হচ্ছে। অনেকেই চেঞ্জ করতে পারছে না, মার্কেট একটু খারাপ যাচ্ছে তাই। মার্কেট ভালো হলে আরো বাড়বে।

ঢাকা টাইমস: রহমান ইক্যুইটিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ কী সুবিধা?

মেহেদী আরাফাত: অনেক ব্রোকারেজ হাউজেই আছে যেখানে ক্লায়েন্ট ফোন করে কাউকে পায় না ঠিক মতো। একারণে তারা যথা সময়ে ট্রেড এক্সিকিউট করতে পারে না। আমাদের এখানে এই ধরনের সমস্যাগুলো হবে না। কেননা, আমরা নতুন হাউজ তাই প্রেশারটা অনেক কম। ক্লায়েন্ট সাপোর্ট আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে দিতে পারবো।
আমরা বিনিয়োগকারীদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিতে পারবো। যেমন, একটা শেয়ারের প্রাইস বেড়েছে, আরএসআই অনেক হাই হয়ে গেছে, এই জায়গাটা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ। এসব বিষয়ে ক্লায়েন্ট জানতে চাইলে আমরা ভালো মতো সাপোর্ট দিতে চেষ্টা করবো। ফান্ডামেন্টাল জিনিসগুলো কমবেশি সবাই জানেন। কিন্তু টেকনিক্যাল সাপোর্ট সবাই দিতে পারে না।

ঢাকা টাইমস: সুস্থ ও স্বাভাবিক লেনদেনে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে কী বলবেন?

মেহেদী আরাফাত: দেখেন বাজার সব সময়ই উঠানামার মধ্যেই থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। যেকোনো ক্রাইসিস মুহুর্তে বাজারে পতন হবে এটাও স্বাভাবিক। যেমন, করোনা শুরুর দিকে বাজার অনেক পতন হয়েছিলো। সেসময় যারা বাজার থেকে চলে গেছে পরবর্তী সময়ে তারাই লুজার হয়েছে। কারণ, এরপর বাজার দশ বছরের মধ্যে যতটুকু বাড়েনি তার চাইতেও বেশি বেড়েছে।
তাই, বাজার পতন হলেই যে ভয় পেয়ে যাবে এমন কিছু না। যারা স্মার্ট বিনিয়োগকারী তারা আরো বেশি করে বিনিয়োগ করে। যারা ইন্ডেক্স দেখে বিনিয়োগ করে তারা আসলে সুফল ভোগ করতে পারে না।
বলা যায়, ডে ট্রেডারের চাইতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ সুফল বয়ে আনে। তাই ধৈর্য ধরতে হবে। বাজার ভালো হবে। তখন সবাই এর সুফল ভোগ করবেন। আর যারা মন্দা অবস্থায় বাজার থেকে চলে যান তারা পরে এর সুফল ভোগ করতে পারেন না।

ঢাকা টাইমস: রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ দেশের শেয়ারবাজারে প্রভাব ফেলছে কেমন? 

মেহেদী আরাফাত: মহামারি করোনার মতো পরিস্থিতি বিশ্বে এখন পর্যন্ত হয়নি। দেশের অর্থনীতিসহ সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে আঘাত হেনেছে এই করোনা কিন্তু সেখান থেকেও আমাদের দেশের শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব শেয়ারবাজারের মতোই আমাদের বাজারও ভালো রিটার্ন দিয়েছে। যেহেতু সেখান থেকেও বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে আমি মনে করি চলমান রাশিয়া ইউক্রেন সংকট থেকেও বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

ঢাকা টাইমস: বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ কী?

মেহেদী আরাফাত: চলতে গেলে ভালো সময়ের পাশাপাশি খারাপ সময়ও আসবে। খারাপ সময় এলেই ভয় পেয়ে গেলে চলবে না। সাহস রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। শেয়ার সেল না করে অপেক্ষা করুন। আপনি সেল করে দিলে বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারী সেটা লুফে নেয়। মাঝখান দিয়ে আপনি লুজার হয়ে যান। তাই বলবো, আপনারা সবাই ধৈর্য ধরুন। বাজার ভালো হবে। ধৈর্যের কোনো বিকল্প এই মুহূর্তে নেই।

(ঢাকাটাইমস/১০মার্চ/ডিএম)