আবুনাসের হাসপাতালে কাটছে সংকট, বাড়ছে সেবার মান

খুলনা ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১১ মার্চ ২০২২, ১৫:৫১

দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে আধুনিক চিকিৎসা সেবা পাওয়ার একমাত্র ঠিকানা শহীদ শেখ আবুনাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল। তবে হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন যে চিকিৎসা সংকট ছিল তা কাটিয়ে বর্তমানে সেবার মান বাড়ানো হচ্ছে। গেল বছর হাসপাতালটিতে প্যাথলজি পরীক্ষাসহ জরুরি ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতাল উন্নয়নের কাজের প্রায় ১২ কোটি টাকা ফেরত চলে যায় মন্ত্রাণালয়ে। যে কারণে হাসপাতালটি সেবার গতি থেমে যায়। মূলত ২০১০ সালে ৩০ মার্চ মাত্র ৩০টি বেড নিয়ে সেবা কার্যক্রম চালু করে হাসপাতালটি। বর্তমান হাসপাতালটিতে ২৫০ বেড ঘোষণার মাধ্যমে কার্ডিওলজি সিসিইউ, পোস্ট সিসিইউ, নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, ইউরোলজি, অর্থপেডিক্স মেডিসিন, নিউরো সার্জারি, হোমো ডায়লোসিস, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইউনিটসহ ইনটেনসিভ কেয়ার আইসিইউ সাপোর্ট-এর ব্যবস্থা রয়েছে। এক সময় যা গরিব অসহায় মানুষের জন্য এসব ব্যয়বহুল চিকিৎসা ছিল শুধুই স্বপ্ন। তবে হাসপাতালটির বর্তমান পরিচালক শেখ আবু শাহিন দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি প্যাথলজি পরীক্ষা ব্যবস্থা শুরু করেন। পাশাপাশি হাসপাতালটির দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক সংকটসহ বেশ কিছু সংকট পূরণ করেন। বর্তমান হাসপাতালটিতে প্রতিদিন বহির্বিভাগ ও আউটডোরসহ গড়ে এক হাজার সাধারণ মানুষ সেবা নিচ্ছে। তাছাড়া মুমূর্ষু রোগীদের জন্য কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বারের জন্য মনিটর, আল্টাস্নোহ, সিটিস্কান, এমআরআই, ইটিটি, ইসিজি, ডক শর্ট দেওয়ার ব্যবস্থাসহ কার্ডিয়াক মনিটর, লাইফ সাপোর্ট ভেন্টিলেটার ও সল্প খরছে প্যাথলজি পরীক্ষার সুবিধা রয়েছে এবং গরিব অসহায় রোগী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয় না প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। তাছাড়া স্বল্প খরচে এআরআই, এক্স-রে, সিটিস্ক্যান, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইকোসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজন জামিলা বেগম বলেন, আগের তুলনায় হাসপাতালটি শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। পাশাপাশি প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এভাবে হাসপাতালটি কার্যক্রম চলমান থাকলে মানুষ রাজধানীতে আর চিকিৎসার জন্য যাবে না। সব আধুনিক সেবা এই আবুনাসের হাসপাতালে পাওয়া যাবে। আমার বড় জামাই কিডনি সমস্যার জন্য হাসপাতালটিতে ডায়ালাইসিস নিচ্ছে মাত্র ২০ হাজার টাকায়। ৬ মাস প্রর্যন্ত ডায়ালাইসিস নিতে পারবে। এর আগে আমি বাহিরে সপ্তাহে দুইদিন ডায়ালাইসিস নিতে খরচ হতো প্রায় ৯ হাজার টাকার মতো। আমরা বর্তমানে হাসপাতালটিতে সেবা পেয়ে খুবই সন্তুষ্ট। তাছাড়া বর্তমান হাসপাতালটির ৪র্থ তলায় ইনটেন্সিভ কেয়ার আইসিইউ ব্যবস্থা রয়েছে।

আইসিইউ বিভাগে ভর্তি রোগীর স্বজন আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার পিতাকে লাইফ সাপোর্ট ভেন্টিলেটর দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখানে আইসিইউতে কোনো টাকা লাগে না। বেসরকারি হাসপাতাল সিটি মেডিকেলে দুই দিনে ৫৯ হাজার টাকা বিল দিতে হয়েছে। এ বিষয়ে শহীদ শেখ আবুনাসের হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. মোর্শেদ আলম বলেন, হাসপাতালটিতে বর্তমান ভর্তি রোগী সংখ্যা দুই শ জনের বেশি। আমরা মেডিকেল অফিসার ও কিছু পেয়েছি। প্যাথলজি পরীক্ষা আগের মতো চলছে। সব মিলিয়ে হাসপাতালটি আগের তুলনায় ভালোভাবে চলছে।

এ বিষয়ে শহীদ শেখ আবুনাসের হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ আবু শাহিন বলেন, আমি হাসপাতালটিতে সবেমাত্র যোগদান করেছি। চিকিৎসাসেবা মানুষের মৌলিক চাহিদা, তার সাংবিধানিক অধিকার। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সার্বিক দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় কার্যক্রম চলছে। আমরা আধুনিক হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানোর জন্য সর্বস্তরের মানুষের সহোযোগিতা কামনা করছি। তাছাড়া হাসপাতালটিতে বেশ কিছু চিকিৎসক ও নার্স, টেকনেশিয়ানসহ বিভিন্ন বিভাগে জনবল সংকট রয়েছে। আমরা দ্রুত জনবল পূরণ করার চেষ্টা করছি।

(ঢাকাটাইমস/১১মার্চ/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :